পানির দরে টিকিট বিক্রি
ব্রাজিলের সাও পাওলো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গের দূরত্ব ১১ হাজার ৫৫৯ কিলোমিটার। ব্রাজিল সেমিফাইনালে উঠলে সেন্ট পিটার্সবার্গের ক্রেসতোভস্কি স্টেডিয়ামে খেলত। জোসে তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন রাশিয়ার এ শহরে। অফিসে ছুটি নিতে হয়েছে। পেশায় আইনজীবী। সঙ্গে আরেকজন পারিবারিক বন্ধুও রয়েছেন। নিয়তির কী খেলা! ব্রাজিল কাজানে বেলজিয়ামের কাছে হেরে ‘হেক্সা’ জয়ের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়েছে। জোসে অন্য দেশের খেলা দেখতে যাবেন না। এজন্য ইয়ামিন নামে এক ভদ্রলোকের কাছে তিনটি টিকিট বিক্রি করে দেন।
একেকটি টিকিটের মূল্য ছিল ২৮০ ডলার। সেগুলো তারা ১৫০ ডলারে বেচে দিয়েছেন। মনে এতটাই কষ্ট যে, টিকিট কাছে রাখতেও খারাপ লাগছে। তারা ইচ্ছে করলে ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে আসতে পারতেন। পরের ম্যাচ দেখে কী লাভ, এ যে ‘পরবাসী যন্ত্রণা’!
নিজ ভূমে পরবাসী বলে একটা কথা বাংলা সাহিত্যে রয়েছে। যেহেতু ব্রাজিল নেই, সেহেতু তারা তো বিশ্বকাপে পরবাসীই! যেমন বাংলাদেশে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে যে পাগলামি হয়, সেটাকে পরবাসী উন্মাদনাও বলা যায়। বাংলাদেশ তো আর ফুটবল বিশ্বকাপে খেলে না।
ফিফা কয়েক ধাপে ও কয়েক স্তরে টিকিট বিক্রি করে। আবার কালোবাজারিদের হাতেও টিকিট গেছে। সেন্ট পিটার্সবার্গে বাঙালি এক ভদ্রলোক ইয়ামিনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিলের বিদায় হয়েছে। সমর্থকরা বেশ হতাশ। তারা অন্য দলের খেলা দেখতে চায় না। আমি সেমিফাইনালের টিকিট আগে কিনতে পারিনি। পরে এক ব্রাজিলিয়ানের কাছ থেকে কিনেছি। উনি অনেক কম মূল্যে টিকিট বিক্রি করেছেন। তারা বলছেন, মন ভেঙে গেছে। আর খেলা দেখবেন না। বরং ওই টাকা দিয়ে শপিং করে আর ঘুরে বেড়িয়ে মনকে হালকা করবেন। ইয়ামিন আরও বলেন, তার চার-পাঁচটি টিকিট দরকার ছিল। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে খেলা দেখবেন। সেমিফাইনাল ম্যাচের টিকিট সংগ্রহ হয়েছে। অনলাইন ছাড়াও কালোবাজারিদের কাছে টিকিট পাওয়া যায়। এসব টিকিট আবার নকল হতে পারে। এজন্য তিনি আর সে ঝুঁকি নেননি।