কঠিন ৯টি রোগ থেকে মুক্তি মিলবে পেঁপে পাতার রস খেলে!
ডেস্ক রিপোর্ট।। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপের ভেতরে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান পেটের রোগের প্রকোপ কমানোর পাশাপাশি ওজন কমাতে, ত্বককে সুন্দর করে তুলতে এবং হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে সংক্রমণের প্রকোপ কমাতে, ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতেও পেঁপের কোনও বিকল্প আছে বলে তো মনে হয় না। তবে আজকের এই প্রবন্ধ পেঁপেকে নিয়ে নয়। বরং পেঁপে পাতা কীভাবে আমাদের শরীরের উপকারে লাগতে পারে সেই বিষয়টির উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করা হবে। বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, পেঁপে পাতার ভেতরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এবং মিনারেল। সেই সঙ্গে রয়েছে উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এনজাইম এবং ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস, যা নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন ধরুন-
শরীরকে বিষমুক্ত করে : একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপে পাতাতে উপস্থিত কার্পেইন নামক একটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর দেহের ইতি-উতি উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের যেমন শরীর থেকে বের করে দেয়, তেমনি মাইক্রোঅর্গেনিজমদেরও মেরে ফেলে। ফলে একাধিক রোগ দূরে থাকতে বাধ্য হয়।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় : পেঁপে পাতায় উপস্থিত গ্লটেমেট অ্যাসিড, গ্রাইসিন, ভেলিন, ট্রাইপটোফেন এবং হিস্টিডিনের মতো অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে প্রবেশ করে এমন খেল দেখায় যে ত্বকের বয়স কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। তাই অল্প সময়ে যদি অপূর্ব সুন্দরি হয়ে উঠতে চান, তাহলে নিয়মিত পেঁপে পাতার রস খেতে ভুলবেন না যেন!
পিরিয়োডের সময়কার কষ্ট দূর করে : এবার থেকে মাসের এই বিশেষ কয়েকটা দিনে নিয়ম করে পেঁপে পাতার রস খাওয়া শুরু করুন। দেখেন ক্র্যাম্প এবং যন্ত্রণা দুইই কমবে। আসলে পেঁপে পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ একদিকে যেমন দেহের ভেতরে প্রদাহ কমিয়ে যন্ত্রণার প্রকোপ কমায়, তেমনি অন্যদিকে হরমোনাল ইমব্যালেন্স দূর করে অন্যান্য নানাবিধ সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ডেঙ্গুকে ধারে কাছেও ঘেঁষতে দেয় না : একাধিক গবেষণাতে এ কথা প্রমাণিত হয়ে গেছে, নিয়মিত পেতে পাঁতার রস খেলে শরীরে প্লেটলেট কাউন্ট কমে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাও খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আর একবার ইউমিন সিস্টেম শক্তিশালী হয়ে উঠলে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাই একেবারে থাকে না বললেই চলে। প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাসে যে হারে কলকাতাসহ সমগ্র রাজ্য়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে, তাতে এই প্রকৃতিক উপাদানটিকে কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তা যে আরও বেড়েছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ক্যান্সার মতো রোগকে দূরে রাখে : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল এমন একটি উপাদান, যা শরীরে থেকে টক্সিক উপাদানদের বের করে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমায়। আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় মজুত রয়েছে পেঁপে পাতার ভেতরে। তাই নিয়মিত যদি এর রস খেতে পারেন, তাহলে ক্যান্সার রোগকে কোনও দুশ্চিন্তাই থাকে না। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে পেঁপে পাতায় উপস্থিত বেশ কিছু এনজাইম লিভার, লং, প্যানক্রিয়াটিক এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ম্যালেরিয়া রোগকে প্রতিরোধ করে : পেঁপে পাতার ভেতরে মজুত অ্যাসেটোজেনিন নামক অ্যান্টি-ম্যালেরিয়াল প্রপাটিজ শরীরে প্রবেশ করার পর ভেতর থেকে শরীরকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ম্যালেরিয়া মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। তাই মশার উপদ্রোপ থেকে বাঁচতে পেঁপে পাতার সঙ্গ ছাড়লে চলবে না কিন্তু!
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে : পেঁপে পাতায় থাকা প্রোটিস এবং অ্যামিলেস নামক দুটি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে হজম ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে পাকস্থলি এবং কোলনের প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত পেঁপে পাতার রস পান করেল এইচ পাইলোরি ব্যাকটেরিয়ারা মারা পরে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পেপটিক আলসারের মতো রোগ আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে : রক্তে বাড়তে থাকা সুগারের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে আজ থেকেই নিয়মিত পেঁপে পাতা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ এর মধ্যে থাকা বেশ কিছু উপকারি উপাদান ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেহে শর্করার মাত্রা বাড়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না।
লিভারের ক্ষমতা বাড়ে : বেশ কিছু কেস স্টাডি করে দেখা গেছে, পেঁপে পাতায় উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান লিভারের ভেতরে থাকা টক্সিক উপাদানদের শরীরে থেকে বের করে দেয়। সেই সঙ্গে লিভারের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, জন্ডিস রোগকে দূরে রাখতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
পেঁপে পাতার রসের সাইড এফেক্ট : বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, পেঁপে পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যার প্রভাবে অনেকেরই অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হতে পারে, বিশেষত গর্ভবতী মহিলাদের। তাই তো পেঁপে পাতার রস খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে এই বিষয়টি মাথায় রাখথে ভুলবেন না যেন! উৎস : বোল্ডস্কাই