সকলের ফেসবুকে নজরদারি করছে সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক : শিল্পমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা–সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমু বলেছেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর জন্য এবং নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে যারা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করছে, তাদের ব্যাপারে কাজ করা হচ্ছে, যাতে তারা এটা করতে না পারে, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা–সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত প্রতি মাসেই আইন শৃঙ্খলার উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধ কমে আসছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে এটা কমে এসেছে। খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, অপহরণ, চুরি-ডাকাতি সবই হ্রাস পেয়েছে বিগত চার মাসে। ১৮ মে থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত পরিচালিত মাদক বিরোধী অভিযানে ২৫ হাজার ৫৭৫টি নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনেককেই জরিমানা করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। যার কারণে এ অভিযান অত্যন্ত ফলপ্রস্যূ ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশের কারাগারের বন্দি ধারণ ক্ষমতা হল ৮৯ হাজার ৫৮৯ জন। আজকে যারা কারাগারে আছে তার মধ্যে ৪২ শতাংশই মাদক বিরোধী অভিযানে ধরা পড়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। বিগত মে-জুন মাসে সারাদেশে সংগঠিত খুন, ডাকাতি, নারী নির্যাতনে দায়েরকৃত মামলার ৮০ ভাগের অধিক ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। এ বছর দুটি জঙ্গি ঘটনা ঘটেছে। দায়ী ব্যক্তিদের অধিকাংশই গ্রেফতার করা হয়েছে।
সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র এবং মাদক প্রাচার বন্ধে বিজিবি সতর্কবাস্থানে রয়েছে। মায়ানমার সীমান্ত থেকে ইয়াবা বেশি আসে। সেটা যেন বন্ধ করা যায় সব সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের মূল ব্যাপার হচ্ছে আইন শৃঙ্খলা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা এবং মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান। আজকে দেশকে যেভাবে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো, সেটি উত্তরণের জন্য মাদক বিরোধী অভিযানকে সফলভাবে সম্পন্নের জন্য গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই।
তিনি বলেন, মাদকের বিষয়ে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বৃদ্ধি, তাদের নিয়ে এলাকায়-এলাকায় কমিটি গঠন এবং মসজিদে খুতবার সময় এটা বলা হয়, তার জন্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এটা হচ্ছে কি না তা জেলা এবং উপজেলা ভিত্তিক তদারকি করা হয়। মাদক সেবীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। জেলা এবং উপজেলা ভিত্তিক তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অভিযানে এ পর্যন্ত কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কতজন মারা গেছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২৭ হাজার ২২৫ জন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি যতদূর জানি, ৩০ জনের মত মারা গেছে।
এ অভিযান কতদিন চলবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যতদিন সম্পুর্ণভাবে নিরসন করা না যায়, ততদিন পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। এটার ব্যাপারে সরকারের কঠোর নির্দেশ, যেই কেউ জড়িত থাক না কেন, কারো ব্যাপারে ছাড় দেয়া হবে না।
সরকারের একজন এমপির বিষয়ে অভিযোগ আসছে, তাকে ধরা হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নিশ্চই প্রমান সাপেক্ষে ধরা হবে। যদি প্রমাণিত হয়, এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগেও বলেছেন। তার ব্যাপারে যথাযথ প্রমান পেলে ছাড় দেয়া হবে না। এ ব্যাপারে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ঘটনা ঘটবে না সেটা আশা করা যায় না। ঘটতেই পারে কিন্তু সে ঘটনা ঘটার পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা কি, সরকারের পদক্ষেপ কি সেটাই লক্ষণীয়।