বাংলাদেশের সিরিজ জয়
লিটন দাস আর ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ১ ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগারদের এটা টানা তৃতীয় ওয়ানডে সিরিজ জয়। এর আগে ২০১৪ সালে ৫ ম্যাচের সিরিজে অতিথিদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল তারা। পরের বছর ৩ ম্যাচের সিরিজ জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে।আজ বুধবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৪৭ রানের টার্গেটে ৫.৫ ওভার এবং ৭ উইকেট হাতে রেখেই পৌঁছে যায় মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। ব্যাট হাতে ১৪৮ রানের ওপেনিং জুটি উপহার দেন ইমরুল কায়েস এবং লিটন দাস। তবে কেউই সেঞ্চুরি পাননি। লিটন ঝড়ো ৮৩ রান করে আর ইমরুল ৯০ রানে আউট হয়ে যান।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দলকে ভালো শুরু এনে দেন লিটন দাস এবং ইমরুল কায়েস। মারকুটে মেজাজে খেলা লিটনের বিপরীতে ইমরুল কিছুটা ধীরস্থির শুরু করলেও পরে হাত খোলেন। প্রথম ওভারে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া লিটন ৪৬ বলে ৮ চার ১ ছক্কায় তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি।লিটনের পর ৫৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন ইমরুল কায়েস। ঝড়ের গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল পার্টনারশিপ। জুটিতে ১৪৮ রান আসার পর ছন্দপতন হলো উইকেটের চারদিকে দৃষ্টিনন্দন সব শট খেলতে থাকা লিটন দাসের বিদায়ে। ৭৭ বলে ১২ চার ১ ছক্কায় ৮৩ রান করা লিটন সেঞ্চুরির আক্ষেপ জাগিয়ে সিকান্দার রাজার বলে ত্রিপানোর তালুবন্দি হলেন। তিন নম্বরে নেমে যথারীতি ‘ডাক’ মারলেন ফজলে রাব্বি। রবিবার অভিষেকেও ‘ডাক’ মেরেছিলেন তিনি।
মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ইনিংস গড়ায় মনযোগ দেন ইমরুল কায়েস। সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে কি একটু চাপে ভুগছিলেন তিনি? নার্ভাস নাইন্টিতে গিয়ে সিকান্দার রাজাকে উড়িয়ে মারতে গেলেন। ব্যাটে-বলে টাইমিং না হওয়ায় ১১১ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৯০ রানের ইনিংসটির ইতি হলো চিগাম্বুরার তালুবন্দি হয়ে। দল তখন জয় থেকে ৩৬ রান দূরে। প্রথম ওয়ানডেতে ১৪৪ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছিলেন ইমরুল।
বাকী কাজটা শেষ করে দেন মুশফিকুর রহিম এবং মোহাম্মদ মিঠুন। সিফাস জুওয়াওকে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৫.৫ ওভার এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা তৃতীয় সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ।এর আগে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ২৪৬ রান তুলে সফরকারী জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৮ রানে সাইফউদ্দিনের স্লোয়ার অধিনায়ক মাসাকাদজার (১৪) ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। অধিনায়কের দ্রুত বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেইলর এবং সিফাস জুওয়াও। দুজনে মিলে গড়েন ৫২ রানের জুটি। ঘূর্ণিবলে জুওয়াওকে (২০) ফজলে মাহমুদের তালুবন্দি করে জুটি ভাঙেন মিরাজ।
কিন্তু অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেইলরকে থামানো যাচ্ছিল না। তৃতীয় উইকেটেও তিনি উইলিয়ামসকে সঙ্গে নিয়ে ৭৭ রানের জুটি গড়েন। অবশেষে মাহমুদ উল্লাহর বলে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে থামে তার ৭৩ বলে ৯ চার ১ ছক্কায় ৭৫ রানের চমৎকার ইনিংস। সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন শন উইলিয়ামস (৪৭)।তবে হাত চালিয়ে খেলতে থাকেন সিকান্দার রাজা। চতুর্থ এবং পঞ্চম উইকেটে উইলিয়ামস আর মুরকে নিয়ে গড়া তার দুটি জুটিই ছিল ৪১ রানের। রাজাকে ৪৯ রানে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করেন অধিনায়ক মাশরাফি। মুস্তাফিজ তার প্রথম শিকার ধরেন পিটার মুরকে (১৭) মেহেদি মিরাজের তালুবন্দি করে।
এরপর আবারও সাইফউদ্দিন ঝলক। তার একটি শর্ট বলে এলটন চিগাম্বুরা (৩) পয়েন্টে ধরা পড়েন নাজমুল ইসলামের হাতে। শেষ ওভারের তৃতীয় বলে সহজ রান-আউট থেকে বেঁচে যান মাভুতা (৬)। পরের বলেই তাকে মুস্তাফিজের তালুবন্দি করেন সাইফউদ্দিন। কিন্তু রিভিউয়ে সেটা নট-আউট বলে প্রমাণিত হয়।শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৪৬ রান তুলে সফরকারীরা। সাইফউদ্দিনের ৩ উইকেটের পাশাপাশি ১টি করে উইকেট নেন মাশরাফি, মুস্তাফিজ, মিরাজ এবং মাহমুদ উল্লাহ।