মিরপুরে গুপ্তধনের খোঁজ স্থগিত, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তথ্যদাতাকে
রাজধানীর মিরপুরে বাড়ির নিচে গুপ্তধন উদ্ধার অভিযান আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু করা হবে।
রোববার দুপুরে বাড়িটি পরিদর্শন শেষে ঢাকা জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ সাংবাদিকদের বলেন, বাড়িটি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি নিশ্চিত করলে আবারো উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে। সে পর্যন্ত বাড়িটি পুলিশ হেফাজতে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, বাড়িটি অনেক পুরোনো ও ঝুকিপূর্ণ। ঘরের মধ্যে খননের ফলে ভেঙ্গে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। ইতোমধ্যেই চার ফিট খনন করা হয়েছে। জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদফতরের একজন ইঞ্জিনিয়ার খনন করা স্থান পরিদর্শন করেছেন। তার পরামর্শেই উদ্ধার কাজ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে দ্রুতই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর কেন খনন কাজ শুরু করা হলো না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বাড়ির নিচে গুপ্তধন রয়েছে -এমন সংবাদ এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ায় সকলের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছিল। এ কারণে পুলিশের সহায়তায় প্রাথমিকভাবে গুপ্তধন উদ্ধারে কাজ শুরু করা হয়। যেহেতু চার ফিট মাটি খনন করার পরও কিছু পাওয়ায় যায়নি, সে কারণে এখন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ১৬ নম্বর সড়কে সি ব্লকের ১৬ নম্বর বাড়িতে খনন কাজ শুরু হয়। টানা ৬ ঘণ্টা খনন কাজ চললেও গুপ্তধনের কোনো সন্ধান না পেয়ে ঢাকা জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুজ্জামান রোববার পর্যন্ত মত খনন কাজ স্থগিত করেন। পরে রোববার দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে গুপ্তধন উদ্ধার কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে বৃষ্টির কারণে দুপুর দেড়টার দিকে দায়িত্বরত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং এসব তথ্য জানান।
এদিকে ওই বাড়িতে গুপ্তধন থাকার সন্ধানদাতা টেকনাফ থেকে আসা তৈয়ব নামের ওই ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। থানায় জিডি করার পর থেকেই তিনি ‘গায়েব’। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে তার মোবাইল নম্বরটিও। তার আসল বাড়ি কোথায় সে সম্পর্কেও কিছুই জানে না পুলিশ। চলমান অভিযানের সময়ে সেই তৈয়বকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।
মিরপুরের ওই বাসায় গুপ্তধন আছে অনেকদিন ধরেই এমন গুঞ্জন ছিল এলাকাবাসীর মধ্যে। এমন খবরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নিরাপত্তার জন্য গত ১৪ জুলাই মিরপুর থানায় একটি জিডি করেন বাড়ির মালিক মনিরুল আলম। এরপরই বাড়িটিতে বসানো হয় পুলিশ পাহারা।
এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ওসি দাদন ফকির বলেন, তৈয়ব নামের ওই ব্যক্তির জিডি করেই চলে গেছেন। এরপর আর তাকে পাওয়া যায়নি। তবে, জিডির কপিতে দেওয়া তার ঠিকানা সঠিক কিনা, সেটা যাচাই করতে টেকনাফ থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
ওই বাড়ির বর্তমান মালিক মনিরুল আলম জানান, তৈয়ব নামের সেই ব্যক্তির সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগই হয়নি। তিনি কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না তিনি।