g বাংলাদেশি পরিচালকের ‘অশালীন’ প্রস্তাবের বিচার চাইলেন টলিউডের নায়িকা প্রিয়াঙ্কা | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বৃহস্পতিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০১৭ ইং ২০শে আশ্বিন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশি পরিচালকের ‘অশালীন’ প্রস্তাবের বিচার চাইলেন টলিউডের নায়িকা প্রিয়াঙ্কা

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ৫, ২০১৭
news-image

---
অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশি পরিচালক রফিক সিকদারের কাছ থেকে কাজের বাইরের ‘অশালীন’ প্রস্তাব পেয়ে বিরক্ত হয়ে দর্শকদের উপরই পরিচালকের বিচারের ভার ছেড়ে দিয়েছেন টলিউডের প্রতিষ্ঠিত নায়িকা প্রিয়াঙ্কা সরকার। পরিচালক রফিক সিকদারকে চরম অপেশাদার হিসেবেও আখ্যা দেন ‘চির দিন তুমি যে আমার’ সিনেমার নায়িকা।
শুক্রবার দুপুরে প্রিয়াঙ্কা নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই নিয়ে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। সেই স্ট্যাটসে প্রিয়াঙ্কা লেখেন, ‘আজ আমি আমার সকলের সাথে একটা ব্যাপার শেয়ার করতে চাই সেটা হচ্ছে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আমি ঢাকা গিয়েছিলাম আমার প্রথম বাংলাদেশী ছবি ‘হৃদয় জু‌ড়ে’-র শুটিং করতে এবং সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশে আমার প্রযোজনা টিম, সহশিল্পী সহ সকলের আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু এত কিছুর পরেও অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে এই ছবির পরিচালক রফিক সিকদার চূড়ান্ত অপেশাদার একজন মানুষ। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারি শ্যুটিং এগোচ্ছে ধীর গতিতে। বাংলাদেশের শিডিউল শেষ হলেও আমার সিনগুলো শেষ করতে পারেননি পরিচালক উনারই পেশাদারিত্বের অভাবে। অকারণেই উনি শুটিং-এর সময় আমার সাথে কাজের বাইরে অন্যান্য বিষয় নিয়ে গল্প করতে চাইতেন। সময়ে-অসময়ে মেসেজ করতেন নানা রকম। যেগুলো কাজ সংক্রান্ত নয়! মানে বাড়তি অ্যাটেনশন পাওয়ার চেষ্টা এবং অনেক সময়েই আমি এর প্রতিবাদও করেছি কিন্তু তবুও উনি নিজেকে সংশোধন করেননি।
প্রিয়াঙ্কা আরো বলেন, ‘এরপর প্রযোজনা টিমের চুক্তি অনুযায়ী আমার সুটিং সিডিউল শেষ হবার পরই আমি কলকাতা ফিরে আসি। তবুও আমি রাজী ছিলাম চুক্তি শেষ হবার পরেও বাংলাদেশে গিয়ে ছবির বাকী অংশের কাজ শেষ করতে। যাইহোক কলকাতা ফেরার পরই উনি শুরু করেন আমাকে মানসিকভাবে হেনস্থা করা। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়, উনি আমাকে বার বার মেসেজ করতেন। বলতেন, উনি নাকি আমাকে মিস্‌ করছেন! একটা সময়ের পর আমাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন! বারবার ব্লক করা সত্ত্বেও উনি থামেননি। উনি সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পোস্টেও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন আমাকে। এসব সত্যি অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ শিল্পী হিসেবে আমরা নূন্যতম সম্মানটুকু অন্তত আশা করি সবার কাছে। আমি প্রমাণ স্বরূপ উনার করা হোয়াট্‌সঅ্যাপ এবং ফেসবুকের মেসেজের স্ক্রিনশটও শেয়ার করছি তাহলেই আপনারা এই মানুষটির মানসিকতা বুঝতে পারবেন। এই লোকের কী বিচার হওয়া দরকার সেটা আমি আমার বাংলাদেশের বন্ধুদের ওপরই ছেড়ে দিচ্ছি। আমার সত্যি এসমস্ত এভাবে প্রকাশ্যে নিয়ে আসা উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম এই ধরনের হয়রানি-র একটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার। কারণ এই ধরনের নিম্ন মানসিকতার লোকজন দুই বাংলার চলচ্চিত্র জগতের জন্যই হানিকারক। এরা শিল্প এবং শিল্পী কাউকেই সম্মান করতে জানেনা। এবং দুই বাংলার শিল্পীদেরই আমার অনুরোধ এই রকম ঘটনার সম্মুখীন হলে প্রতিবাদ করুন ও সতর্ক হোন। নইলে চুপ করে থাকলে এরা আরও পেয়ে বসবে। আর একজন শিল্পী হয়ে আমি এটুকুই বলতে পারি ঈশ্বর উনার শুভবুদ্ধি জাগ্রত করুন।’
প্রিয়াঙ্কার এই স্ট্যাটাসের জবাবে রফিক সিকদারও একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘দু’দিন সুটিং স্পটে নায়িকার জন্য গাড়ী ছিল না বলে সে প্রচন্ড রকমের সিনক্রিয়েট করেছিল। যে কারনে নায়িকার জন্য গাড়ী কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এটা নিয়ে অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই। তাকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখার তাগিদে তার ইনবক্সে লেখাগুলো সেন্ট করেছিলাম। নায়িকা যে লেখাগুলো উন্মোচন করেছেন সেটি কিন্তু অতি সাম্প্রতিককালের। অর্থাৎ নায়িকা কলকাতায় যাবারও বেশ কিছুদিন পরের ঘটনা এটি। সে যখন আমাকে সিডিউল দিচ্ছিল না তখন আমি তার উদ্দেশ্যে এই লেখাগুলো লিখেছিলাম। কোনো বিদেশী শিল্পী কাজ করতে এলে তার ওয়ার্ক-পারমিট লাগে। ওয়ার্ক-পারমিট করাতে শিল্পীর লিখিত সিডিউল লেটার এর প্রয়োজন হয়। যেটা নায়িকা আমাকে দিচ্ছিল না। মূলত তাকে মানসিকভাবে সফট্ করার জন্যই নিজের কৌশলগত অবস্থান থেকে তাকে বিয়ের প্রস্তাবটি দিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম এই ঔষধে কাজ হবে। আমি ভুলে গিয়েছিলাম ঔষধ সব সময় রোগীর পক্ষে নিদান বয়ে আনে না। মূলত আমার দেয়া ঔষধে রোগী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুটিং এর আগে বা সুটিং চলাকালীন সময়ে তার সঙ্গে কাজের বাইরে কোনো কথা বলতে যাইনি। ইনবক্সেও কিছু লিখিনি। এবার আমার প্রশ্ন হচ্ছে সুটিং এর সময়ে সে আমার সঙ্গে এমন নিকৃষ্টতম আচরণগুলো কেনো করেছিলেন?’
উল্লেখ্য,বাংলাদেশি অভিনেতা নিরব ও কলকাতার অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকারকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ কাজ শুরু করেন তরুণ নির্মাতা রফিক শিকদার। ‘হৃদয় জুড়ে’ নামের এই চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠানে ২৫ মার্চ শনিবার সন্ধ্যায় এফডিসির ঝর্ণা স্পটে হয়। সেসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, হেরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোয়ায়েব হোসেন, চিত্রনাট্যকার আবদুল্লাহ জহির বাবু ও চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীরা।