শুক্রবার, ১৯শে অক্টোবর, ২০১৮ ইং ৪ঠা কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

রাত ৪টা ১৫মিনিট ফজরের আজান দিচ্ছে পাশ ফিরে উঠতে যাবো, তখনই খেয়াল করলাম আমার মত একজন শুয়ে আছে…..

রাত ৪টা ১৫ মিনিট…
মুয়াজ্জিন মাইকে ফজরের আজান দিচ্ছে
পাশ ফিরে উঠতে যাবো, তখনই খেলাম বড় ধরনের একটা ধাক্কা..!
আবছা আলোতে দেখলাম আমার মত দেখতে পাশে একজন শুয়ে আছে।
এইটা আবার কে..? ভয়ে ভয়ে তাকে নাড়া দিলাম, দেখলাম অচেতন।
কোনো কথা বলছে না,
শরীর ঠান্ডা।কিছুক্ষণ পরেই মনে হলো ভদ্রলোক মারা গেছেন। চিন্তা করলাম এই লাশটা এখানে কেন..? আবার দেখতে পুরোপুরি আমার মত..!
স্বপ্ন দেখছিনা তো..? না.. সত্যিই তো…অনেকক্ষণ চিৎকার করে সবাইকে ডাকার চেষ্টা করলাম।
কিন্তু এ কি! কেউই আসছেনা..একটু পর দেখলাম বোন রুমের লাইট জালালো এবং ওই লাশটার কাছে এসে বললো, “ভাই ফজরের আজান হয়ে গেছে আমিতো পুরোই অবাক, এইসব হচ্ছেটা কি..? ওর কাছে গিয়ে বললাম, “অই.. তোর কি মাথা খারাপ হইসে? লাশটা এই রুমে আসলো কিভাবে? এইটা কার লাশ?”দেখলাম, সে আমার কথায় কোন কর্ণপাতই করলো না।
সেও লাশটা ধরে অবাক হলো এবং চিৎকার করে উঠলো..মুহুর্তেই পাশের রুম থেকে আম্মু-আব্বু এসে স্তব্ধ। ধপ করে খাটে বসে লাশটাকে ধরে ঝাঁকাতে লাগলো এবং চিৎকার করতে লাগলো, “বাবা, কি হইসে তোর..? কথা বলছিস না কেনো..? কথা বল…।” আম্মু ব্যাপারটা বোঝার সাথে সাথেই বেহুঁশ।
চিৎকারের আওয়াজে চাচা-চাচিরা, ভাবি, কাজিনরা সবাই জড়ো হলো। লাশটা দেখেই সবাই ইন্নালিল্লাহ পড়তে লাগলো। আশেপাশে কান্নার রোল পরে গেছে।মুয়াজ্জিন যখন আমার বাবার নাম নিয়ে বললো অমুকের ছেলে অমুক ইন্তেকাল করছে, তখন মনে হলো হাই ভোল্টেজের শক খেলাম।
সবাই আমাকে বাদ দিয়ে লাশটা নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পরলো। কাউকেই বুঝাতে পারলাম না যে আমি বেঁচে আছি। মনে হলো সবাই পাগল হয়ে গেছে। এক কাজিনকে ক্ষেপে গিয়ে একটা ধাক্কাও মেরেছিলাম, সে দেখলাম বিন্দু পরিমাণ প্রতিবাদ করেনি। ফজরের পর লাশটা গোসল দেয়ার ব্যবস্থা করা হলো। মুয়াজ্জিন সাহেব আরেক জনকে নিয়ে আসলেন গোসল দিতে। দুইজন বলাবলি করতে লাগলেন, “আরে.. মৃত্যু কার কখন আসে বলা যায় না। এইরকম তাগরা মানুষ মারা যাইবো কে ভাবসে, কাল বিকালেই তো আমাদের সাথে হাসিখুশী ভাবে কত কথা বললো।” আমি লাশটার পাশেই ছিলাম, দাঁড়িয়ে উনাদের কথা শুনছিলাম।গোসল দেয়ার পর কাফনের কাপড় পরিয়ে খাটাইয়ের ওপর লাশটা রাখা হয়েছে। লাশ ঢাকবার জন্য মসজিদ থেকে কালো রঙের কাপড়টা আনা হলো। সবাইকে শেষবারের মতো লাশ দেখার সুযোগ করে দেয়া হলো।এখনো আমার কাছে সবকিছু পরিষ্কার না, কিছুই বুঝতে পারছি না। বাসার আশেপাশে প্রচুর মানুষের ভিড়। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবাই এসেছে লাশটাকে দেখতে। কত পরিচিত মানুষ কান্নাকাটি করছে। কিন্তু কাউকেই বুঝাতে পারলাম না, আমি মারা যাই নি, আমি বেঁচে আছি, এটা অন্য কারো লাশ। কেউ আমার কথা শুনতেই পারছে না। যোহরের পর জানাজা। আযান হয়ে গেছে। লাশ নিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে আম্মু আর বোন লাশ ধরে সে কি কান্না। আত্মীয়রাও কেঁদে উঠলো। আহা! হৃদয়স্পর্শী এক দৃশ্য। অবাক ব্যাপার..। কিন্তু আজ কিছুই মনে হচ্ছে না, আমি পুরোপুরি সুস্থ, আর শরীরটাও তুলার মত হালকা মনে হচ্ছে। যাই হোক.. লাশ চৌরাস্তা ঈদগাহ মাঠে জানাজার জন্য নিয়ে যাওয়া হলো। ঈদগাহ মাঠ লোকে লোকারণ্য, একটুও জায়গা খালি ছিলো না। বাবা হালকা একটু কথা বলার পর ইমাম সাহেব একটু বয়ান করে জানাজা পড়ালেন।জানাজা শেষে লাশ কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে গিয়ে দেখলাম দাদুর কবরের পাশেই একটা কবর খনন করা হয়েছে। ঠিকঠাক ভাবে লাশ দাফন করে সবাই আত্মার মাগফিরাতের জন্য দু’আ পড়তে লাগলো। মুনাজাত শেষে সবাই যার যার মত চলে গেলো কিন্তু বাবা বসে থাকলো। তাকেও জোর করে নিয়ে যাওয়া হলো।অবশেষে আমার কাছে সব পরিষ্কার হতে লাগলো যে আসলেই আমি আর এই জগতে নেই।
আহ! যদি আরেকটা সুযোগ পেতাম, তাহলে কত যে আমল করতাম, সব সময় মসজিদ মাদ্রাসাতেই পরে থাকতাম… কিন্তু তাতো আর হবার নয়।একটু পর দেখি আমি ওই বডিটার মধ্যে যাচ্ছি। আমি পুরোপুরি নিজেকে ফিরে পেলাম। এ কি..! চারদিকে অন্ধকার আর অন্ধকার। অনেক ভয়ে আছি। হয়তো একটু পরই মুনকির-নাকির আসবে, বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাস করবে, না পারলেই শুরু হবে আযাব।..শুয়ে শুয়ে অন্ধকার ঘরে পুরো ঘটনাটা চিন্তা করলাম, ভাবলাম এগুলা হচ্ছেই, একদিন তো হবেই। হঠাৎ শোয়া থেকে উঠে বসলাম, শরীরের প্রতিটা লোম দাঁড়িয়ে গেছে। এই সপ্ন আমাকে বদলে দিতে সাহায্য করবে।।
প্রতিটা মানুষের এভাবেই প্রতিদিন মৃত্যুকে স্মরণ করা উচিৎ। তাহলে
আশা করা যায় গুনাহ থেকে মনকে বিরত রাখা যাবে এবং কবরের প্রস্তুতি নেয়া যাবে..
আল্লাহ আমাদের সবাইকে
হেদায়েত দান করুন।

এ জাতীয় আরও খবর

তিনি আমার কোন যত্ন না নিয়ে বলেছেন, না খেয়ে অসুখ বাঁধাবে আর আমার যত্ন আশা করবে তা হবেনা

“স্মৃতিতে অম্লান একটি ধূসর দিন” একটি শিক্ষানীয় ঘটনা সবাই একবার হলেও পড়ে দেখুন

অবিশ্বাস্য! বিমানবন্দরে যেভাবে ব্যাগ কেটে মালামাল চুরি করা হয়! (ভিডিও)

২০২০ সালের মধ্যেই কৃত্রিম চাঁদের আলোয় আলোকিত হবে চীন!

বজ্রপাতে ভয় পায় পাত্র! অতঃপর বিয়ে বাড়িতে যা ঘটল

একটি শিক্ষানীয় ঘটনা… সবাই একবার হলেও পড়ুন…

মানবদেহ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ যা সবার জেনে রাখা উচিত, সবাই বেশি বেশি শেয়ার করুন

ফাঁসির আগে রেহানার হৃদয় কাঁপানো চিঠি ! চিঠিতে যা লিখা ছিল, আপনি পড়লে আপনিও অবাক হবেন

এক পাল পিঁপড়া নাকের ও কানের ফুটো দিয়ে সারিবেঁধে ঢুকছে, একদল ব্রেনের মধ্যে ঢুকে মগজ কাটতে লাগল…..