শুক্রবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ইং ১৩ই আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে ধর্মীয় মত প্রকাশের ক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে

imageকূটনৈতিক প্রতিবেদক : জাতিসংঘের ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার হাইনার বিলেনফোল্ড বলেছেন, কিছু আইনি ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশে ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিক মত প্রকাশের ক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সফরের ওপর জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দেওয়া এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে তিনি এ মন্তব্য করেছেন। আজ বুধবার ওই প্রতিবেদন জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গত বছরের ৩১ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর করেন হাইনার বিলেনফোল্ড। ওই সময় তিনি সরকারি কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়, নাগরিক সমাজ ও কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রতিবেদনে হাইনার বিলেনফোল্ড বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেক আগে থেকেই আন্তধর্ম সহাবস্থানের পাশাপাশি সমাজের উদার মনোবৃত্তির দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূল আদর্শ হিসেবে ধরা হয়েছে, যা কারও প্রতি বৈষম্য না করে ধর্মীয় বহুমত ধারণের ক্ষেত্র করে দিয়েছে। মৌলিক ও রাজনৈতিক অধিকারের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ অনুসমর্থনের মাধ্যমে বাংলাদেশের এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশেষ র‍্যাপোর্টিয়ার বিলেনফোল্ড মনে করেন, ধর্মনিরপেক্ষতা, যা ধর্মীয় ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার ভিত্তিতে বৈচিত্র্যের সমাহারকে ধারণ করার কথা বলেছে, তা নিশ্চিত করা উচিত। সবাইকে ধারণ করার ব্যাপারে ধর্মনিরপেক্ষতার এই মূল্যবোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিতর্কের প্রক্রিয়ায় মূল্যবান ভূমিকা রাখতে পারে।
বিভিন্ন সম্প্রদায় ও ধর্মীয় বিশ্বাসের লোকজনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সম্ভাব্য সন্দেহ ও ভুল-বোঝাবুঝি অবসানের জন্য আন্তধর্ম ও আন্তসীমান্ত যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য সরকারকে তার উদ্যোগ দ্বিগুণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অসহিষ্ণুতা, বৈষম্য ও উগ্রবাদের যেকোনো তৎপরতার বিরুদ্ধে সরকারকে ধারাবাহিক অবস্থান বজায় রাখতে হবে। বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদ ও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও আদিবাসীরা নিজেদের বিপন্ন বোধ করায় তাদের উদ্বেগ দূর করে সক্রিয় নাগরিক সমাজ ও বহুমতের সমাজ সুরক্ষায় সরকারকে সচেষ্ট থাকতে হবে।