স্বামীর হাতে নিপীড়নের বর্ণনা দিলেন এই নারীরা
নিজেদের সঙ্গীর হাতে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ভ্যালেরি, রাচেল, ন্যান্সি এবং ভিক্টোরিয়া। ২০১৭ সালে তাদের মতো আরো ১৯ লাখ নারী-পুরুষ কেবল যুক্তরাজ্যেই নিজেদের পরিবারের লোকজনের কাছে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
তারা শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন নিজেদেরই সঙ্গীর হাতে, ভাইবোনের হাতে, কিংবা পিতামাতা আবার কখনো সন্তানের হাতে।
চারজনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সেখানে ভ্যালেরির উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, প্রতিদিন ভোর ৫টায় ঘুম থেকে জাগেন তিনি। সঙ্গী ঘুম থেকে ওঠার আগেই সবকিছু ঠিকঠাক করে দেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, দুই বার বিয়ে হয়েছে। প্রথম স্বামী তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইতো। এমনকি কখনো কখনো নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতো। মারধর করতেও বাদ রাখতো না।
স্বামীর শার্ট ইস্ত্রি করে দেওয়ার সময় সামান্য একটু জায়গা পুড়ে যাওয়ায় তাকে সেই ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দ্বিতীয় স্বামী যে পরিমাণ নির্যাতন করেছেন তা বলে শেষ করা যাবে না।
রাচেল বলেন, তিনি ঠিক কেমন আছেন, এটা হয়তো কেউ জানেই না। কারণ, কেউ কখনো সেভাবে তার কাছে জানতেই চায়নি।
তিনি আরো বলেন, আমি অনেকটা নিষ্প্রাণ কেউ। প্রতিরাতে আমি সোফায় বসে থাকি, স্বামীর ভোগের বস্তু হওয়ার জন্য। অথচ সেই সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। আমি তাকে না বলতে পারি না। নিথর দেহে কেবল সবকিছু সহ্য করে যাই। দিনের পর দিন এভাবেই পার হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সবকিছুই আমার স্বামীর নিয়ন্ত্রণে। এমনকি আমি যে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে চাই, সেটাই যেতে পারি না। হয়তো, আমি মানসিকভাবেও তার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ১৭ বছর পেরিয়ে এসে, আমার কেবল নিজেকে নির্যাতিত বলে মনে হয়।
ন্যান্সি বলেন, শুরুর দিকে মনে হতো, সে আমার সবসময় খোঁজ নিচ্ছে; এটা তো ভালো। কিন্তু আমি যখন গর্ভবতী হলাম, সেই সময় বুঝতে পারি, সে আমার খোঁজ নয়, বরং আমাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে এতোদিন।
তিনি আরো বলেন, এখনো আমি নিজের থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আমি যে কী করতে যাচ্ছি সেটাই আমি জানতে পারি না।
তার পরেও সে আমাকে আঘাত করেছে, চড় মেরেছে, অপমান করেছে এবং সর্বোপরি মানসিকভাবে শাস্তি দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একবার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সেটা সে দেখে ফেলে। তখন ভয়ে পাবলিক টয়লেটে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেখান থেকে কিছুক্ষণ পরে বাসায় ফিরে যায়।