নারায়ণগঞ্জে পুলিশ-যুবলীগ সংঘর্ষ, ৫ ডিবি কর্মকর্তাসহ আহত ১০
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর বরফকল খেয়াঘাট সংলগ্ন চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসী পার্কের সামনে এলাকায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সঙ্গে যুবলীগ নেতাকর্মীদের ব্যপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৬ আগষ্ট) রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ডিবি’র এসআই মিজান ও এসআই সায়েমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে যুবলীগ নেতা জালাল, ছেলে আলামিন ও রবিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত ডিবি’র পরিদর্শক মাসুদ, এএসআই আমিনুল ও এএসআই বকুলকে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বাকীদের নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ঘটনার পর খানপুর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী। ওই ঘটনাটি তদন্তে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খানপুর বরফকল খেয়াঘাট সংলগ্ন চৌরঙ্গী ফ্যান্টাসী পার্কের সামনে মাইলাইফ কেয়ার ফাস্টফুড নামের একটি দোকানে পরিবার পরিজন নিয়ে খেতে যান এএসআই আমিনুল ও এএসআই বকুল। এসময় মিল্কসেইক খাওয়ার পরে ওই মিল্কসেইকটি ভাল হয়নি দাবি করে বিল দিতে রাজী হয়নি এএসআই আমিনুল ও এএসআই বকুল। এসময় তাদের সঙ্গে ফাস্টফুডটির মালিক ১১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহসভাপতি জালালের পুত্র আলামিন ও রবিন বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। বাকবিতন্ডার এসময় তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় যুবলীগ নেতা জালাল ও তার স্ত্রী রিনা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে আসলে ডিবির দুই এএসআই মিলে তাদেরকে মারধর করে। এতে করে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই দুই এএসআইকেও বেধড়ক পিটুনী দেয়। এসময় খবর পেয়ে ডিবি’র পরিদর্শক মাসুদ, এসআই মিজান ও এসআই সায়েম ঘটনাস্থলে আসলে লাঠিসোটা দিয়ে তাদেরকেও বেধড়ক পিটুনী দেয়া হয়। পরে অতিরিক্ত ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। এসময় যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রায় ২০ মিনিট নারায়ণগঞ্জ-সিদ্ধিরগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে যুবলীগ নেতা জালাল, তার স্ত্রী রিনা, দুই পুত্র আলামিন ও রবিনকে খানপুরস্থ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়া হয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক খানপুরস্থ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সামনে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী। খবর পেয়ে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম হাসপাতালে গিয়ে ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম জানান, ওই ঘটনাটি তদন্তের জন্য তাকে প্রধান করে একটি ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনায় যদি ডিবি পুলিশের কোন কর্মকর্তা দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র: পূর্বপশ্চিম