এই বিষয়গুলি অবশ্যই খেয়াল রাখুন সন্তান ধারণ ক্ষমতা নিশ্চিত করতে
ডেস্ক রিপোর্ট।। মা হতে তো আপনিও চান।কিন্তু জানেন নিশ্চয়ই সারা পৃথিবীতেই এখন নানা কারণে নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যেই প্রজনন ক্ষমতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে।মা হতে চেয়েও অনেকেই মা হতে পারছেন না।আর বাধ্য হয়ে তাই শেষমেশ তাঁদের আশ্রয় নিতে হচ্ছে ডাক্তারের কাছে।টেস্ট টিউব বেবির মাধ্যমে জন্ম নিচ্ছে তাঁদের সন্তান।
কেন এই অবস্থা? : মনিতেই দূষণের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।রাস্তায় বেরোলেই ধুলো,ধোয়া, ক্ষতিকারক গ্যাস এসব আমাদের শরীরের মধ্যে গিয়ে নানা সমস্যা তৈরি তো করেই।পলিউশনের কারণেই আজকাল বেড়ে গেছে ক্যান্সারের সম্ভাবনাও।আর ঠিক সেভাবেই আমাদের ব্যস্ত জীবনের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বদল ঘটছে আমাদের লাইফস্টাইলেও।ঘরের খাবার ছেড়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠছি জাঙ্ক ফুডে বা রেডি টু ইট ফুডে।কম ঘুম,স্ট্রেস—এসবের কারণেই ঘটছে আরও নানা সমস্যা।কমছে সন্তান ধারণের ক্ষমতা।
আজকের আর্টিকলে তাই আপনাদের সামনে নিয়ে এসেছি এমন কয়েকটি বিষয়ের কথা,যা মেনে চললে নিশ্চিত হতে পারে আপনার সন্তান ধারণের ক্ষমতা।কী কী?জেনে নিন।
১. নিজের দিকে খেয়াল রাখুন : আপনি যতই সুস্থ থাকুন,কিছু সময় ছাড়া ছাড়া রুটিন চেক আপ করা কিন্তু মাস্ট।তাই বিয়ে হলে বা না হলেও ১ বা দেড় বছর ছাড়া ছাড়া ডাক্তারের বা কোনো গাইনিকোলজিস্টের কাছে গিয়ে ভালো করে চেক আপ করান। বিভিন্ন টেস্ট করান।দেখবেন এতে নিজের মনেও শান্তি থাকছে,আবার যদি কখনও কোনো অসুখ হয়,তা আগে থেকে জেনে ঠিক সময় তার চিকিৎসা করাতেও পারছেন।মনে রাখবেন,আমাদের দেশের অনেক মানুষই কিন্তু এখনও শেষ মুহূর্তে নিজের রোগের কথা জানতে পেরে চিকিৎসা করাতে পারেন না।
২. পিরিয়ড ঠিকঠাক হয় ? : সন্তান ধারণ ক্ষমতা নিশ্চিত করতে এটা কিন্তু মাস্ট।তাই সবসময় খেয়াল রাখুন যে আপনার পিরিয়ড ঠিকঠাক হয় কিনা।আগের মাসে যে ডেটে পিরিয়ড শুরু হয়েছিল,পরের মাসে যদি সেই ডেটে না শুরু হয়,বা খুব বেশী অনিয়ম হয়,গ্যাপ যায়,তাহলে ডাক্তার দেখান শিগগিরই।আর পিরিয়ডের ঠিকঠাক খেয়াল রাখা মানে আপনি কিন্তু আপনার ওভিউলেশন পিরিয়ডেরও খেয়াল রাখতে পারবেন।
৩. ওজন বাড়ছে নাকি? : মা হতে যদি চান,তাহলে আপনার ওজনের ক্ষেত্রে কিন্তু একটু খেয়াল আপনাকে রাখতেই হবে।মোটা হবেন না।কারণ আপনার শরীরে যদি অতিমাত্রায় ফ্যাট জমে,তাহলে কিন্তু সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা যেতে পারে।বিভিন্ন সমীক্ষায় জানা গেছে যেসব মহিলাদের বডি মাস ইনডেক্স বা বি.এম.আই. ৩৫ এর ওপরে,তাঁদের প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যেতে পারে।তাছাড়া আপনার শরীরে বেশী ফ্যাট থাকলে অত্যধিক ইস্ট্রোজেন ক্ষরণ হয়।ফলে তা আপনার ওভিউলেশনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।এই ২০১৭ সালে এক সমীক্ষায় জানা গেছে,যে সব দম্পতিরা ওবেসিটিতে ভুগছেন,তাঁরা কিন্তু সুস্থ দম্পতিদের থেকে ৫৫-৫৯% বেশী সময় নেন কনসিভ করতে।
৪. ঠিকঠাক খাবার খান : আমাদের ব্যস্ত লাইফস্টাইলে অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়া কিন্তু নানা সমস্যাকে ডেকে আনতে পারে।মানছি,জাঙ্ক ফুড না খেয়ে আপনার উপায় নেই।কিন্তু তাও যত দূর পারেন বাইরের খাবার না খেয়ে ঘরের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।ফলমূল,শাক-সবজি বেশী করে খান।দেখবেন আপনার খাবারে যেন আয়রন,ক্যালশিয়াম,প্রোটিন যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। লিন প্রোটিন,হোল গ্রেন খান নিয়ম করে।আপনার ডায়েটে বেশী করে ডেয়ারি প্রোডাক্ট অ্যাড করুন।
৫. বেশী এক্সসারসাইজ করবেন না যেন: সন্তান ধারণ ক্ষমতা নিশ্চিত করতে য়োগা বা ব্যায়াম করুন নিয়ম করে। কিন্তু খেয়াল রাখবেন,আপনার এক্সারসাইজের মাত্রা যেন অত্যধিক না হয়ে যায়।বেশী ব্যায়াম কিন্তু আপনার পিরিয়ডকে অনিয়মিত করে তুলতে পারে।ফলে প্রেগন্যান্সিতেও নানা সমস্যা হতে পারে।তাই ব্যায়াম করুন ভালো থাকতে।
৬. ধূমপান করেন? : আজকাল মেয়েদের কিন্তু ধূমপানের অভ্যেস ক্রমশ বাড়ছে।সিগারেটে থাকা বিভিন্ন কেমিক্যাল কিন্তু মেয়েদের ডিম্বাণু নিঃসরণের ক্ষমতাকে কমায়।তাই সিগারেট খাওয়ার অভ্যেস থাকলে আস্তে আস্তে ছাড়তে চেষ্টা করুন।আর প্যাসিভ স্মোকিংও কিন্তু একেবারেই করবেন না।
৭. অ্যালকোহল? : মাঝে মাঝেই অ্যালকোহল খাওয়ার অভ্যেস আছে নাকি আপনার?তাহলে সাবধান হন।যখনই প্রেগন্যান্ট হতে চাইবেন,অ্যালকোহল খাওয়া ছাড়ুন। তবে বেশী মাত্রায় যারা রোজই অ্যালকোহল খান,তাঁদের কিন্তু সমস্যা গুরুতর হতে পারে।
৮. কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল খাবেন না : অতিরিক্ত মাত্রায় গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট খেলে কিন্তু আপনার প্রেগন্যান্সিতে পরে নানা সমস্যা হতেই পারে।তাই যতদূর পারেন এগুলোকে অ্যাভয়েড করাই ভালো। তাহলে এবার সুস্থ থাকুন,আর হেলদি লাইফস্টাইল লিড করুন।দেখবেন মা হতে আর কোনো সমস্যাই হবে না।ঠিক সময়ে ঠিক জিনিস হয়ে যাবে!