নির্জন পাহাড়ে ‘রহস্যজনক’ সুড়ঙ্গ
---
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ের দুর্গম পাহাড়ে সন্ধান মিলেছে একটি রহস্যজনক সুড়ঙ্গের। সোমবার বিকালে করেরহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ অলিনগর এলাকার ডুল্লাছরি পাহাড়ে স্থানীয়রা ওই সুড়ঙ্গের সন্ধান পান। এরপর থেকে স্থানীয় উৎসুক লোক সুড়ঙ্গটি দেখতে ওই এলাকায় ভিড় করেছে।
স্থানীয় লোকজন সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০ ফুট বললেও জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ বলছে এটির দৈর্ঘ মাত্র ৭ ফুট। তবে নির্জন পাহাড়ে এমন সুড়ঙ্গ নিয়ে উপজেলার সর্বত্র চলছে আলোচনা।
এরআগে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে মিরসরাই সদর ইউনিয়নের মহামায়া পাহাড়ে এ ধরণের আরও দুইটি সুড়ঙ্গের সন্ধান মিলে। ওই সুড়ঙ্গগুলো নিয়ে র্যাব পুলিশ তদন্ত করলেও কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কদিন আগেও অলিনগর বনবিটের আওতায় থাকা ঢুল্লাছরির পাহাড়গুলো জঙ্গলে আবৃত ছিল। সম্প্রতি সরকারের বনবিভাগ নতুন বনায়নের জন্যে পরিষ্কারের কাজ শুরু করলে এখানকার পাহাড়গুলো ন্যাড়া হয়ে পড়ে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর জঙ্গল পরিষ্কারের কাজ করতে গিয়ে বিশেষ কায়দায় খোঁড়া সুড়ঙ্গটি দেখতে পান স্থানীয় দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুর আলম। গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে মঞ্জুর তার বন্ধুদের নিয়ে পুনরায় দেখতে যান ওই সুড়ঙ্গ। পরবর্তীতে ফেইসবুকে সুড়ঙ্গের ছবি দিলে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সাংবাদিসহ স্থানীয় লোকজন সুড়ঙ্গটি দেখতে ভিড় জমান।
সুড়ঙ্গের ভেতর ঘুরে আসা নেছার আহমদ বলেন, সুড়ঙ্গের ভেতর আরো দু’টি সুড়ঙ্গ দেখা গেছে। আমি সুড়ঙ্গে প্রবেশের সময় প্রায় ৮০ হাতের একটি পাহাড়ি লতা নিয়ে যায়। ৭০ হাত পর্যন্ত যাওয়ার পর আর ভেতরে যেতে পারিনি। ওখানে সুড়ঙ্গের মুখে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। মাটিগুলো সরানো গেলে আরও ভেতরে যাওয়া সম্ভব হবে। সুড়ঙ্গের ভেতর দু’জন হামাগুড়ি দিয়ে যেতে পারবে। সুড়ঙ্গের মুখ দিয়ে ১০-১৫ হাত ভেতরে যাওয়ার পর দু’পাশে আরো দুইটি সুড়ঙ্গ দেখা গেছে। সুড়ঙ্গের ভেতর ১০-১২ হাত পরপর ৪-৫ জন বসে কথা বলার মতো প্রশস্ত জায়গা আছে। সুড়ঙ্গের ভেতরে দু’পাশে এমনভাবে মাটি কাটা হয়েছে মনে হয় ধারালো খন্তা (মাটির কাটার যন্ত্র) ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া মাটিতে বালি ও কয়লা দেখা গেছে।
জোরারগঞ্জ থানার এএস আই ইমরান হোসেন জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এটি কোন সুড়ঙ্গ নয়। কারণ ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের এই গর্তে ঢোকার পথ রয়েছে কিন্তু বের হওয়ার কোন পথ নেই। ভাল্লুক কিংবা শুকর গর্তটি করতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদুল কবিরের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, ‘এতে আতঙ্কিত হওয়ার মত কিছু নেই। বিষয়টি জানার পরপর আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে বনের কোন জীবজন্তু তাদের আবাস গড়তে গর্ত তৈরি করেছে।’
সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (মিরসরাই) ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি না দেখে কিছু বলতে পারবো না। বুধবার সুড়ঙ্গটি দেখে আসার পর এ নিয়ে মন্তব্য করব।