টাইগারদের চোখ বাংলাওয়াশে
স্পোর্টস ডেস্ক : তিন ম্যাচের দুই ম্যাচেই সহজ জয় পেয়েছে টাইগাররা।বাকি এক ম্যাচে জিতলেই ধবলধোলাই। বাকি ম্যাচটা জিতে বাংলাওয়াশের স্বাদ ফের আস্বাদন করতে চাইবে মাশরাফিবাহিনী। অন্যদিকে এই ম্যাচ জিতে সান্ত্বনা খুঁজতে চাইবে মাসাকাদজাবাহিনী।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে প্রথম দুই ম্যাচেই দুর্দান্ত জয়ের সুখস্মৃতি সঙ্গী হবে টাইগারদের। সেই সঙ্গে আরও একবার জিম্বাবুয়েকে হোয়াইওয়াশ করেও হয়ে যাবে।
এখন পর্যন্ত মাঠে গড়ানো দুই ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে যেভাবে হারিয়েছে টাইগাররা তাতে তৃতীয় ম্যাচেও যে জয়ী দলের খেতাব যাবে তাদের হাতেই এতে সন্দেহ করার অবকাশ খুব কমই আছে। বাংলাদেশের এমন একতরফা জয় দলে বাড়তি আত্মবিশ্বাসের রসদ জোগাবে।
টানা জয় পেলেও বাংলাদেশ দল যে পুরো নির্ভার হয়ে মাঠে নামবে তা অবশ্য নয়। দুই ম্যাচেই ‘ডাক’ মেরে নিজের অভিষেককে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। শেষ ম্যাচের দলেও তাকে রাখা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন টাইগার দলপতি মাশরাফি। হয়তো এই ম্যাচ দিয়েই নিজেকে ফিরে পেতে পারেন তিনি।
টপ অর্ডারে লিটন-ইমরুলের রান পাওয়াটা স্বস্তির কারণ হয়ে এসেছে টাইগার শিবিরে। তবে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তথা মিডল অর্ডারের স্তম্ভ মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ এখনও ঠিক ছন্দ ফিরে পাননি। তবে এজন্য তাদের দায় যতটা তার চেয়ে বেশি দায়ী টপ অর্ডারের নিয়মিত রান পাওয়া।
গত ম্যাচেই ইমরুল-লিটন মিলে ১৪৮ রানের জুটি গড়েছিলেন। মিডল অর্ডারে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন মোহাম্মদ মিথুন। আর ব্যাট-বলে নিজের পারদর্শিতা দেখতে সক্ষম হয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, যা কোচ আর অধিনায়ককে নিশ্চিত স্বস্তি দেবে।
বল হাতে মোস্তাফিজ ও মাশরাফি বেশ ভালো করছেন। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত দুই ডেলিভারিতে ব্রেন্ডন টেইলর ও সিকান্দার রাজাকে আউট করা ছাড়া তেমন নজর কাড়তে পারছেন না।
অন্যদিকে শেষ ম্যাচটি সম্মান রক্ষার ম্যাচে পরিণত হয়েছে জিম্বাবুয়ের জন্য। আসন্ন টেস্ট সিরিজের আগে এই জয়টা তাদের প্রেরণা জোগাতে অতীব জরুরী বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ১৩৬ রানে ৬ উইকেট ফেলে দিয়েও ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১২৭ রান খরচ করে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে জিম্বাবুয়ে। জবাব দিতে নেমে ভালো শুরুর পরেও ২৬ ওভারে ১০০ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে নিজেদের পরাজয় নিজেরাই ডেকে আনে।
দ্বিতীয় ম্যাচে দলের সেরা ব্যাটসম্যান ব্র্যান্ডন টেইলর ৭৫ রানের দারুন ইনিংস খেললেও ৩০ ওভারের কাছাকাছি যখন রান তোলার তাড়া বাড়ছিল তখনই আউট হয়ে দলের সর্বনাশ ডেকে আনেন। ওই ম্যাচে সিকান্দার রাজাও ফিফটি মিস করেন। শেষদিকে তার দ্রুত রান তোলার চেষ্টা প্রতিহত হয় বাংলাদেশের বোলারদের অসাধারণ বোলিংয়ের কারণে।
দুই ম্যাচে ১৪৪ ও ৯০ রান করা ইমরুল কায়েস শেষ ম্যাচেও বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডারের সেরা ভরসা। পরের ম্যাচেও যদি বড় রান আসে তার ব্যাট থেকে তামিম ইকবাল ইনজুরি কাটিয়ে ফিরে এলে তার সঙ্গী হিসেবে জায়গা পাওয়ার দারুন সুযোগ থাকবে তার সামনে। আর ৭৯ রান করলেই তামিমকে (৩১২ রান) ছাড়িয়ে বাংলাদেশের হয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হবেন ইমরুল।
অন্যদিকে বাংলাদেশ দলের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারেন জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সিকান্দার রাজা। চট্টগ্রামে ৪৯ রান আর ৩ উইকেট নিয়ে কিছুটা নজির তিনি দেখিয়েও দিয়েছেন। তবে বাকিদের ব্যর্থতা তার সফলতাকে ঢেকে দিতে পারে।
পরের ম্যাচে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পেতে পারেন নাজমুল হাসান শান্ত, আরিফুল হক, রুবেল হোসেন ও আবু হায়দার রনি। আর শেষ মুহূর্তে সৌম্য সরকারকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনতে পারে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, ফজলে মাহমুদ, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিঠুন/সৌম্য, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন, মাশরাফি মর্তুজা (অধিনায়ক), নাজমুল ইসলাম (রুবেল হোসেন), মোস্তাফিজুর রহমান।
জিম্বাবুয়ের সম্ভাব্য একাদশ: হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, চিপহাস জুহওয়াও, ক্রেইগ আরভিন, ব্র্যান্ডন টেইলর (উইকেটরক্ষক), সিকান্দার রাজা, শন উইলিয়ামস, পিটার মুর, ডোনাল্ড ট্রিপিয়ানো, ব্র্যান্ডন মাভুতা, কাইলি জারভিস, টেন্ডাই চাতারা।