শুক্রবার, ৫ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২০শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

মাথার চুলকানি ও চিকিৎসা

মাথার চুলকানি ও চিকিৎসাঅনেক চর্মরোগের কারণে মাথা চুলকায়। যেমনÑ খুশকি হওয়া, মাথায় উকুন দেখা দেওয়া, মাথায় ছত্রাকের আক্রমণ ইত্যাদি। 
উকুন : মাথার চুলে যে উকুন হয়, সেটিকে বলা হয় পেডিকিউলাস ক্যাপিটিস। সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকা, একই বিছানা বা পোশাক-পরিচ্ছদ ব্যবহার করা, একই চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ানো, মাথা পরিষ্কার না রাখা ইত্যাদি কারণে মাথায় উকুন হতে পারে। মানুষের দেহে তিন ধরনের উকুন থাকে। দেহে যে উকুন হয় সেটিকে বলা হয় পেডিকিউলাস করপোরিস। বিটপদেশের লোম, বগল, গোঁফ-দাড়িত, চোখের পাতায় যে উকুন হয় সেটিকে বলা হয় পেডিকিউলাস পিউবিস।  মাথার উকুন তামাটে বর্ণের হয়। এগুলো একসঙ্গে শতাধিক ডিম পারে। এক থেকে দেড় সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা হয় এবং মাথার উকুনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। উকুন মাথায় কামড়ানোয় মাথা চুলকায় এবং ছোট ছোট ক্ষতের সৃষ্টি হয়। 
চিকিৎসা : লোশন চবৎসবঃযৎরহ ১ শতাংশ মাথায় ভালোভাবে লাগাতে হয় এবং মাথায় কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়Ñ যাতে উকুন পালিয়ে যেতে না পারে। ব্যবহার শেষে ভালোভাবে সাবান-পানিতে গোসল করতে হয়। 


খুশকি : সাধারণভাবে মাথায় হালকা আঁশের মতো মরা চামড়া ওঠাকে বলা হয় খুশকি। এতে মাথা চুলকায়। মাথার ত্বকে কুটকুটে ভাব থাকে। মাথার চুল বেড়ে গেলে, ভেজা থাকা অবস্থায় আঁচড়ালে, মাথায় ময়লা জমলে, বেশি বেশি তেল ব্যবহার করলে এবং ওই সঙ্গে ছত্রাকের আক্রমণ ঘটলে রোগের উপসর্গ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে একই চিরুনি বহুজনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে খুশকি পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হয় না। তবে দমিয়ে রাখা যায়। যাদের মাথায় খুশকি হয়, তাদের মাথায় তেল ব্যবহার কমিয়ে দিতে হবে অথবা বন্ধ করে দিতে হবে। খুশকি নিয়ন্ত্রণে না রাখলে চুল পড়ে যেতে পারে। তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। বাজারে পাওয়া যায় অ্যান্টিড্যানড্রফ শ্যাম্পু। তা ব্যবহারের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যদি ওই শ্যাম্পু ব্যবহারে খুশকি নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে  চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ খুশকি বলে যে রোগটি হালকাভাবে নিচ্ছেন, হয়তো খুশকি না হয়ে তা গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে। 


মাথার দাদ : ছত্রাকের আক্রমণ যখন মাথায় ঘটে, তখন তাকে বলে টিনিয়া ক্যাপিটিস বা মাথার দাদ। এ রোগটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের মাথায় হতে দেখা যায়। তবে খুব কম ক্ষেত্রেই সাবালকদের হয়। এক্ষেত্রে মাথার ত্বকের প্রদাহ, মরা চামড়া ওঠা, চুলকানি ও মাথার চুল পড়া অব্যাহত থাকে।
চিকিৎসা : এক্ষেত্রে দাদ-নিরোধক অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধÑ গ্রাইসিওফুলভিন ৫ মিলিগ্রাম বা কেজি শরীরের ওজনের অনুপাতে এক থেকে দেড় মাস খেতে হয়। 
লেখক : চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ