নিজস্ব প্রতিবেদক : ফৌজদারি কার্যবিধির বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার (৫৪ ধারা) ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ধারা (১৬৭) প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা করে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে দশ দফার নীতিমালা এসেছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব পালনের বিষয়েও সাত দফা নির্দেশনা দেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) সাব্বির ফয়েজ জানান, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাসহ আপিল বিভাগের চার বিচারকের স্বাক্ষরের পর পূর্ণাঙ্গ রায় বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়। ৩৯৬ পৃষ্ঠার ওই রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডেপুটি আ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্টের রায়টি মোডিফাই করে আপিল বিভাগ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি বিচারপতি, ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রতি কিছু নির্দেশনা রয়েছে। আসামিদের সাথে কেমন ব্যবহার করা যাবে, সে নির্দেশনাও আছে।
তিনি জানান, গাডলাইনে প্রথমেই বলা হয়েছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় যারা আছেন, তারা যেন অতি উচ্চ মানের দায়-দায়িত্ব পালন করেন। সে বিষয়ে যথাযথ সক্ষমতা তাদের দেখাতে হবে। যাকে গ্রেফতার করা হবে তাদের ক্ষেত্রে যেন মানবাধিকার ক্ষুণ্ন না হয়। যে আসামিকে ধরা হবে তাকে যেন নির্যাতন বা হেয় প্রতিপন্ন করা না হয়।
২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে ৫৪ ও ১৬৭ ধারার কিছু বিষয় সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে। ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে প্রচলিত বিধি ছয় মাসের মধ্যে সংশোধন করার পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে সরকারকে কয়েক দফা নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়।
এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল গত ২৪ মে খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত। এতে হাইকোর্টর রায়ই বহাল থাকে। তবে ৫৪ ধারা ও ১৬৭ ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি নীতিমালা দেয়া হবে বলে আপিল বিভাগের রায়ে জানানো হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, দেশে যদি যুদ্ধ থাকে বা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করে, জাতীয় নিরাপত্তা যদি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় অথবা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থাকে, সেসব পরিস্থিতিকে এই রায় ‘ব্যতিক্রম’ হিসেবে ধরা হয়েছে।