ফ্ল্যাট নির্মাণে ঋণ, বছরে সরকারের ভর্তুকি ৯০০ কোটি টাকা
নিউজ ডেস্ক : বাড়ি তৈরি বা ফ্ল্যাট কিনতে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। ১০ শতাংশ সুদহারে এই ঋণ পাওয়া যাবে। তবে এর ৫ শতাংশ বহন করবে সরকার।
সম্প্রতি এ বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ ব্যাংক সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) সঙ্গে অর্থ বিভাগের একটি সমঝোতা স্মারকে সই হয়েছে।
আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই ঋণের জন্য আবেদন করা যাবে। তবে সরকারের যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বেতন-ভাতা তোলার দিক থেকে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে, তারাই ঋণের আবেদন আগে করতে পারবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই খাতে সরকারকে ৪০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। আর প্রতিবছর ভর্তুকি দিতে হবে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে কর্মরত ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ, এর মধ্যে ৭ লাখ চাকরিজীবী পর্যায়ক্রমে এই ঋণে আগ্রহী হবে বলে আশা করছে সরকার।
গত ৩০ জুলাই অর্থ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং-ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ জারি করে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে সরকারি কর্মচারীরা এই ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন। তবে ৫৬ বছর বয়সী কর্মচারীরাও আবেদন করতে পারবেন। চাকরির গ্রেড অনুযায়ী ঋণ দেওয়া হবে ২০ লাখ থেকে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ঋণ পরিশোধের সর্বোচ্চ সময় ২০ বছর।
বর্তমানে ১০ শতাংশ সুদহারে একজন সরকারি কর্মচারী সর্বোচ্চ ঋণ পান এক লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু নতুন নীতিমালা অনুযায়ী উপসচিব থেকে সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা, জাতীয় বেতন স্কেলের পঞ্চম থেকে প্রথম গ্রেডভুক্তরা ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ২০ বছর মেয়াদি এ ঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ কিংবা ফ্ল্যাট ক্রয় করতে পারবেন।
সর্বনিম্ন ১৮ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন ও বিভাগীয় সদরে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পাবেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চাকরিজীবীদের জন্য সরকারের এই উদ্যোগকে যুগান্তকারী বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি বলেন, উন্নয়ন দেশের সর্বত্র হয়েছে। শুধু শহরে উন্নয়ন হয়নি। গ্রামেগঞ্জেও উন্নয়ন হয়েছে। সারাদেশটিতেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। আমার জানা মতে, এক্ষেত্রে আবাসন খাতটা যথেষ্ট পিছিয়ে আছে। এই একটা (ফ্ল্যাট নির্মাণে স্বল্প সুদে ঋণ) উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। এটা একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ।
“কারণ এখানে শুধু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ না, সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবে।”
অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলছেন, ঋণের বিপরীতে সরকারি কর্মচারীদের সুদ দিতে হবে ৫ শতাংশ। প্রচলিত বাজার দরে সুদের হার যা-ই হোক না, ৫ শতাংশের বাইরের অংশটুকু রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বহন করা হবে। সব সরকারি কর্মচারীকে এ ঋণের আওতায় আনতে দুই বছর সময় লেগে যেতে পারে। আরটিভি অনলাইন