অফিস-গাড়ি সবই আছে নেই মাদক উদ্ধার!!
বিশেষ প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির মাদকদ্রব্য উদ্ধারে প্রতিনিয়ত অভিযান থাকলে জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদক বিরোধী অভিযান মাদক উদ্ধারে কোন অগ্রগতি নেই বললেই চলে। সরকারি অফিস আর বিলাসবহুল গাড়ি থাকলেও অধিদপ্তরটি লোকজন কি কারণে সীমান্তবর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মাদক উদ্ধার করতে পারছেননা এরকম অজানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাঁচ্ছে অনেকের মনে। আবার কেউ কেউ অভিযোগ করে বলছেন, তারা মাদক উদ্ধার করলেও এগুলো অধিদপ্তরে অফিসের দরজা পর্যন্ত আসেনা। মাদক ব্যবসায়ী আর সোর্সের মার্ধ্যমে চলে যাচ্ছে অজানা গন্তব্যে।
এছাড়া সোর্সের মার্ধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার বিষয়টিও অভিযোগ করেছে তাদের বিরুদ্ধে অনেকে।কথা হয় জনৈক সোর্সের সাথে সে বলেন, কিছুদিন আগে সিঙ্গারবিল কাশিমনগর জনৈক মেম্বারের লোকের পিকআপ গাড়ি ২৫ কেজি গাঁজাসহ ধরেছেন মাদক অফিসের লোকজন। তারপর সোর্স বাবুলের মার্ধ্যমে মাদক কর্মচারির বাসায় দেড় লক্ষাধিক টাকা পৌছিয়ে দেওয়া হয়।এর পর গাড়ি সহ মাদক উদ্ধার দেখানো হলেও আসল আসামীকে আড়াল কৌশলে অন্য আরেকজনকে আসামী দেখানো হয় মামলাতে।
এছাড়া সে আরো জানায়, বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর জনৈক চেয়ারম্যানের লোককে ১০০০ পিছ ইয়াবাসহ আটক করা হলে পঞ্চাশ হাজার লেনদেনের মার্ধ্যমে তা ১০০ পিছ ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে বাকি ৯০০ পিছ অজানা গন্তব্যে চলে যায়। আরেক সোর্স জানায়, বিগত দুই মাসে তারা বেশ কয়েকটি স্হান থেকে মাদক ধরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়ে এসেছেন।এখানকার সবাই সারাদিন টাকা কামানো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আবার সোর্সের মার্ধ্যমেও মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া পৈরতলা বাসষ্ট্যান্ডের এক লোককে তারা সোর্স হিসেবে কাজ দিয়েছে। তার বাড়ি কসবার দিকে।
সে সোর্সের কাজ করেও কিভাবে হ্যান্ডকাপ নিয়ে ঘুরাঘুরি আমরা বুঝিনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশকয়েকজন বলেন, দামী সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে তারা ভাড়াটিয়া বাসা থেকে অফিসে আসা- যাওয়া আর ব্যক্তিগত কাজে সারাদিন তেল পোঁড়ানো ছাড়া মাদক উদ্ধারের তাদের কোন খবর নেই।
এদিকে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আমাদের সমাজের মাদকাসক্ত সংখ্যা আর তারা মাদক ধরেও টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিচ্ছেন। রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে সমাজ আর মাদক আসা রোধ করবে কে ? এক পরিসংখানে দেখা যায়, দেশের সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলার মর্ধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি জেলা। শহরের বিশ থেকে এিরিশ কিলোমিটারের মর্ধ্যেই রয়েছে পাশ্ববর্তী ভারতের গাঁডাশা জেলার তিনটি উপজেলা। তাই সীমান্তবর্তী উপজেলা দিয়ে প্রতিদিন দেদারসে ঢুকছে মাদক।
এই মাদক জেলার সব জায়গায় ছড়িয়ে চিটিয়ে সিন্ডিকেট ভিওিক বিক্রি হচ্ছে। আর সিন্ডিকেট ভিওিক মাদক ব্যবসায়ীরা সীমান্ত দিয়ে জেলার ভিতরে ঢুকা মাদকের বেশির ভাগ অংশ কৌশলে সড়ক ও নৌপথ ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়েছে যাচ্ছে ।
অন্যদিকে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবিও তাদের বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রতিনিয়ত উদ্ধার করছেন লাখ লাখ টাকার ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজাসহ বিদেশি মদের মত মাদক। গ্রেফতার করছেন মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারিদের। মামলা দিয়ে জেলহাজতে ঢুকাচ্ছেন।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় চলতি বছরের গত জুন-জুলাই এই দুই মাসে সদর মডেল থানার পুলিশের চৌকস মাদক বিরোধী অভিযানে উদ্ধার হয় ইয়াবা ৪৪০০পিছ, গাঁজা ৮৫ কেজি আর ফেন্সিডিল ও স্কপ সিরাপ ২০০ বোতল।
যার আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে ১২ লাখ টাকা। অন্যদিকে জেলার নবীনগরে থানার পুলিশের মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযানে ইয়াবা ১৬০০পিছ, চোলাই মদ ৬৫ কেজি, গাঁজা উদ্ধার হয়েছে ২০ কেজির মত, মামলা হয়েছে ৩১টি আর মাদক মামলার আসামী ধরা হয়েছে ৩৭ জনকে।আবার পাশ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর থানার পুলিশের অভিযানে ইয়াবা ২৫,০০০ হাজার পিছ, ফেন্সিডিল ১১৪০ বোতল আর বিয়ার ৬০০ ক্যান মত উদ্ধার হয়। মামলা হয়েছে ১২ টি।মাদক মামলার আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে।