পানির নীচে গোপন গুহায় খোঁজ মিলল ২৬ লাখ বছর আগের ইতিহাস!
ঠিক যেন কোনো কল্পকাহিনি! পানির নীচে গোপন গুহায় খোঁজ মিলল প্রাগৈতিহাসিক বিশ্বের ইতিহাস রচনার উপাদান। পানির গভীরে ডুবে থাকা গুহায় পাওয়া গেল প্রাগৈতিহাসিক পশুর জীবাশ্ম। একই সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে মায়া সভ্যতার এক ধর্মীয় সৌধের ভগ্নাবশেষও।
জানুয়ারি মাসে মেক্সিকোর যুকাতান উপদ্বীপে জঙ্গলের মাঝে চুনাপাথরে পানির ধারায় তৈরি হওয়া গহ্বর বেয়ে পানির আধারের নীচে অভিযানে বিশ্বের বৃহত্তম গুহারাজি আবিষ্কার করেন মেক্সিকোর একদল গবেষক। গবেষণায় জানা গিয়েছে, স্যাক আকতুন এবং দোস ওখোস নামে দুই গুহারাজি আসলে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত।
কয়েক শতাব্দী ধরে ওই সমস্ত গুহায় জমে থাকা প্রত্ন সামগ্রীর হদিশ পেতে স্কুবা সরঞ্জাম নিয়ে পানির আধারের নীচে অভিযানে নামেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুহার ভিতরে পানির পরিমাণের তারতম্য ঘটেছে।আবার খরার সময় এই গুহারাজির মধ্যে জমা পানিই প্রাণরক্ষা করেছে। তবে পানির খোঁজে এই সকল গুহায় যে মানুষ ও পশুরা প্রবেশ করেছিল, তারা কেউই বেঁচে ফিরতে পারেনি। সেই সব মৃতদেহের জীবাশ্মই এখন বিজ্ঞানীদের সামনে জ্ঞান-ঐশ্বর্যের ভাণ্ডার খুলে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গুহাগুলিতে ২৬ লাখ বছর থেকে ১১ হাজার ৭০০ বছর আগে প্লেইস্টোসিন যুগের ইতিহাস সংরক্ষিত আছে। পাওয়া গিয়েছে হাতির মতো আকৃতির প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী গোম্ফোথেরাসের জীবাশ্ম।
সেই সঙ্গে মিলেছে অতিকায় শ্লথ ও ভালুকের জীবাশ্মও। মিলেছে ঝলসানো মানুষের হাড়, চিনেমাটির বাসনের টুকরো, দেওয়াল খোদাইশিল্পের নমুনা ইত্যাদি।সাংবাদিক সম্মেলনে প্রত্নতত্ত্ববিদ গুইয়ের্মো দে আন্দা জানিয়েছেন, ‘বিশ্বে এত বড় কোনো পানিতে ডুবে থাকা গুহার নমুনা আর নেই। ওখানে বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রত্ন সামগ্রী রয়েছে। সংরক্ষণের মানও অবাক করার মতো।’
গভীর অরণ্যে ঢাকা পাতালগুহায় পাওয়া গিয়েছে মায়াদের যুদ্ধ ও বাণিজ্য দেবতার একটি সৌধও। প্রাকৃতিক সংরক্ষণের ফলে তার নিখুঁত কারুকাজ আজও অক্ষত।