রবিবার, ২রা জুলাই, ২০১৭ ইং ১৮ই আষাঢ়, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ

AmaderBrahmanbaria.COM
মে ২৬, ২০১৭
news-image

---

সালমা আহমেদ , বাঞ্ছারামপুর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আজ (শুক্রবার)সকালে বাঞ্ছারামপুর বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর জনৈকা মেধাবী ছাত্রীকে স্কুলটির ইংরেজীর শিক্ষক মো.বিল্লাল হোসেন কর্তৃক গতকাল বৃহস্পতিবার কু প্রস্তাব ও যৌন হয়রানীতে সাড়া না দেয়ায় শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করা করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

অভিযোগকারী ছাত্রী ও তার স্বজনরা লিখিত অভিযোগ ও মৌখিকভাবে জানায়,-‘লাঞ্ছিত ছাত্রী আজ সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে এলাকার বিশিষ্টজন ও সংবাদকর্মীদের সামনে লিখিত অভিযোগ দিয়ে জানায়,-‘ইংরেজীর বিল্লাল স্যার গত ৩ মাস ধরে আমাকে উত্তক্ত্য করে আসছে।আমার গা’য়ে বিভিন্ন সময় হাত দিতে চেষ্টা করলে আমি কোন রকমভাবে নিজেকে রক্ষা করি।আমাকে স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে ও কু প্রস্তাবে রাজি না হলে আমাকে টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেয়া সত্বেও আমি এতোদিন চুপ করে ছিলাম। গতকাল(বৃহস্প্রতিবার)১ম ক্লাশে অন্যান্য ছাত্রীদের সামনে বিনাকারনে ব্যক্তিগত ক্ষোভে স্কুলের পড়া ধীরে বলার সামান্য কারনে চড়-থাপ্পড় মারেন।(এসময় ছাত্রীটি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে)।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্ধের দিনও সদর উপজেলার অভিভাবকরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে।স্কুলটিতে ১৮ শতাধিক ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকগন স্কুলটির অভিযুক্ত শিক্ষক বিল্লাল,তাকে শাস্তির হাত থেকে রক্ষাকারী প্রধান শিক্ষক,সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিচার ও অপসারন দাবী করে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলার প্রেসক্লাব ও মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের নেতৃবর্গের কাছে যৌন হয়রানি প্রতিকার দাবী করেন।
অভিযোগে প্রেক্ষিতে বন্ধের দিন শুক্রবারও স্কুলে হাজির হন যৌন হয়রানির অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তাকে রক্ষাকারি শিক্ষকগন।সাংবাদিক ও ক্ষিপ্ত স্থানীয় জনতার প্রশ্নের হাত থেকে রক্ষা পেতে অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষক আত্বগোপনে চলে যেতে সাহায্য করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।আজ সকালে প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম ও সহকারি প্রধান শিক্ষক মোখলেছুর রহমানের সাথে ছাত্রী লাঞ্ছিতের বিষয়ে কথা বলতে গেলে (অফ দ্যা রেকর্ড,ভিডিও আছে) সংবাদকর্মীদের হুমকী দিয়ে বলেন,-‘এ ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেলে পস্তাতে হবে।তার সাংবাদিকতা বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে।স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে না জানাতে সংবাদকর্মী ও ছাত্রীর মা কে শাসাতে থাকেন।এ সময় প্রথম আলো,বাংলাদেশ প্রতিদিন,আমাদের অর্থনীতি,সমকাল,দৈনিক শিক্ষাবার্তা,আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডটকম,নয়াদিগন্ত,বাংলাদেশ সময়সহ আরো অনেক উপজেলা প্রতিনিধিরা প্রধান শিক্ষকের এহেন প্রকাশ্য পক্ষ নেয়া ও সাংবাদিকদের হুমকী দেয়ার কারনে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন।

এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতিকে ঘটনার বিষয়ে জানান,-‘বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা মাথা ঘামাবেন না।বিষয়টি আমরা দেখবো।আপনারা রিপোর্ট করবেন না।করলে খবর আছে’।
তিনি আরো বলেন,-‘ছাত্রীটি ৫ম শ্রেনীতে জিপিএ-এ প্লাস পেলো তো হয়েছে।আজকাল গাছ-পালা-ও এ প্লাস পায়।ছাত্রীটিরও দোষ আছে।এক হাতে তালি বাজে না।’
সর্বশেষ, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম ঢাকা থেকে মুঠোফোনে জানান,-‘প্রধান শিক্ষক সহ মূল অভিযুক্ত বিল্লাল মাষ্টারের বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে।কোন ছাড় দেয়া হবে না।৭ম শ্রেনীর একটি শিশুর সাথে শিক্ষক কি করে কু-প্রস্তাব দেয়?’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৈয়বকে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার মেয়র খলিলুর রহমান টিপু মোল্লা,বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক মহিউদ্দিন মহি,ছাত্রলীগ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সা.সম্পাদক সেলিম রেজা এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ভাবে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।এ ছাড়া বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি(বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শাখা) ফয়সল আহমেদ খান ও সা.সম্পাদক মনিরুজ্জামান পামেন (বাঞ্ছারামপুর বার্তার সম্পাদক) যৌন হয়রানির ঘটনা প্রকাশ করতে সাংবাদিকদের ‘মিথ্যে বানোয়াট মামলা দেয়ার হুমকী’ দেয়ার কারনে তীব্র নিন্দা ও দোষী শিক্ষকদের বরখাস্তের দাবী জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।

এ জাতীয় আরও খবর