কেন বন্ধুকে দিয়ে স্ত্রীকে দফায় দফায় ধর্ষণ করাল স্বামী?
সাতক্ষীরায় গৃহবধূকে ধর্ষণের দায়ে স্বামীসহ দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন বিচারিক আদালত। মঙ্গলবার (১০ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ওয়ারিয়া গ্রামের জয় মোড়লের ছেলে ও ধর্ষিতা গৃহবধূর স্বামী নিমাই মোড়ল (৩৫) ও মৃত অতুল কুমার ঘোষের ছেলে তপন কুমার ঘোষ (৪০)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ২০০০ সালের প্রথম দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ওয়ারিয়া গ্রামের জয় মোড়লের ছেলে নিমাই মোড়লের সাথে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বেতকাশি গ্রামের বঙ্কিম চন্দ্র সরকারের মেয়ের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর নিমাই মোড়লের স্ত্রী জানতে পারেন তার স্বামী একজন মাদকাসক্ত। আর তার এই মাদকের টাকা সরবরাহ করতো তারই বন্ধু তপন কুমার ঘোষ। বিনিময়ে তপন তার বন্ধু নিমাই মোড়লের স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতো।
এক পর্যায়ে তপন তার বন্ধু নিমাই মোড়লের সহযোগিতায় তার স্ত্রীকে কয়েক দফায় ধর্ষণ করে। বিষয়টি নিয়ে ওই গৃহবধূর সাথে তার স্বামী ও স্বামীর বন্ধুর মনোমালিন্য হয়। এরই জের ধরে ২০০৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২ টার দিকে তপন তার বন্ধুর ঘরে ঢুকে তার স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। এতে ওই গৃহবধূ বাধা দিলে তার স্বামীর সহযোগিতায় তপন তার যৌনাঙ্গে লাঠি দিয়ে আঘাত করে।
এ ঘটনার দুই দিন পর ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই গৃহবধূর বাবা বঙ্কিম চন্দ্র সরকার তার জামাইয়ের বন্ধু তপন কুমার ঘোষ ও তার জামাই নিমাই মোড়লকে আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় মঙ্গলবার (১০ জুলাই) ৮ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক উক্ত দুই আসামিকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ রায়ের সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামিগণ আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে জামিনে পরবর্তীতে পলাতক ছিলেন।