শুক্রবার, ৫ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২০শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ক্লিনিক মালিক হাত-পা বেঁধে অপারেশন করলেন প্রসূতির, অতঃপর…

নিউজ ডেস্ক।। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ক্লিনিক মালিকের অপারেশনে এক প্রসূতি মৃত্যু হয়েছে বলে অফিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা সদরের সার্জিক্যাল ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
গতকালই ওই গৃহবধূর ভাই আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে ক্লিনিকের মালিক গ্রাম ডা. নুরুলহুদা টুকু ও তার দুই ছেলে মো. মেহেরাব হোসেন ও মো. নুরুল আদিকে বিরুদ্ধে টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে পুলিশ মো. মেহেরাব হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।

নিহত গৃহবধূর নাম রেক্সনা রেগম (৩০)। তিনি উপজেলার কেরালকোপা গ্রামের মো. আজিজুল মোল্লার স্ত্রী।
মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম জানান, তার অন্তঃসত্ত্বা বোনেকে গতকাল দুপুর ২টায় টুঙ্গিপাড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। রাত ৯ টার দিকে ক্লিনিক মালিক টুকু তার দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তার বোনকে ক্লিনিকের ওটিতে নিয়ে যায়। তখন ক্লিনিকে কোন চিকিৎসক ছিলেন না। পরে তার বোনকে অজ্ঞান করে পর হাত-পা বাধা হয়। অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে সে অপরেশন টেবিলেই মারা যায়।

তিনি আরও জানান, গ্রাম ডাক্তার টুকুর ক্লিনিকে এর আগে আরও চারজন নারী সিজারিয়ান অপারেশন করাতে এসে মারা যান। সেগুলো টাকা দিয়ে টুকু মিটিয়ে ফেলেছে। টুকু ও তার দু’ছেলের সার্জারিতে কোনো প্রশিক্ষণ নেই। বারার কাছ থেকে কাজ শিখে দু’ ছেলে বাবাকে সিজারিয়ান অপারেশন সাহায্য করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ক্লিনিক মালিক গ্রাম ডাক্তার নুরুলহুদা টুকু বলেন, ‘অপারেশন করার সময় আমি ও আমার প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দুই ছেলের সঙ্গে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সাধন বসু ছিলেন। অপারেশেনের শেষ পর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে সাধন বসু চলে যান বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে প্রসূতির হাত-পা বাধার কথা স্বীকার করে টুকু বলেন, ‘সিজারিয়ান অপারেশনের সময় রোগী নড়াচড়া করতে পারে, এ আশঙ্কায় হাত-পা বাধা হয়েছে।’ তবে রোগী মৃত্যুর কারণ তিনি জানাতে পারেননি।’

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ‘ডা. সাধন বসু নামে কোন চিকিৎসক গোপালগঞ্জ জেলায় নেই। ক্লিনিকের মালিক নিজেকে রক্ষায় সজানো ও মনগড়া চিকিৎসকরে নাম বলেছেন।’
এ বিষয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে.এম এনামূল কবীর বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত ক্লিনিক মালিকের ছেলে মো. মেহেরাব হোসেন পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে তারা তিনজন মিলে এ অপারেশন করেছে। এ বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা নেই। আর এ অপারেশন করতে গিয়েই ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে ওই ক্লিনিকে চারজন প্রসূতির মৃত্যুর হয়েছে বলে স্থানীয়রা আমাদের জানিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ক্লিনিকের মালিক টুকু ও তার ছেলে অদিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।