সৎ মেয়েকে স্ত্রী দাবি করে মামলা, এরপর…
এক ভণ্ড ফকিরের কাণ্ডে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে বরিশালের মুলাদী উপজেলার খালাসিরচর গ্রামে। ওই ফকির তার স্ত্রীর আগের ঘরের মেয়েকে চতুর্থ স্ত্রী দাবি করে আদালতে মামলা করলে বেড়িয়ে আসে আসল ঘটনা। বুধবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা সদর ইউনিয়নের খালাসিরচর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ভণ্ড ফকির ১৩ সন্তানের জনক আমিনুর বেপারীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আমিনুরের আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে একটি ছুরি, একটি চাপাতি, রামদা, দা এবং বিপুল পরিমাণ ফকিরি বই উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান জানান, স্ত্রী ইয়াসমিনের আগের স্বামী আলা উদ্দীন বেপারীর ঘরের কন্যা লামিয়া খানমকে নিয়ে নিজের বাড়িতে বসবাস করে আসছিল ভণ্ড ফকির আমিনুর। লামিয়া ধীরে ধীরে বড় হওয়ায় তার ওপর আমিনুরের কুনজর পড়ে। পরবর্তীতে আমিনুর ফকির প্রতারণার মাধ্যমে আদালতের একটি এফিডেভিট দেখিয়ে স্ত্রী ইয়াসমিনের কন্যা লামিয়াকে চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে দাবি করে। কন্যাকে স্বামীর হাত থেকে রক্ষা করতে মা ইয়াসমিন প্রায় এক বছর আগে লামিয়াকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। সেখানেই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন ইয়াসমিন।
এর মধ্যে ১৪ আগস্ট লামিয়াকে পাওয়ার জন্য বরিশাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করে ভণ্ড ফকির আমিনুর। আদালত কাগজপত্রের সূত্রে লামিয়াকে উদ্ধার করে আমিনুরের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য মুলাদী থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।এ বিষয়ে পুলিশ লামিয়ার মা ইয়াসমিনের সঙ্গে কথা বললে বেরিয়ে আসে ভণ্ড ফকির আমিনুরের আসল চরিত্র। ওই সময় ইয়াসমিন পুলিশকে জানান, আমিনুরের তিনজন স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তার কন্যা লামিয়াকে বিয়ের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। সেই সঙ্গে ভুয়া এফিডেভিট তৈরি করে আদালতে মামলা করেছে আমিনুর। এ নিয়ে তিন স্ত্রী প্রতিবাদ করলে চাপাতি, রামদা ও লোহার রড দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেয় আমিনুর।
ওসি জিয়াউল আহসান আরও বলেন, প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরে বুধবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে আমিনুরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আমিনুরের আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে একটি ছুরি, একটি চাপাতি, রামদা, দা এবং বিপুল পরিমাণ ফকিরি বই উদ্ধার করা হয়। থানায় নিয়ে এসে আমিনুরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।জানা যায়, আমিনুর বেপারী খালাসিরচর গ্রামের মৃত মুজাহার বেপারীর ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে ঝাড়ফুঁকের নামে এলাকায় প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। নারী লোভী আমিনুর বিয়ে গোপন করে একের পর এক বিয়ে করে নারীদের সর্বনাশ করে আসছেন। বর্তমানে তিন স্ত্রী ছাড়াও আগে তিনটি বিয়ে করেছেন তিনি।
অভিযুক্ত আমিনুরের স্ত্রী ইয়াসমিন জানান, নারী লোভী আমিনুর বিয়ে গোপন করে একের পর এক বিয়ে করে নারীদের সর্বনাশ করছে। তিন স্ত্রী ছাড়াও আগে তিনটি বিয়ে করেছে সে। এখন আমার মেয়ে লামিয়াকে বিয়ে করতে মামলা করেছে। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে আমাদের ফাঁসাতে চাইছে ভণ্ড আমিনুর। আসলে বিয়ে করা ওর নেশা।