রবিবার, ২রা জুলাই, ২০১৭ ইং ১৮ই আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

সূর্যাস্তবিহীন দেশগুলোতে কীভাবে রোজা রাখেন মুসলিমরা?

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ২৭, ২০১৭

---

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা ইতিমধ্যে রোজা পালন করতে শুরু করে দিয়েছেন। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র এই মাসটিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার ও ধর্ম নির্দেশিত অন্যান্য অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে সিয়াম সাধনা করেন মুসলিমরা। প্রশ্ন হচ্ছে, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্দিষ্ট কাজ থেকে বিরত থাকার বিষয়টি নির্ভর করে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের ওপর। কিন্তু পৃথিবীর এমন অঞ্চলও আছে, যেখানে সূর্য অস্ত যায় না। অথবা অস্ত গেলেও বোঝার উপায় থাকে না।

বিশেষ করে আর্কটিক অঞ্চলের মুসলিমদের অভিজ্ঞতা আছে এ ব্যাপারে। সেখানে ২৪ ঘণ্টাই মাথার ওপর জ্বলজ্বল করে সূর্য। তাহলে এসব অঞ্চলের মুসলিমরা কীভাবে রোজা রাখে? কোন সময় ধরে তারা সেহরি ও ইফতার খায়?

চলতি বছর বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১৬০ কোটি মুসলিম পবিত্র রমজানে সিয়াম সাধনা করবেন। এর মধ্যে ল্যাপল্যান্ড, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনে এই গ্রীষ্মে এক মুহূর্তের জন্যও সূর্য অস্ত যাবে না। এ নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছে ফিনল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে বসবাসরত একটি বাংলাদেশি পরিবার। সেখানে সূর্য অস্ত যায় মাত্র ৫৫ মিনিটের জন্য।

ফিনল্যান্ডে বসবাসকারী বাংলাদেশি মোহাম্মদ বলেন, ১টা ৩৫ মিনিটে (আমাদের সময় অনুসারে দুপুর) তাদের রোজা শুরু হয় এবং শেষ হয় পরের দিন ১২টা ৪৮ মিনিটে (আমাদের সময় অনুসারে দুপুর)। মোট ২৩ ঘণ্টা ৫ মিনিট রোজা রাখতে হয় তাদের।

তার ভাষায়, ‘আমার যেসব বন্ধু, পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়রা বর্তমানে বাংলাদেশে আছেন, তারা বিশ্বাস করতে পারেন না যে আমরা ২০ ঘণ্টার বেশি রোজা রাখতে পারি।’

তিনি আরো বলেন, ‘তারা যখন আমাদের কাছ থেকে শোনেন, আমরা ২৩ ঘণ্টা বা সাড়ে ২২ ঘণ্টা রোজা পালন করি, তখন বলেন- এটা অবিশ্বাস্য। কীভাবে সম্ভব হতে পারে? আল্লাহকে ধন্যবাদ যে আমরা এটা পারি এবং ভালোভাবেই করছি।’

পাশের যেসব দেশে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের একই অবস্থা সেখানেও মুসলিমরা তাদের মতো করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি তৈরি করে নিয়েছেন। যেমন, ল্যাপল্যান্ডে সূর্যাস্ত হয় না। সেখানকার মুসলিমরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সময় মিলিয়ে সিয়াম সাধনা করেন। অনেকে পার্শ্ববর্তী মুসলিম দেশ তুরস্কের সঙ্গে মিল রেখে রোজা পালন করেন বলে জানান মোহাম্মদ।

ব্যক্তির অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে শুধু যুক্তরাজ্যেই কারো জন্য রোজা ১৬ ঘণ্টা, আবার কারো জন্য হয় ১৯ ঘণ্টা। প্রতিবছরই রোজার সময়সূচিতে পশ্চিমা দেশগুলোতে এই পার্থক্য হয়ে থাকে।