ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যু ও আলেমে বরজখ
ইসলাম ডেস্ক।। মৃত্যু সবার জন্যই অবধারিত। এতে কোনো ধরনের সন্দেহের অবকাশ নেই। কোরআন ও হাদিসে এ বিষয়ে বিশদ বিবরণ আছে। মৃত্যুচিন্তা মানুষকে আল্লাহমুখী করে। অনন্ত জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য লাভের কাজে বান্দাকে সবসময় নিয়োজিত রাখে। কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫) অন্য একটি আয়াতে আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন, তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদের নাগালে পাবেই; এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও। (সুরা নিসা, আয়াত : ৭৮)
কোরআনে আরো এসেছে, তাদের বলো, যে মৃত্যু থেকে তোমরা পালাচ্ছ তা তোমাদের কাছে আসবেই। তারপর তোমাদের সেই সত্তার সামনে পেশ করা হবে, যিনি গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছুই জানেন। তখন তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন যা তোমরা করছিলে। (সুরা জুমা, আয়াত : ৮)
একটি হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, চতুষ্পদ জন্তু যদি তোমাদের মতো মৃত্যু জানতে পারত তবে তোমরা তাদের মধ্যে কোনো একটিকেও মোটাতাজা দেখতে পেতে না।
আলমে বরজখ সম্পর্কে কোরআনে এসেছে, আশা করি এখন আমি সৎ কাজ করব। কখনোই নয়, এটা তার প্রলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। এখন এ মৃতদের পেছনে প্রতিবন্ধক হয়ে আছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন যুগ-বরজখ যা পরবর্তী জীবনের দিন পর্যন্ত থাকবে। (সুরা মু’মিনূন, আয়াত : ১০০)
এ আমলে বরজখে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে, এ বিষয়ে হাদিসে বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। হজরত বারা ইব্ন আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, (কবরে মু’মিন) বান্দার কাছে দুজন ফিরিশতা আসেন এবং তাকে বসান। তারপর জিজ্ঞেস করেন, তোমর রব কে? সে বলে, আমার রব আল্লাহ। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমার দ্বীন কী? সে বলে, আমার দ্বীন ইসলাম? পুনরায় প্রশ্ন করেন, এই ব্যক্তি যাঁকে তোমাদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল, তিনি কে? উত্তরে সে বলবে, তিনি আল্লাহর রসুল (সা.)। তখন ফিরিশতা বলেন, তুমি তা কীভাবে বুঝতে পারলে? সে বলে, আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি, তাঁর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁকে সত্য বলে বিশ্বাস করেছি। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এটাই হলো আল্লাহর কালাম- যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের ‘শাশ্বত বাণী’র (কালেমা তায়্যিবা) ওপর অবিচল রাখবেন। (সুরা ইব্রাহিম, ১৪ : ২৭)
`নবী করিম (সা.) বলেন, এরপর আসমান থেকে এক ঘোষণাকারী এই মর্মে ঘোষণা করবে যে, আমার বান্দা সত্য বলেছে। তাই তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও। তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। সুতরাং তার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়। ফলে তার দিকে জান্নাতের স্নিগ্ধ হাওয়া এবং এর সুবাস বইতে থাকে। তারপর তার কবরকে তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হয়।