একযুগ পর বসছে বিশেষ অধিকার বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠক
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : একযুগেরও বেশি সময় পর হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক। জুলাইয়ে এ কমিটির বৈঠক হতে পারে বলে জানা গেছে। সরকার দলের দুই জন সংসদ সদস্যের উত্থাপিত অধিকার ক্ষুণ্নের নোটিশ সম্প্রতি এই কমিটিতে যাওয়ায় তা নিষ্পত্তির জন্য এই বৈঠক বসছে। সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে অষ্টম সংসদের শেষ দিকে ২০০৫ সালের ১৮ জানুয়ারি বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে কমিটিতে আসা নোটিশের অধিকার ক্ষুণ্নের বিষয় পর্যালোচনার জন্য একটি সাব-কমিটিও গঠন করা হয়। তবে, ওই সাব কমিটির কার্যক্রম গঠনপর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। এরপর নবম সংসদের পুরো মেয়াদ ও চলতি দশম সংসদের সাড়ে তিন বছর পার হলেও বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক হয়নি।
অবশ্য দীর্ঘদিন বৈঠক না হলেও বিষয়টিকে কার্যপ্রণালী বিধির ব্যত্যয় হিসেবে মনে করেন না সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার উপসচিব মর্যাদার একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘কার্যপ্রণালী বিধি অনুাযায়ী মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির মাসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা থাকলেও বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত কমিটিসহ আরও কয়েকটি কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠানের কোনও সুনির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। এক্ষেত্রে ওই কমিটির এখতিয়ারভুক্ত কোনও কার্যক্রম হলেই বৈঠক হয়ে থাকে।’ ফলে বিগত দিনগুলোয় বিশেষ কমিটির কাছে কোনও নোটিশ না আসায় বৈঠক হয়নি বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
প্রসঙ্গত, চলতি সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে অধিকার ক্ষুণ্নের অভিযোগ তুলে সরকার দলের দুই জন সংসদ সদস্য সংসদের উত্থাপতি নোটিশ সংসদ গ্রহণ করে তা বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠিয়ে দেন। গত ২৬ জানুয়ারি সরকার দলের রাজশাহী ৪ আসনের এনামুল হক তার অধিকার ক্ষুণ্নের একটি নোটিশ সংসদে তোলেন। গত ২৩ জানুয়ারি এ ইংরেজি অবজারভার পত্রিকায় Police wait PM order to crackdown on drugs lord’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরে তার অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে উল্লেখ করে কার্যপ্রণালী বিধির ১৬৪ বিধিতে তিনি এই নোটিশটি আনেন। পরে স্পিকার তা ১৬৮ বিধিতে সংসদে ভোটে দিলে তা গ্রহণ করা হয়। এর দুই সপ্তাহ পরে সরকার দলের অন্য সংসদ সদস্য শামীম ওসমানও এই একই খবরে অধিকার ক্ষুণ্নের নোটিশ সংসদে তুললে তাও গ্রহণ করে কমিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে বর্তমানে বিশেষ অধিকার কমিটিতে নিষ্পত্তিযোগ্য একই ইস্যুতে দুই জন সদস্যের নোটিশ জমা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বিশেষ অধিকার সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে নিষ্পত্তিযোগ্য দু’টি নোটিশ আমরা পেয়েছি। আমরা চিন্তা করছি রজমানের পর জুলাই মাসে এটা নিয়ে বসব।’
স্পিকারের সভাপতিত্বে গঠিত এই কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সংসদ উপ-নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, রংপুর -৫ আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মৌলভীবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি মো. শাহাব উদ্দিন, পিরোজপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জাতীয় পার্টির মো. জিয়াউল হক মৃধা ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, কোনও সদস্য বিশেষ অধিকার প্রশ্নের নোটিশ নিতে চাইলে তাকে সচিবের কাছে লিখিতভাবে জানাতে হবে। স্পিকার সেটাকে জরুরি মনে করলে সংসদে উত্থাপনের অনুমতি দেবেন। পরে সংসদ তা গ্রহণ করলেই কেবল সংশ্লিষ্ট কমিটিতে পাঠানো হবে।