অপারেশনের পর দুটি কিডনিই গায়েব
নিউজ ডেস্ক।। আমার মায়ের কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলে আমরা তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজী বিভাগের প্রফেসর ডাক্তার হাবিবুর রহমান দুলালের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করি। তিনি বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর জানান মায়ের বাম কিডনিতে একটু সমস্যা আছে। তাই এই কিডনিটি ফেলে দিতে হবে। আমরা প্রথমে রাজি না হলেও পরবর্তীতে ডাক্তারের কথায় আমরা রাজি হই। অপারেশনের পর আমরা জানতে পারি মায়ের দু’টি কিডনিই কেটে ফেলা হয়েছে। মা এখন মুমূর্ষ অবস্থায় পড়ে আছে। বললেন মুমূর্ষ মায়ের সন্তান রফিক শিকদার।
রবিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে তিনটায় বিএফডিসির পরিচালক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেন ভুক্তভোগি মায়ের সন্তান চলচ্চিত্র পরিচালক রফিক শিকদার। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, সাবেক সভাপতি দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, জ্যেষ্ঠ পরিচালক শাহ আলম কিরণ প্রমুখ।
কিভাবে জানলেন দু’টি কিডনিই নেই? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রফিক শিকদার বলেন, অপারেশনের পর কর্তব্যরত ডাক্তার আমাকে বলেন, অপারেশনের পর থেকেই সুস্থ কিডনিটি আর কাজ করছে না। তাই দ্রুত তাকে আইসিইউতে নিতে হবে। আমাদের এখানে আইসিইউ খালি নেই। আপনারা কোনো বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।
‘পরে আমরা ইনসাফ বারাকা কিডনি এন্ড জেনারেল হাপাতালের আইসিউতে মাকে ভর্তি করালে তারা আমাদের কয়েকটি টেস্ট করতে দেয়। আমরা সে টেস্টগুলো ল্যাবএইড হাসপাতালে করি। গত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে ল্যাবএইড হাসপাতালে সিটিস্ক্যান করালে তারা জানায় মায়ের মধ্যে কিডনির কোনো অস্তিত্বই নেই। এরপর ইনসাফ বারাকা কিডনি হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম কথা বলেন ডা. হাবিবুর রহমান দুলালের সঙ্গে। পরে মাকে আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়।’ বললেন রফিক শিকদার।
রফিক শিকদার আরও বলেন, আমার মাকে কেন্দ্র করে ইউনিভার্সিটি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সেখানেও কমিটিতে অভিযুক্ত ডাক্তার দুলালকে রাখা হয়। আমি আরেকটি কথা বলতে চাই- আমার মাকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করি ওই সময় সেখানে অত্র হাসপাতালের ডাক্তার মামুনের মাকে ভর্তি করানো হয়। তার দুটি কিডনিই নষ্ট ছিল। আর এখন তিনি পুরোপুরি সুস্থ। আমি জানতে চাই তারা দুটি কিডনি কোথায় পেলেন?
বর্তমানে মায়ের অবস্থা সম্পর্কে রফিক বলেন, আমার মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। তিনি এখন ডিপ কোমাতে আছেন। বেঁচে আছেন কি- নাই তা আমরা জানি না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমার মায়ের সঙ্গে যা করা হলো এটা যেন আর কোনো মায়ের সঙ্গে না হয়। আমরা আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমার মায়ের নৌকার বাহিরে আর কোথায়ও আঙুলের ছাপ পড়েনি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘ডাক্তার হাবিবুর রহমান দুলাল আমাদের এই পরিচালক সমিতিতে এসে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে সই দিয়ে গিয়েছিলেন যে, রফিক শিকদারের মায়ের কিডনির ব্যবস্থা তিনি করে দিবেন। যতটাকা লাগে তিনি তাকে সুস্থ করে তুলবেন। রফিকের খালা কিডনি দিতে রাজি হলে তিনি যাবতীয় খরচ বহনের মাধ্যমে লিখিত দিয়ে যান গত ১ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে। কিন্তু সবকিছু বলে এখন পর্যন্ত তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি এবং কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এ ধরনের ডাক্তার নামের দুর্বৃত্তদের কঠিন বিচার হওয়া উচিৎ।’ উৎস: একুশে টেলিভিশন