৫০ টাকায় দুপুরের খাবার পৌঁছে দেব : আহসান খান চৌধুরী
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী বলেছেন, আগামী দিনে বাজারে একটি প্রোডাক্ট ছাড়বো। যেখানে ভাত-ডাল-সবজি থাকবে। শুধু গরম পানি ঢাললেই খাবার তৈরি হয়ে যাবে। এতে খাবার খেতে বেশি খরচ করতে হবে না। এ ধরনের পণ্য যখন ফুড প্রসেসিং কোম্পানিগুলো বাজারে আনবে তখন আমাদের রফতানির চেয়ে এ খাতে উন্নতি হবে। এখন ঢাকায় এক কোটি লোক কাজ করেন, যারা দুপুরের খাবার খান। তাদের হাতে যদি ৫০ টাকায় দুপুরের খাবার পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে প্রতিদিনই এ খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজার হবে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য নিয়ে তিন দিনব্যাপী ‘ষষ্ঠ বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো-২০১৮’ সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই এক্সপো শুরু হবে বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর)। বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ও এক্সট্রিম এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট সলিউশনের উদ্যোগে এ মেলা হবে। মেলা চলবে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত।
আহসান খান চৌধুরী বলেন, ফুড প্রসেসিংয়ের বাজার ব্যাপক। প্রতিদিনই এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের উৎসাহ দরকার, আপনাদের আস্থা দরকার। আমরা যত ভালো হবো, আমাদের এ খাত তত বড় হবে।তিনি বলেন, বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপোর মাধ্যমে আমরা আশা করি, দেশের ফুড প্রসেসিংয়ের বিপ্লব হবে। মেলায় দেশি-বিদেশি ১৪৯ প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। এতে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানের মেলবন্ধ সৃষ্টি হবে। উদ্যোক্তারা নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হবেন। এ মেলার মাধ্যমে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশের খাদ্যপণ্য সারাবিশ্বের কাছে তুলে ধরা হবে। রফতানি বাড়িয়ে বিশ্বের বুকে দেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্য মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। সর্বোপরি কৃষির বিপ্লব হবে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা কৃষকদের অগ্রাধিকার দিচ্ছি। রাজধানীতে কৃষি পণ্যের একটি বড় বাজার রয়েছে। ছোট-বড় সুপার চেইন শপের মাধ্যমে কীভাবে কৃষক ও ভোক্তার সমন্বয় করা যায় তা নিয়ে কাজ করছি। দেশের ‘স্বপ্ন’, ‘আগোরা’সহ বিভিন্ন চেইন শপকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি যে, আপনারা পরামর্শ দেন কীভাবে কৃষকের পণ্য সহজে ন্যায্যমূল্যে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো যায়।
ভারতজুড়ে খাদ্যপণ্য পৌঁছে দিতে প্রাণ সক্ষম হবে- এমন আশা করে আহসান খান চৌধুরী বলেন, কানাডা একটি সুন্দর দেশ। আমরা কানাডা থেকে শস্য এনে এ দেশে প্রসেস করে ওই পণ্য আবার কানাডার বাজারে রফতানি করবো।যেমন- আমাদের একটি ছোট প্রতিষ্ঠান ‘প্রাণ’। আমরা কানাডা থেকে গম আমদানি করি। ওই গম দিয়ে পরোটা তৈরি করে কানাডায় রফতানি করছি। ভারতের উত্তর-পূর্ব দেশগুলোতে আমরা ব্যাপকহারে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য রফতানি করছি। আশা করছি, আগামীতে এ প্রক্রিয়াজাত পণ্য ভারতজুড়ে পৌঁছে দিতে আমরা সক্ষম হবো।
ইউরোপের বাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউরোপের বাজারে ব্যাপকহারে ফুড প্রসেসিংয়ে আমরা জয়লাভ করেছি। বিগত দিনে আমরা মনে করতাম ইউরোপের বাজারে আমাদের শুধু পোশাক পণ্য রফতানি হবে। এখন এ ধারণা পাল্টে গেছে।এখন ইউরোপে খাদ্যপণ্য ব্যাপকহারে রফতানি হচ্ছে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় সফলতা পেয়েছি। সোমালিয়ার মতো রাষ্ট্রে প্রাণপণ্য রফতানি করছি। দক্ষিণ আমেরিকার দেশে আমাদের পণ্য যাচ্ছে। সেখানে শুধু বাঙালিরা পণ্য কিনছে তা নয়, আমেরিকানরাও আমাদের পণ্য কিনছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জানান, দেশে সামগ্রিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাত পণ্যের বাজার এখন বছরে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার। প্রতিদিনই এ বাজার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আশা করছি, ২০২১ সাল নাগাদ খাদ্যপণ্যের এই বাজার ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।