৫টি কারন ভুঁড়ি হওয়ার ও তা থেকে মুক্তির উপায়
স্বাস্থ্য ডেস্ক।। শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট বেড়ে যাওয়ার সাথে বাড়তি পাওনা হল, বেলি ফ্যাট বেড়ে যাওয়া। তখন মনে হয়, এটার মত অস্বস্তিকর বোধহয় আর কিছু নেই জীবনে। কত পছন্দের পোশাক শুধু এটার জন্যই বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু ভেবে দেখুন তো, শুধু মাত্র কি নেহাতই শরীরের ফ্যাট বেড়ে গেছে বলেই, পেটের মেদও বেড়েছে। নাকি রয়েছে অন্য কারন। কারন পেটের মেদ বেড়ে যাওয়া কিন্তু শুধু ওজন বেড়ে যাওয়ার জন্য হয় না। বেভিন্ন স্টাডি থেকে দেখা যাচ্ছে, ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়ার পেছনে কাজ করে বিভিন্ন কারন। সে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এটা হতে পারে। দেখুন কি কি কারন ভুঁড়ির জন্য দায়ী।
অতিরিক্ত অ্যালকোহলের কারন ভুঁড়ি: এটা বুঝতে কোন অসুবিধা নেই, যে যারা একটু বেশী ড্রিঙ্ক করেন তাদের ভুঁড়ি হয়েই থাকে। শরীরে খুব বেশী অ্যালকোহল গেলে ফলাফল স্বরূপ এটা দেখতেই পাবেন। তাই যারা মাঝে মধ্যেই ড্রিঙ্ক করেন, ভুঁড়ি কমাতে চাইলে তো অবশ্যই অ্যালকোহল কমাতেই হবে। কিন্তু প্রশ্ন আসতেই পারে যে অ্যালকোহলের সাথে পেট ফোলার কি সম্পর্ক? সম্পর্ক তো অবশ্যই রয়েছে, বিভিন্ন কারনেই অ্যালকোহলের জন্য ভুঁড়ি বেড়ে যায়। যেমন, অ্যালকোহল খাবারকে ঠিক মত হজম হতে দেয় না। সঠিক হজম প্রক্রিয়ায় বাঁধার সৃষ্টি করে। যেটা আপনার শরীরের জন্য একদমই ভালো নয়। আর ভেতরে ভেতরে সঠিক ভাবে খাবার হজম না হওয়াটা, একদিকে যেমন সবসময় আপনি বুঝতেও পারবেন না। অন্যদিকে এটা পেট ফুলে যাবার একটা কারন।
এছাড়াও এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে। যেটা পেট ফুলে যাবার একটা অন্যতম কারন। তাই যত বেশী অ্যালকোহল খাবেন ততই পেট ফুলে যাবে। তাই ভেবে দেখুন কোনটা গুরুত্বপূর্ণ, বিয়ারের গ্লাসটা নাকি আপনার শরীর?
অতিরিক্ত চিন্তার কারন ভুঁড়ি : অতিরিক্ত অ্যালকোহলের মত, অতিরিক্ত চিন্তাও কিন্তু ভুঁড়ির একটা কারন। কারন অতিরিক্ত স্ট্রেস কোথাও একটা শরীরকে পুরোপুরি ফিট থাকতে দেয় না। অতিরিক্ত চিন্তার ফলে আপনি নিজেও নিজের দিকে তেমন মন দেন না। খাওয়াদাওয়া ঠিকমত করেন না। নিয়ম মেনে সঠিক ডায়েট চার্ট মানেন না। এছাড়া অতিরিক্ত চিন্তার কারনে রাতের ঘুম উড়ে যায়। যেটা অত্যন্ত ক্ষতিকর। রাতে রোজ আট ঘণ্টা ঘুম তো দরকারই। শরীরকে উপযুক্ত রেস্ট না দিলে, খাবারও ঠিকমত হজম হয় না। এই অনিয়মিত খাবার, অনিয়মিত ঘুম, ভুঁড়ির সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়।
তাই ভুঁড়ি থেকে দূরে থাকতে, ভাজাভুজি খাবার কম খান। হেলদি ডায়েট মেনে চলুন। সঠিক সময় মেনে চলুন। রাতে উপযুক্ত বিশ্রাম। এবং রোজ একটু এক্সারসাইজ। ব্যাস এই কটা অভ্যাস আপনাকে শুধু অতিরিক্ত ভুঁড়ি থেকেই দূরে রাখবে না, আপনাকে সবদিক থেকে ভালো রাখবে।
গ্যাসের কারন ভুঁড়ি : আপনি কি গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন? এটাও কিন্তু ভুঁড়ির একটা কারন। তাই গ্যাসের সমস্যা থাকলে সেটা একদমই হালকা ভাবে নেবেন না। কারন গ্যাস যে শুধু পেটের ভুঁড়ি বাড়াবে তাই নয়, বাড়তে বাড়তে এটা আলসার ছাড়াও ক্যান্সারের মত ভয়াবহ সমস্যাও তৈরি করতে পারে। খেয়াল করে দেখুন তো, রোজ এমন কিছু খাচ্ছেন না তো যাতে গ্যাস হচ্ছে? বা কোন কোন খাবার থেকে গ্যাস হচ্ছে সেটা ভালো করে লক্ষ্য করুণ। হেলদি ডায়েট মেনে চলুন। আর সমস্যা বেশী হলে, অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যান। গ্যাসের সমস্যাকে কখনোই হালকা ভাবে নেবেন না।
➡ গ্যাসের ঘরোয়া চিকিৎসা
শরীরে হরমোনের অসামঞ্জস্য ভুঁড়ির কারন : না গ্যাস না অম্বল। হেলদি ডায়েটও মেনে চলেন তাও ভুঁড়ি। কেন? কারন শরীর হরমোনের অসামঞ্জস্য। হরমোনের সমস্যা হলে এটা হতেই পারে। এক্ষেত্রে ওষুধ রয়েছে। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। ভুঁড়ি কমাতে চাইলে। কারন এক্ষেত্রে আপনার নিজের তেমন কিছু করার নেই। এটা হরমোনের সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ তো নিতেই হবে।
বেবি হওয়ার আগে পেট ফোলা : এইসব কারন গুলো ছাড়া ভুঁড়ির আর একটাই কারন হতে পারে। সেটা হল আপনার ছোট্ট সোনার আগমন। তবে বেবি হওয়ার আগে যে ভুঁড়িটা হয়, সেটা নিয়ে চিন্তার কোন কারন নেই। এটা যেমন হয় তেমনই কমেও যাবে। এই বেলি ফ্যাট আপনার ছোট্ট সোনাকে আপনার শরীরে সুরক্ষিত রাখে। বেবি একটা সুরক্ষিত কুঠুরিতে থাকে। বেবি হবার পর তো অবশ্যই একটু কমে যাবে। না কমলে সঠিক ডায়েট, এক্সারসাইজ, ইয়গা এসবের মাধ্যমে কমানো যেতেই পারে। তবে এই এক্সারসাইজ, ডায়েট চার্ট আপনি নিজেই ঠিক করে নেবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে, তিনি যেমন ঠিক করে দেবেন সেই অনুযায়ী করবেন। কারন কোন কিছুই আপনার বেবি ও আপনার শরীরের থেকে বড় নয়।
শেষের কারনটি ছাড়া, বাকি কারনে ভুঁড়ি কিন্তু একদমই ফেলে রাখার মত বিষয় নয়। তাই আগে খেয়াল করে দেখুন তো,আসলে ঠিক কেন ভুঁড়ি কমছে না। তারপর সেই অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট করুণ।