যে ৭টি গুনাহ মানবজীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়
ইসলাম ডেস্ক।। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, “যে সকল বড় গুনাহ সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সে সব বড় গুনাহ থেকে বেচে থাকতে পারো, তবে আমি তোমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে দিব এবং সম্মানজনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করাবো।” (সূরা নিসা:৩১)
সহিহ বুখারীর এক বর্ণনা অনুসারে, সাতটি বড় গুনাহ বা গুরুতর পাপ থেকে বিরত থাকতে আল্লাহর রাসূল আমাদের আদেশ করেছেন। এই সাতটি পাপ এত গুরুতর, যা মানবজীবনকে চরম বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসের দিকে ধাবিত করে। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো।
১. শিরক। শিরক করা তথা আল্লাহর সাথে অন্য কোন কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করা বা তার ইবাদত করা আল্লাহর অধিকারে হস্তক্ষেপের শামিল। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া থেকে বঞ্চিত হয় এবং তাওবাহ না করলে মৃত্যুর পর অনন্তকালের জন্য জাহান্নামী সাব্যস্ত হয়।
২. জাদুবিদ্যার চর্চা। জাদুবিদ্যার চর্চা মানুষের মাঝে সম্পর্কের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করে এবং মানুষের মধ্যকার সম্পর্কসমূহ বিনষ্ট হয়। আর এটা কুফরেরও একটি প্রকার।
৩. খুন। ইসলামে স্বীকৃত কারণসমূহ ছাড়া অন্যায়ভাবে কাউকে খুন করা অপর একটি গুরুতর পাপ। এর মাধ্যমে মানুষের আল্লাহ প্রদত্ত বাঁচার অধিকার চরমভাবে খর্ব হয়, সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তা চরমভাবে বিনষ্ট হয় এবং মানুষে মানুষে বিভেদের প্রাচীর তৈরী করে।
৪. সুদ। কোন সমাজের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ধ্বংস করতে হলে সুদের চেয়ে কার্যকর অন্য কিছুই নেই। সুদ সমাজের অর্থনৈতিক ভারসাম্যকে বিনষ্ট করে এবং সমাজের সকল সম্পদ কিছু মানুষের মাঝে কুক্ষিগত করে ধনী-গরীবের মাঝে আকাশ-যমিন বৈষম্য তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৫. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ। এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ সমাজের এতিম, অনাথ শিশুদের নিঃস্ব করে তোলে এবং জীবনযাত্রার প্রয়োজনে তারা তখন বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
৬. যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন। নিজ ভূমি রক্ষায় যুদ্ধ থেকে পলায়ন সহযোদ্ধাদের উদ্যম কমিয়ে দেয়। কোন বাহিনীর কিছু সদস্য যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করে, তবে বাহিনীর যুদ্ধ করার মনোবলই ভেঙে পড়ে। এটাও একটি কবিরা গুনাহ।
৭. সতী-স্বাধ্বী নারীর নামে অপবাদ। নিজেদের সতীত্বকে রক্ষা করে চলা নারীদের নামেই যদি মিথ্যা অভিযোগ বা অপবাদ আরোপ করা হয়, তবে সমাজের অন্যান্য লোকদের নামে অভিযোগ করা তো কোন বিষয়ই না। ইসলামে এ অপরাধ মহা অন্যায়। এর মাধ্যমে মানুষের সসম্মানে সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার খর্ব হয়। সমাজে গীবত ও চোগলখুরীর দরজা উন্মুক্ত হয় এবং মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক ও সামাজিক শান্তি বিনষ্ট হয়।