রাজশাহীতে জুয়া খেলার সংবাদ প্রকাশ করায় জুয়ারিদের হামলা : গুলিতে আহত ১
পাপন সরকার শুভ্র, রাজশাহী : রাজশাহীতে জুয়া খেলার প্রতিবাদ ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জেরে জুয়াড়িদের দুদফা হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ কর্মীদের উপর এ হামলার ঘটনায় জুয়াড়িদের ছুঁড়া গুলিতে একজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। আহতের মধ্যে দুইজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সবুজ (২৪) ও আরিফুর (২৫) নামের দুই জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করে। যাদের মধ্যে একজনের কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন বোয়ালিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ।
আহতরা হলেন, অন্তর (২০), তুষার (৪০) ও লিটন (৩২)। এদের মধ্যে অন্তর গুলিতে আহত হন। তার পেটে গুলি লেগেছে। অন্তর নওগাঁর মান্দা উপজেলার দেলুয়াবাড়ি গ্রামের গোলাম রাব্বানীর ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে রাজশাহীর রাণীবাজার অলোকার মোড় এলাকায় জুয়াড়িরা স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক উপচারের সাংবাদিক নুর ইসলাম মিলনের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় তারা মিলনের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পরে মিলনের পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে তারা পালানোর সময় গুলি চালায়। এতে মিলনের ভাতিজা অন্তর গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়াও এ সময় তুষার নামের আরেকজন আহত হন। এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন সবুজসহ দুই জুয়াড়িকে অস্ত্রসহ ধরে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
এর আগে জুয়া নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে বেলা ১১টার দিকে সবুজের ভাই জুয়াড়িদের মূল হোতা তারেক সাংবাদিক মিলনের বাড়িতে গিয়ে গালাগালি করে। এ সময় পুলিশ
ডেকে তারেককে ধরিয়ে দেয় মিলন। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যায়। এর জের ধরে তারেকের ছোট ভাই সবুজ অস্ত্রসহ লোকজনকে নিয়ে গিয়ে মিলনের উপর হামলা চালায়।
এর আগে সকালে জুয়া খেলার প্রতিবাদ ও গণমাধ্যমে খবর সরবরাহ করায় মোয়াজ্জেম হোসেন লিটন নামের এক যুবকের শরীরে গরম পানি ছুড়ে ঝুলসে দেয় তারেক। নগরের সপুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে এ ঘটনায় আহত মোয়াজ্জেম হোসেন লিটনকে (৩২) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তার মুখমন্ডল ঝলসে গেছে।
রাজশাহী স্টেডিয়ামে সুগন্ধা ছাত্রাবাসের দোতলায় মাসুদের চেম্বার নামে পরিচিত এখানে এসি রুমে নিয়মিত জুয়ার আসর বসে। এর ভিডিও চিত্রসহ দৈনিক উপচারের অনলাইন সংস্করণে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর জের ধরে সকালে বাড়ি থেকে সপুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে লিটনকে ডেকে নিয়ে যায় বাবু নামের এক যুবক। এসময় তাকে রাজু, রিপন, বাবু ও তারেক মিলে মারধর করে। এক পর্যায়ে তারেক চায়ের দোকানের গরম পানি নিয়ে তার মুখে ছুড়ে মারে। এতে তার মুখমন্ডল ঝলসে যায়।
বোয়ালিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ বলেন, জুয়া খেলের সংবাদ প্রকাশের জের ধরে তিনটি ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তারেক ও তার ভাই সবুজসহ তিনজনকে আটক করা হয়। এ সময়
সবুজের কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
ওসি বলেন, সবুজের ছুঁড়া গুলিতে অন্তর নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পেটে গুলি লেগেছে বলে জানান ওসি।