খুলনায় হঠাৎ জিবিএস ভাইরাস আতঙ্ক, একজনের মৃত্যু
নিউজ ডেস্ক: খুলনায় হঠাৎ বেড়েছে গুইলেন বারি সিন্ড্রোম (জিবিএস) ভাইরাস আতঙ্ক। ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর দৌলতপুরের ২নং ক্রস রোডের বাসিন্দা নিরোদ মণ্ডলের ছেলে প্রদীপ কুমার মণ্ডল গত মাসে শরীরে জ্বর অনুভব করেন। এরপর সারা শরীর অবশ হয়ে যায়। ধারণা করা হয়, তিনি প্যারালাইজড হয়েছেন।
প্রথমে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জিবিএস ধরা পরে। অত্যন্ত ব্যয়বহুল এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বুধবার ঢামেক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন প্রদীপ কুমার মণ্ডল।
এদিকে খালিশপুরে ফররুখ একাডেমির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম গত পাঁচদিন আগে একই রোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন।
গত বছরে নগরীর সোনাডাঙ্গা বাবলু নামে এক শিক্ষার্থী একই রোগে আক্রান্ত হলে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে পরে সাভারে জাতীয় পক্ষাঘাতগ্রস্থদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরে সুস্থ হন। আর্থিক সামর্থ্য থাকায় প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সুস্থ হন তিনি।
চিকিৎসকরা জানান, জিবিএস আক্রান্ত হলে প্রথমে জ্বর জ্বর অনুভূত হয়। পরে সারা শরীর অবশ হয়ে যায়। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২০ ভাগ রোগী সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ববরণ করেন। অবশ্য সুচিকিৎসা ও যথাযথ ফিজিওথেরাপি পেলে ৮০ ভাগ মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন।
তারা আরও জানান, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাপকহারে হ্রাস পেলে জিবিএস ভাইরাস আক্রমণ করতে পারে। এটি ভাইরাস হলেও অন্যান্য ভাইরাসের মতো সংক্রামক নয়। তাই একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই।
খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, জিবিএস এমন একটি ভাইরাস, যা শরীরকে প্যারালাইজড করে দেয়। একপর্যায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। তখন রোগীর কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস বা আইসিওতে ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়।
তিনি আরও বলেন, এই রোগের চিকিৎসা অনেক ব্যয় ব্যয়বহুল। ইউমোনোগ্লুমিন ইনজেকশন প্রয়োজন হয়, যা প্রতিটির দাম এক লাখ টাকার ওপরে। এই ইনজেকশনের সঙ্গে ফিজিওথেরাপি এই রোগের বড় চিকিৎসা।