যেসব দেশে পতিতাবৃত্তি বৈধ
নেদারল্যান্ডস: নেদারল্যান্ডসে পতিতাবৃত্তি শুধু বৈধ নয়, ইউরোপের এই দ্বীপদেশটির পতিতাপল্লী সত্যিকার অর্থেই বিশ্ববিখ্যাত। ঐ ‘রেডলাইট জোন’ দেখতে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পর্যটক আসে আমস্টারডামে। নেদারল্যান্ডসের মতো ইউরোপের আরেক দেশ বেলজিয়ামেও দেহব্যবসা সম্পূর্ণ বৈধ।
জার্মানি এবং ফ্রান্স: জার্মানি এবং ফ্রান্সেও দেহব্যবসা বৈধ। তবে এ দু’দেশেই যৌনকর্মীদের এই ব্যবসা করতে হয় কঠোর আইন মেনে। জার্মানির কিছু শহরে এখনো যৌনকর্মীরা রাস্তায় নেমে খদ্দের ডাকতে পারেন না, এভাবে খদ্দের সংগ্রহ করা সেসব জায়গায় আইনত দণ্ডনীয়। ফ্রান্সেও ২০১৪ সালে এমন একটা আইন হয়েছে, যা মেনে যথেচ্ছ দেহব্যবসা করা খুব কঠিন।
সুইডেন ও নরওয়ে: ফ্রান্স ২০১৪ সালে যে আইন প্রবর্তন করে, সেটা প্রথম চালু হয়েছিল সুইডেনে, ১৯৯৯ সালে। এ কারণে আইনটি ‘সুইডিশ মডেল’ হিসেবে পরিচিত। এ আইনে যৌনকর্মীদের অধিকার রক্ষা করে দালালদের নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ায়: সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতেও দেহব্যবসা বৈধ। তবে এ দু’টি দেশে ১৯ বচর বয়স না হলে কেউ দেহব্যবসায় আসতে পারেন না। যৌনকর্মীদের যাতে কোনো যৌনরোগ না হয়, কিংবা তাঁদের মাধ্যমে খদ্দেরদের মাধ্যে যাতে এইডস, সিফিলিস বা অন্য কোনো রোগ ছড়াতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে যৌনকর্মীদের নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে হয়। অবশ্য শুধু সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতে নয়, জার্মানিতেও ঐ একই নিয়ম।
গ্রিস এবং তুরস্কে: গ্রিস এবং তুরস্কেও পতিতাবৃত্তি পুরোপুরি বৈধ, তবে দেহ ব্যবসার আইন খুব কঠিন। জার্মানির মতো এই দু’টি দেশেও যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্যবীমা করা বাধ্যতামূলক। এছাড়া যৌনকর্মীরা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান কিনা, তা সবসময় তদারক করা হয়। স্বাস্থ্যকার্ডেই লেখা থাকে স্বাস্থপরীক্ষার সব তথ্য।
ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ড: ব্রিটেন আর আয়ারল্যান্ডের পতিতাপল্লী বা ‘রেড লাইট জোন’-এর প্রায় সব আইনই জার্মানির মতো ছিল। তবে সম্প্রতি ব্রিটেনে কিছু বেসরকারি সংস্থার দাবিতে এতে নতুন কিছু বিষয় যোগ করা হয়েছে। ব্রিটেনের রেড লাইট জোন-এ এখন যেমন ধীরে গাড়ি চালানো নিষেধ।
ইউরোপ: ইউরোপের সব দেশেই পতিতাবৃত্তি আইনত বৈধ। তবে আইন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেশভেদে একটু হলেও অন্যরকম। যেমন স্পেন এবং পর্তুগালেও দেহব্যবসা বৈধ। কিন্তু স্পেনে কাউকে জোর করে বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌনকর্মী বানানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দক্ষিণ অ্যামেরিকা: দক্ষিণ অ্যামেরিকার অধিকাংশ দেশেই যৌনব্যবসা বৈধ। তবে কিছু দেশে মাফিয়া এবং মানবপাচার বড় সমস্যা হয়ে ওঠায়, এই ব্যবসার ওপর কড়াকড়ি এবং তদারকি বেড়েছে। দেহব্যবসাকে মাফিয়া চক্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখতে ব্রাজিল এবং মেক্সিকোতে রয়েছে কঠোর আইন। তারপরও দেশ দু’টিতে মাফিয়া চক্রের আধিপত্য রয়ে গেছে।
নিউজিল্যান্ডে ও অস্ট্রেলিয়া: নিউজিল্যান্ডে যৌনব্যবসা একেবারেই বৈধ। তবে প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়ার অনেক রাজ্যে এই ব্যবসা এখনো অবৈধ। ২০০৩ সালে আইন করে সব প্রাপ্তবয়স্কের জন্য যৌনব্যবসাকে বৈধ করে দেয় নিউজিল্যান্ড।
এশিয়া: ভারতের পতিতাবৃত্তি বৈধ। তারপরও পতিতাবৃত্তি চলে আড়ালে-আবডালে। রাস্তায় নেমে পতিতারা খদ্দের সংগ্রহ করতে পারেন না। খদ্দেররা অর্থের বিনিময়ে যৌনক্ষুধা মেটাতে যায় রাতের আঁধারে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে পতিতালয় কমলেও মাসাজ পার্লার এবং আবাসিক হোটেলে প্রায়ই চলে পুলিশি অভিযান। খদ্দেরসহ পতিতা আটকের খবর আসে তখন। থাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্সে পতিতাবৃত্তি চলে অবাধে। তবে দেশ দুটিতে এই ব্যবসা আইনের চোখে অবৈধ।