শুক্রবার, ৫ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২০শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের জোট জয়ী হবে: ১৪ দল

নিউজ ডেস্ক : জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট নেতারা বলেছেন, জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত ও জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি খড়কুটোর মতো জাতীয় ঐক্য ও যুক্তফ্রন্টের কাঁধে ভর করেছে।

‘পলায়নপর’ দুই নেতা ড. কামাল ও বি.চৌধুরী এবং পলাতক তারেক রহমান এক হয়ে আগামী নির্বাচন বানচাল ও দেশের স্বাধীনতা নস্যাতের নতুন চক্রান্তে মেতেছেন। কোনো জোটে কাজ হবে না। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময় আগামী নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের জোটই আবারও বিজয়ী হবে।

শনিবার রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগহর নাট্যমঞ্চে ১৪ দলের কর্মীসমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন। কর্মীসমাবেশ থেকে আগামী অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত সারাদেশের মাঠ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, অক্টোবরের যেকোনো দিন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে ১৪ দল। এর আগে ৯ অক্টোবর রাজশাহী ও ১৩ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশ এবং ১০ অক্টোবর নাটোরে জনসভা করবে ক্ষমতাসীন জোটটি। ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এই কর্মীসমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। বিশেষ করে একই দিন বিএনপির পাল্টা জনসভার ঘোষণা ও পরে প্রশাসনের অনুমতিসাপেক্ষে একদিন পর রোববার সোহওরায়ার্দী উদ্যানে ওই জনসভা আয়োজনের প্রেক্ষাপটে ১৪ দলের সমাবেশকে ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক কৌতুহল ছড়িয়ে পড়েছিল। এই অবস্থায় দুপুর থেকে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে ১৪ দল ও সহযোগী-ভাতৃপ্রতীম এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তির বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী মিছিল ও স্লোগান সহকারে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল ছাড়াও আশপাশের এলাকা জনারণ্যে পরিণত হয়েছিল। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এই কর্মী সমাবেশকে ঘিরে ১৪ দলীয় জোট রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউনও করেছে। বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে এই সমাবেশকে ঘিরে সরকারি ছুটির দিনেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট দেখা দিয়েছিল।

১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ূয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী এমপি, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে সিকদার, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, আবদুর রহমান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাওছার প্রমুখ। ১৪ দলের বাইরের দল ও সংগঠনের মধ্যে কৃষক শ্রমিক পার্টির (কেএসপি) চেয়ারম্যান ফারহা নাজহা হক রিপা ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট আর ড. কামাল-বি. চৌধুরীরা এক হয়েছে ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন বানচাল ও দেশের স্বাধীনতা ধ্বংস করতে। এরা ষড়যন্ত্রের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান। ড. কামাল ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনের আগের দিন পালিয়ে গিয়েছিলেন। নির্বাচন এলেই তিনি পালিয়ে যান, তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আর জিয়া হত্যার সময় সেসময়ের বিএনপি নেতা বি.চৌধুরী কোথায় পালিয়েছিলেন বলে তারেক রহমানের আহাজারির খবর পত্রিকায় এসেছিল। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ও বি. চৌধুরীকে রেললাইন ধরে পালাতে হয়েছিল।

তিনি বলেন, এই দুই পলায়নপর নেতা এবং পলাতক নেতা তারেক রহমান- তিনজনের মধ্যে ঐক্য হয়েছে। তারা নাকি নির্বাচন বানচাল করে গণতন্ত্র রক্ষা করবে! ইনশাল্লাহ সব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচন যথাসময়েই হবে। তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি, এবারও পারবে না।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আগামী নির্বাচন যথাসময়ে এবং শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। এই নির্বাচন নিয়ে যারা চক্রান্ত করবে, তাদের কালো হাত ভেঙে দেওয়া হবে। বিএনপি-জামায়াতকে ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) বলেছে, অক্টোবরে নাকি মাঠে নামবে। ইনশাল্লাহ ওই অক্টোবর তাদের জীবনে আর আসবে না। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলই মাঠ দখলে রাখবে।সমকাল