‘আমি মুসলিম মায়ের অবৈধ সন্তান’, বিস্ফোরক মহেশ ভাট
মা, বাবা, ভাই বোন, স্বামী, স্ত্রী এই সব সম্পর্কগুলিই সম্পর্কের টানা পোড়েনে মাঝে মধ্যেই যে পাল্টে যায়। আর তখনই আমাদের অনেক কাছের সম্পর্কগুলিও আমাদের অচেনা লাগে। সম্প্রতি `হিন্দুস্থান টাইম`স কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকরে নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে কিছুটা খোলামেলা কথা বলেছেন বলিউডের নামজাদা পরিচালক মহেশ ভাট। সাক্ষাৎকারে মহেশ ভাটকে তাঁর মা ও বাবা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি নিজেকে একজন মুসলিম মায়ের অবৈধ সন্তান বলে ব্যাখ্যা করেন।
মহেশ ভাট বলেন, ‘‘আমি ঠিক জানি না বাবা বলতে ঠিক কী বোঝায়। বাস্তবে আমার জীবনে বাবার কোনও অস্বিত্ব নেই। আমার মনে আমার বাবার কোনও স্মৃতিও নেই। তাই একজন বাবার ঠিক কেমন হওয়া উচিত তা আমি জানি না। আমার মা শিরিন মহম্মদ আলির আমি অবৈধ সন্তান।’’
প্রসঙ্গত মহেশ ভাটের মা শিরিন মহম্মদ আলি ছিলেন একজন গুজরাতি অভিনেত্রী। আর মহেশ ভাটের বাবার নাম নানাভাই ভাট। যিনি গুজরাতি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেন। তিনিও একজন খ্যাতনামা চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন। প্রসঙ্গত, মহেশ ভাট নামটিও তিনি তাঁর বাবা নানাভাই ভাটের সূত্রেই পেয়েছিলেন। এবিষয়ে মহেশ ভাট বলেন, “আমি একবার আমার মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে আামার নামের অর্থ কী? তখন মার মা আমায় বলেছিলেন, যে এর অর্থ আমি তোমার বাবাকে জিজ্ঞাসা করে বলব। আমি অপেক্ষা করেছিলাম, যতক্ষণ না পর্যন্ত উনি আমায় আমার নামের অর্থ জেনে বলেছিলেন। মহেশ অর্থাৎ মহা+ঈশ। এর অর্থ ঈশ্বরের ঈশ্বর। যদিও শৈশবে আমি সেই ক্রুদ্ধ ঈশ্বরকে পছন্দ করতাম না, যিনি তাঁর সন্তানের মাথা কেটে নিয়েছিলেন। তার চেয়ে আমি গণেশকে বেশ পছন্দ করতাম। আমি ছেলেবেলায় ছোট্ট গণেশের মূর্তি বালিশের তলায় রেখে ঘুমোতাম। তিনি আমার ভীষণ প্রিয় ছিলেন। গণেশের বাবার মতোই আমার কাছে আমার বাবাও আগন্তুক ছিলেন।’’
এখানেই শেষ নয়, সাক্ষাৎকারে কিছুটা আক্ষেপের সুরে মহেশ ভাট বলেন, ‘‘আমি আমার ময়ের স্বপ্নের সন্তান হতে পারিনি। আমি চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু পারিনি। আমি স্কুলে পড়াশোনায় ভীষণ ভালো ছিলাম না (মহেশ ভাট ডনবস্কো স্কুলে পড়তেন) আমি একটা ভালো চাকরি জোটাতে পারিনি। আমি যখনই কিছু চেষ্টা করেছি, সেটাই ভুল করে, ভয়ানক করে ফেলেছি। যখনই আমি আমার নিজের মুখোমুখি হয়েছি, আমার আত্মপরিচয় সম্পর্কে জেনেছি, তখনই হোঁচট খেয়েছি। তবে আমি আমার সমস্ত গোপন বিষয় বলতে সক্ষম হয়েছি। যখনই আমি আসলে কে তা জেনে যখন বিব্রত হয়েছি, সেটা নিয়েই বলেছি। আমার বাবা থেকে শুরু করে আমার জীবনের সব অস্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়েই আমি মুখ খুলতে পেরেছি। তবে শেষপর্যন্ত আমি আমার বাবার সঙ্গে সমঝোতা করে নিয়েছিলাম। শান্ত হয়েছিলাম। করণ আমার সমস্ত অযোগ্যতার মধ্যেও আমি তাঁকেই পেয়েছি। আসলে মানুষ যত বড় হয় তখন তাঁর কাছে অনেক কিছুই সহনীয় হয়ে ওঠে।’’
প্রসঙ্গ মহেশ ভাটেরও ৪ সন্তান রয়েছে। তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী কিরণ ও মহেশ ভাটের দুই সন্তান, পূজা ভাট ও রাহুল ভাট। পরবর্তীকালে সোনি রাজদানকে বিয়ে করেন মহেশ ভাট। তাঁদেরও দুই সন্তান রয়েছে আলিয়া ভাট ও শাহিন ভাট। জিনিউজ