নীলফামারীকে হতাশ করে লঙ্কানদের কাছে হার বাংলাদেশের
৯০-তে না হলে কী আর ৯-এ হয়? হয়নি। রেফারি মিজানুর রহমান ৬ মিনিটের ইনজুরি সময়ের সঙ্গে আরো ৩ মিনিট যোগ করে ম্যাচ শেষ করলেন। কিন্তু স্কোর ১০ মিনিটের সেই ১-০ই থাকলো। ঘরের মাঠে, প্রায় ২০/২২ হাজার সমর্থকের সামনে ব্যর্থই হলেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ৮ বছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়লো লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। বুধবার নীলফামারীর শেখ কামাল স্টেডিয়ামের অভিষেক আন্তর্জাতিক ম্যাচে পাকির আলীর শ্রীলংকা হারিয়ে দিলো বাংলাদেশকে।
এশিয়ান গেমসে অনূর্ধ্ব-২৩ দল কাতারকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শেষ ষোলোতে ওঠার পর ফুটবল নিয়ে চারিদিকে একটা হইচই পড়েছিল। কিন্তু সাফ সুজুকি কাপের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচটি হারায় প্রত্যাশার সেই ফোলা বেলুন একটু হলেও চুপসে গেলো। কারণ, এশিয়ান গেমসের তরুণদের বিশ্রাম দিয়ে এ ম্যাচের মাধ্যমে সিনিয়রদের পরখ করেছেন ইংলিশ কোচ জেমি ডে। ম্যাচের পর কোচ নিশ্চয় ধাঁধায় পড়লেন-এই সিনিয়রদের দিয়ে কী করবেন তিনি?
মামুনুল ইসলাম, ওয়ালি ফয়সাল, ফয়সাল মাহমুদ, সাখাওয়াত রনি, শহিদুল আলম সোহেলদের পরীক্ষা নিয়েছেন কোচ। কিন্তু তারা কী পেরেছেন কোচের পরীক্ষায় পাস করতে? মামুনুল ইসলামকে কোচ হয়তো কলমের এক খোঁচায় ছেটে ফেলবেন না। তাকে নিয়ে ভাববেন। ৭৮ মিনিট মাঠে ছিলেন অধিনায়কত্বের আর্মব্যান্ড পড়ে। খারাপ খেলেননি। তবে গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল ও স্ট্রাইকার সাখাওয়াত হোসেন রনি কোচের দৃষ্টি কাড়তেই পারেননি।
১০ মিনিটে শ্রীলঙ্কার মোহাম্মদ ফজল প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে আচমকা শটে যে গোল করেছেন, সে গোলের জন্য পুরো দায় বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষকের। আর পরে বাংলাদেশ যে ম্যাচে ফিরতে পারেননি তার দায় স্ট্রাইকার সাখাওয়াত রনির।
মাঝমাঠে খেলাটা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। আক্রমণও হয়েছে প্রচুর। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বক্সের আশপাশে গিয়েই তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা হতাশ করেছেন নীলফামারীর দর্শকদের। মাঝমাঠ ও আক্রমণভাগের সেতুবন্ধনটা মোটেও ভালো হয়নি। এ ম্যাচের পর কোচ জেমির দুশ্চিন্তা বাড়লো। সাফে কাকে দিয়ে গোল করাবেন তিনি?
ম্যাচে ৬ জন খেলোয়াড় পরিবর্তন করেছেন জেমি ডে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। অপর স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন কিংবা জুয়েল রানারা নেমেও কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি শ্রীলঙ্কার গোলরক্ষককে। একমাত্র জাফর ইকবাল বাম দিক দিয়ে ঢুকে কয়েকটি নিঁখুত ক্রস ফেললেও তা গোল আদায়ের মতো ছিল না। দর্শকদের জন্য হতাশার এটাই যে, নিজেদের খেলোয়াড়দের গোল দেখতে পাননি। দেখবেন কি করে? গোল হওয়ার মতো কোনো আক্রমণও যে করতে পারেননি জেমির শিষ্যরা। একটা ভালো শটও ছিল না লঙ্কান পোস্টে।
২০১০ সালে ঘরের মাঠে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে বাংলাদেশকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল শ্রীলংকা। তার পর যতবারই বাংলাদেশের সঙ্গে খেলেছে তারা, হেরেছে; না হয় বড়জোড় ড্র করেছে। দীর্ঘ ৮ বছর পর আবার বাংলাদেশকে হারিয়ে সাফের আগে স্বাগতিকদের একটা ধাক্কাই দিলো লঙ্কানরা।