পদপ্রত্যাশীদের তোপের মুখে ছাত্রদল সভাপতি-সম্পাদক
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির জনসভায় নতুন কমিটি ঘোষণার দাবিতে নিজ সংগঠনের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। শনিবার বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত জনসভায় যথারীতি ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠলে এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
নতুন কমিটির দাবিতে অন্তত ৩০-৩৫ জন ছাত্রদল নেতা তখন মঞ্চে উঠে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বক্তব্য দিতে বাধা প্রদান করেন। সে সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে পদপ্রত্যাশী ছাত্রদল নেতারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে সম্মিলিতভাবে বলতে থাকেন, ‘সংগঠনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখন কোনো নেতৃত্ব নাই, কমিটি নাই।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদে যারা আছেন, তারা সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করেন না, তারা অবৈধ। কাজেই এই অবৈধ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অবৈধ সরকারের মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নাই। উভয়েরই জনভিত্তি নাই। নেতৃত্বে থাকার কোনো অধিকার নাই।’
অবশ্য তখন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা অনেকে মঞ্চে উপস্থিত থাকার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে তেমন কাউকে কর্ণপাত করতে দেখা যায়নি। প্রায় মিনিট দশেক তর্ক-বিতর্কের পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এগিয়ে গিয়ে শিগগির ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হবে আশ্বাস দিয়ে পদপ্রত্যাশীদের মঞ্চ থেকে নামতে অনুরোধ করার পর ছাত্রদল নেতারা মঞ্চ ত্যাগ করেন।
যদিও পরবর্তী সময়ে জনসভায় ছাত্রদল সভাপতি তার বক্তব্য দেন, কিন্তু সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনসভার মঞ্চে থাকা ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির একজন বলেন, ‘বিগত কয়েক মাস ধরেই ছাত্রদলের নতুন কমিটির দাবিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে পদপ্রত্যাশী নেতাদের একটি মনোমালন্য চলছে। বিএনপির আজকের জনসভা সফল করতে শুক্রবার সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান যখন ছাত্রদল নেতাদের সফল করার আহ্বান জানিয়ে যোগাযোগ করেন, তখন প্রায় অধিকাংশ ছাত্রদল নেতাই এটাকে ভালোভাবে নেয়নি। কেউ কেউ মুখের ওপরেই তাদের বলে, ‘ছাত্রদলের কমিটির মেয়াদ নেই। তাই আমরা মেয়াদহীন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্ব মানি না। মানতে বাধ্যও নই।’
ওই ছাত্রনেতা বলেন, ‘গতকালের কথাবার্তার ধারাবাহিকতায় আজ জনসভার মঞ্চে সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বক্তব্যে দিতে উঠলে পদপ্রত্যাশী ছাত্রনেতাদের প্রতিবাদের মুখে পড়ে। কেউ কেউ তাদের ভুয়া হিসেবেও স্লোগান দেয়। যদিও পরবর্তী সময়ে সিনিয়র নেতাদের সহযোগিতায় অপ্রীতিকর ঘটনার আগেই পদপ্রত্যাশীরা মঞ্চ ত্যাগ করে চলে যায়। তবে সিনিয়র নেতাদের তখন বলতে শোনা যায়, শিগগিরই সংগঠনের স্বার্থে কমিটি ঘোষণা করা প্রয়োজন। নতুবা আগামী আন্দোলন সংগ্রামে এর জন্য পস্তাতে হবে।’
২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজিব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। তখন ১৫৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর প্রায় ১৬ মাস পর জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের ৭৩৪ সদস্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ ২ বছর হলেও এখনো মেয়াদহীন কমিটি দিয়েই চলছে সংগঠনটি। বাংলাদেশ জার্নাল