ফলোঅন নিয়ে বাংলাদেশের রহস্য, জিম্বাবুয়েও খেলছে মাইন্ডগেম
স্পোর্টস ডেস্ক : সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা শুনে তাইজুল ইসলাম এমনভাবে নড়েচড়ে উঠলেন যেন এমন ভয়ংকর প্রশ্ন তিনি আগে শোনেননি! বাংলাদেশ কি কাল জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করাবে? প্রশ্নটা দুবার করা হলো। দুবারই তিনি এড়িয়ে গেলেন। উত্তর না পেলেও তৃতীয় দিন শেষে যে এই প্রশ্নটা করা যাচ্ছে, তাতে কিন্তু বড় অবদান তাইজুলেরই।
খেলা শেষ হওয়ার মিনিট ত্রিশ আগে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধানের রুমে দেখা গেল দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশার খুব উদ্বেগভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে মাঠের দিকে। তাঁদের প্রশ্ন, বাংলাদেশ আজ অলআউট করতে পারবে জিম্বাবুয়েকে? দুই নির্বাচকের চিন্তাটা দূর হলো যখন শেষ বিকেলে জিম্বাবুয়ের ৯ম উইকেট রেজিস চাকাভাকে তাইজুল তুলে নিলেন।
দিনের খেলা শেষে অবশ্য দুটি প্রশ্ন ঘুরে ফিরে এল, জিম্বাবুয়ে কি অলআউট? অলআউট হলে বাংলাদেশ কি ফলোঅন করাবে সফরকারীদের? গতকাল সকালে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন টেন্ডাই চাতারা। জিম্বাবুয়ে পেসারের চোট এতটাই গুরুতর, জানা গেছে এই টেস্টে তাঁর আর খেলা হচ্ছে না। সেটিই যদি হয়, তাহলে তো জিম্বাবুয়ে ৩০৪ রানেই অলআউট। মজাটা হচ্ছে, জিম্বাবুয়ে অলআউট কি না, এটি নাকি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি বাংলাদেশ দলকে।
চাতারা আর ব্যাটিং করতে পারবেন কি না, এটি ম্যাচ রেফারিকে জানাবে জিম্বাবুয়ে। আর সেটি বাংলাদেশকে জানাবে ম্যাচ রেফারি। বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের এক সদস্য জানালেন, জিম্বাবুয়ে অলআউট কি না, সেটি এখনো তাঁদের জানানো হয়নি। তিনি উল্টো প্রশ্ন করলেন, প্রতিপক্ষ অলআউট হয়েছে কি না, সেটিই যদি পরিষ্কার না হওয়া যায়, বাংলাদেশ ফলো-অন করাবে কি করাবে না, সে প্রসঙ্গ আসবে কী করে?
দুই দলই এখন মনস্তাত্ত্বিক খেলা খেলছে। অবশ্য জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা ব্রেন্ডন টেলরের কথায় মনে হলো, তাঁরা বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে, ‘জানি না কাল বাংলাদেশ কী করবে। প্রথম দুই সেশন। প্রথম দুই সেশন ব্যাটিং করবে নাকি বোলিং। বোলিং দিয়েই শুরু করবে কি না, ঠিক জানি না।’
বাংলাদেশ তাঁদের ফলো-অন করাবে কি না, সেটির অপেক্ষায় যদি জিম্বাবুয়ে থাকে, তবে তারা অলআউটের বিষয়টি জানায়নি কেন বাংলাদেশকে? দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা তাইজুল অবশ্য এড়িয়ে যেতে চাইলেন বিষয়টি, ‘ফলো-অনের সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনো কিছু জানি না।’
দলীয় সূত্র বলছে, বাংলাদেশ অপেক্ষা করতে চাইছে। জিম্বাবুয়েকে তারা সিদ্ধান্ত জানাবে কাল সকালে। আজ তৃতীয় দিনে উইকেট দেখে বাংলাদেশ একটু অবাকই হয়েছে। যতটা ভাঙার কথা ছিল, যতটা টার্ন পাওয়ার কথা ছিল, তেমন কিছুই দেখা যায়নি। বরং বল সুন্দর ব্যাটে এসেছে। চতুর্থ দিনের সকালে তাই উইকেট বুঝে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে, চতুর্থ দিন তাঁরা কী দিয়ে শুরু করবে, বোলিং না কি ফিল্ডিং।
বাংলাদেশ ২১৮ রানে এগিয়ে, এ কারণেই সিদ্ধান্ত নেওয়া অধিকার পাচ্ছে । দলের আরেকটি সূত্র বলছে, বাংলাদেশ সকালে ব্যাটিংই করার পক্ষে। জিম্বাবুয়েকে অন্তত ৪০০ রানের লক্ষ্য দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করতে চায় তারা। এক-দেড় সেশনে ব্যাটিং করে যদি উইকেট ভাঙে, সেটি কাজে লাগাতে চায় তারা। চতুর্থ ইনিংসে অন্তত ১৩০ ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পেলে জিম্বাবুয়েকে অলআউট করা কঠিন হবে না বলেই বিশ্বাস বাংলাদেশের।