জিন্নাত আলী প্রতিদিন একাই খাবেন ১৮ জনের খাবার
নিউজ ডেস্ক।। দেশের সবচেয়ে লম্বা মানুষ জিন্নাত আলী বর্তমানে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন । ভর্তি হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। কিন্তু এখানে ভর্তি হয়ে সমস্যা যেনো আরও বেড়ে যায়। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিন্নাতকে যে খাবার দেয়া হয়, তার কাছে সেটি খুবই নগন্য। চার-পাঁচ জন মিলে হাসপাতাল থেকে দেয়া নিজেদের খাবার দিয়ে দেন জিন্নাতকে। বিষয়টি জানার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জিন্নাতকে প্রতি বেলায় ৬ জনের খাবার দেয়ার নির্দেশ দেয় বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের খাবার পরিবেশন বিভাগে কর্মরত পলাশ বলেন, পরিচালক স্যার আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন তার পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করতে। স্যারের নির্দেশে এখন থেকে প্রতিবেলায় ৬ জনের খাবার দেয়া হবে। যা প্রতিদিন ১৮ জনের সমান। একইসঙ্গে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধায়নে আছেন তিনি।
২২ বছর বয়সী এই যুবকের বর্তমান উচ্চতা ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি। যদিও গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা জীবিত মানুষ তুরস্কের সুলতান কশেন। ১৯৮২ সালে জন্ম নেয়া কশেনের উচ্চতা ৮ ফুট ৩ ইঞ্চি। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ২০০৯ সালে তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তির স্বীকৃতি দেয়। তবে বাংলাদেশের জিন্নাত সেই কশেনের চেয়েও তিন ইঞ্চি লম্বা।
বর্গা চাষি আমির হামজার ছেলে জিন্নাত আলী বুধবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রীকে বলেন নিজের সমস্যার কথা। কক্সবাজার-৩ আসনের সরকার দলীয় এমপি সাইমুর সরওয়ার কমল তাকে এ সুযোগ করে দেন। প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। সে অনুযায়ী বিএসএমএমইউতে তার সম্পন্ন ফ্রি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
জিন্নাতের বড় তাই ইলিয়াস বলেন, জিন্নাতের চিকিৎসার টাকা দেয়া আমার স্ত্রী এটা সহ্য করতে পারত না। সে বাড়ি থেকে চলে গেছে, এতে কোনো দুঃখ পায়নি। এরপরও আমার সাধ্যমতো ভাইয়ের চিকিৎসা দিয়েছি। এলাকার মানুষ আমাকে সাহায্য করেছে।
তিনি বলেন, গত ২ বছর ধরে এমপি সাইমুর সরওয়ার কমল আমাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন। হাসপাতালে এনেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীও আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। হাসপাতালে খাবার সমস্যা ছিলো সেটার সমাধান হয়েছে। দেশবাসির কাছে ভাইয়ের সুস্থতা চেয়ে দোয়া চান ইলিয়াস।
এক প্রশ্নের উত্তরে ইলিয়াছ বিশেষজ্ঞ চিকৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, হরমোন ও থায়রয়েড সমস্যার কারণে জিন্নাত আলী’র শরীর অস্বাভাবিকভাবে লম্বা হয়ে গেছে বলে।
তার পিতার নাম আমির হামজা, মাতার নাম শাহপুরী বেগম। জিন্নাত আলীরা ৩ ভাই ১ বোন। ভাই বোনদের মধ্যে জিন্নাত আলী তৃতীয়। অভাবের সংসারে একমাত্র কর্মক্ষম তার ভাই মো. ইলিয়াস। ১৪ বছর থেকে তার শরীর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি থাকে।
জিন্নাত আলী বলেন, আমি আতপ চালের ভাত খাই যেটা এখানে নেই। তাছাড়া এখানে রান্নার মানও ভালও না।
তবে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়ার কথা শুনে হাসি দেখা গেলো তার মুখে। তবে গ্রিনেস বুকে নাম ওঠানোর চেয়ে নিজের সুস্থতাই বেশি জরুরী বলে জানান তিনি