স্বাস্থ্য ডেস্ক : ত্বক, চুল ও নখসহ সারা শরীরেই স্ট্রেস প্রভাব ফেলতে পারে। স্ট্রেস শরীরে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে বলে ত্বক হয়ে ওঠে সংবেদনশীল ও প্রতিক্রিয়াশীল। এর ফল ত্বকের বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনার আবেগ আপনার ত্বকের উপর শক্তিশালী প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে ত্বকের সমস্যা নিরাময় করাও কঠিন হয়ে পড়ে। স্ট্রেসের কারণে ত্বকের যে সমস্যাগুলো হয় সে বিষয়ে জেনে নিই চলুন।
১। লিচেন সিমপ্লেক্স ক্রনিকাস:-
লিচেন সিমপ্লেক্স ক্রনিকাস এমন একটি ত্বকের সমস্যা যার ফলে দীর্ঘমেয়াদী চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে। ত্বকের এই সমস্যাটি স্ট্রেস ও নার্ভাস টেনশনের কারণে বৃদ্ধি পায়। স্ট্রেস কমানোর মাধ্যমে এই সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
২। এক্সিমা ও সোরিয়াসিস:-
যদিও এক্সিমা ও সোরিয়াসিস এর মত ত্বকের রোগ স্ট্রেসের কারণে হয়না। কিন্তু আপনি যদি অনেক বেশি স্ট্রেসের মধ্যে থাকেন তাহলে ত্বকের এই সমস্যাগুলোর প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে। স্ট্রেসের ফলে শরীরের ইমিউনিটি কমে যায় বলে এই সমস্যাগুলো তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।
৩। ড্রাই স্কিন:-
মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে এক ধরণের হরমোন নিঃসৃত হয় যা রক্ত নালীকে সংকুচিত করে। ফলে রক্ত সংবহনের পরিমাণ কমে যায়। আর ত্বকে ঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত না হলে ত্বক হয়ে উঠে শুষ্ক, স্তরপূর্ণ এবং জ্বালা প্রবণ।
৪। রোসাসিয়া:-
রোসাসিয়ার মত ত্বকের সমস্যাও বৃদ্ধি পায় স্ট্রেসের কারণে। রোসাসিয়া হওয়ার অন্য কারণগুলো হচ্ছে – গরম ও মশলাযুক্ত খাবার, অত্যধিক তাপমাত্রা এবং শ্রমসাধ্য ব্যায়াম করা।
৫। ব্রণ:-
যদি আপনার চেহারায় ব্রণ দেখা যায় তাহলে স্ট্রেসকে দোষারোপ করতে পারেন। স্ট্রেসের কারণে শরীরে কর্টিসোল হরমোন নিঃসৃত হয় যা ত্বকের সিবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে সিবাম বা তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এর ফলে ব্রণের সমস্যা তৈরি হয়।
যদিও স্ট্রেসকে পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণ করার কিছু উপায় আছে। ত্বকে স্ট্রেসের প্রভাব কমানোর কয়েকটি উপায় হচ্ছে:-
– নিজের ত্বককে অবহেলা করবেন না। আপনি যতই ক্লান্ত বা মানসিক চাপের মধ্যে থাকুন না কেন ত্বকের যত্ন নিন।
– নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন। এটি ত্বকের জন্য এবং পুরো শরীরের জন্যই উপকারী।
– উপভোগ করেন এমন কোন কাজ করুন মাত্র ১০ মিনিটের জন্য হলেও। গোসল করুন অথবা একটি আর্টিকেল পড়ুন অথবা হেঁটে আসুন।
– স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট টেকনিক যেমন- দমচর্চা করুন, ইয়োগা করুন বা কল্পনা করুন।
– পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমান। রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিৎ।
– না বলুন, এটি স্ট্রেসকে সীমার মধ্যে রাখতে সাহায্য করবে।
– আপনার সমস্যা নিয়ে কারো সাথে কথা বলুন। প্রয়োজনে প্রফেশনাল থেরাপিস্টের সাহায্য নিন স্ট্রেস কমানোর জন্য।