বুধবার, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ২৬শে মাঘ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

আশুগঞ্জে আ.লীগে নেতৃত্বে ক্ষমতার অপব্যবহারে চলছে পকেট কমিটির হাওয়া

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৭

নিজস্ব প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে আ.লীগে চলছে ক্ষমতার অপব্যবহারে করে পকেট কমিটি হাওয়া । এই আতংক কাটাতে ইউনিয়ন নেতারা ঘুরছেন উপজেলা আর পর্যায়ে জেলা নেতাদের দ্বারে দ্বারে। এই শঙ্কাও করছেনও উপজেলা পর্যায়ে অনেক নেতা। যারা আগামী সম্মেলনে প্রার্থী হবেন। তারা মনে করছে উপজেলা শীর্ষ দুই নেতা কমিটিতে আগামী দিনে থাকার জন্য ইউনিয়ন গুলোতে কমিটিতে পকেট কমিটি করার পায়তারা চলছে। যদিও বর্তমান আহবায়ক কমিটি র্শীষ নেতারা মানতে নারাজ। আ.লীগে দুর্গ হিসাবে পরিচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ। দেশের প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়। শুধু মাত্র ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় গ্রুপিংয়ের জন্য শুধুমাত্র আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী হানিফ মুন্সি পরাজিত হয়েছিল। বর্তমানে দলীয় গ্রুপিং এ এখন জর্জরিত। কয়েক ভাগে বিভক্ত আশুগঞ্জ উপজেলা আ.লীগ। চলছে আহবায়ক কমিটি দিয়ে। উপজেলা আ.লীগ আহবায়ক ছফিউল্লাহ মিয়া আসন্ন সম্মেলনে সভাপতি পদে প্রার্থী হতে চান। আর যুগ্ন আহবায়ক আবু নাছের আহমেদ ও সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে চান। তারা এই দুইজন ক্ষমতায় থাকার জন্য নিজেদের লোক ইউনিয়ন পর্যায়ে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর তাদের এই চেষ্টাকে পকেট কমিটি আতংক মনে করছে ইউনিয়ন নেতারা। ইউনিয়ন নেতারা বলছে এর আগেও ঘটেছে আশুগঞ্জে পকেট কমিটি ঘটনের এমন ঘটনা।  তবে এই পকেট কমিটি করার প্রত্রিুয়া শুরু দলীয় গ্রুপিং থেকে। ২০১৩ সালে সম্মেলনের পর শুরু হয় আ.লীগে প্রকাশ্যে গ্রুপিং। তখন সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন বর্তমান আহবায়ক হাজী ছফিউল্লাহ মিয়া। আর বর্তমান যুগ্ন আহবায়ক আবু নাছের আহমেদকে পরাজিত করেছিলেন বর্তমান আরেক যুগ্ন আহবায়ক মো. হানিফ মুন্সি সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। জেলা আ.লীগে শীর্ষ এক নেতার অনুগত এক প্রার্থী বিজয় না হওয়ায় পরবর্তীতে শুরু হয় কমিটি নিয়ে টানবাহানা।

জেলা আ.লীগে কমিটিও জমা পড়ে ছিল একাধিকবার। কিন্তু অনুমোদন দেয়নি তৎকালিন জেলা আ.লীগ কমিটি। চলে আসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনে ৪জন প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় কাউন্সিল ভোটে তৎকালিন সাধারন সম্পাদক হানিফ মুন্সি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় দল থেকে পদত্যাগ করেন তৎকালিন সভাপতি ও বর্তমান আহবায়ক ছফিউল্লাহ মিয়া। তার পদত্যাগ পত্র গৃহিতও হয়েছিল। নির্বাচনে ছফিউল্লাহ মিয়া ও আবু নাছের আহমেদসহ অধিকাংশ নেতারা বিএনপি প্রার্থী আবু আসিফের পক্ষে সরাসরি কাজ করেন। নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী হানিফ মুন্সি পরাজিত হয়। আ.লীগ প্রার্থী নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার কারন উল্লেখ্য করে ছফিউল্লাহ মিয়া ও আবু নাছের আহমেদসহ এক ডজন নেতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে ছিল আ.লীগ প্রার্থী হানিফ মুন্সি। কিন্তু এই অভিযোগ কোনে কাজেই আসে নাই। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ছফিউল্লাহ মিয়াকে আহবায়ক আর আবু নাছের আহমেদকে যুগ্ন আহবায়ক করে একটি আহবায়ক কমিটি প্রদান করে জেলা আ.লীগ। আর হানিফ মুন্সীকে রাখা হয় দুই নাম্বার যুগ্ন আহবায়ক হিসাবে। এর পর থেকে শুরু হয় নতুন করে আবার গ্রুপিং। স্থানীয় নেতাকর্মিরা হানিফ মুন্সি নেতৃত্বে গঠন করে উপজেলা তৃর্ণমূল আ.লীগ। এতে আহবায়ক করা হয়  মাহবুবুর রহমানকে আর যুগ্ন আহবায়ক করা হয় হানিফ মুন্সিকে। জেলা কমিটি মনোনীত আহবায়ক কমিটি আর উপজেলা তৃর্ণমূল আ.লীগ মধ্যে চলে গ্রুপিং। দুই অফিসে চলে কার্যক্রম। এসময় উপজেলা তৃর্ণমূল আ.লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি ভেঙ্গে দিতে ৫টি ইউনিয়নে গঠন করা হয় আহবায়ক কমিটি। আর এই কমিটিকে পকেট কমিটি হিসাবে চিনে তৃর্ণমূল উপজেলা আ.লীগ। যারা সবাই হানিফ মুন্সি সমর্থক বিধায় তাদের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে জেলা আ.লীগে এক র্শীষ নেতার হস্তক্ষেপে তৃর্ণমূল উপজেলা আ.লীগ ভেঙ্গে এক সাথে মিলেমিশে কাজ জন্য নির্দেশ দেন। এরপর থেকে আহবায়ক কমিটি অধীনে চলে দুই গ্রুপের কার্যক্রম। এদিকে গত শুক্রবার বর্ধিত সভায় চলে হট্রগোল। দাবি আসে দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক আগে ওয়ার্ড কমিটি পরে ইউনিয়ন কমিটি। তা মানতে নারাজ বর্তমান আহবায়ক। এই নিয়ে সভাতে চলে হট্রগোল। কোন সিন্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় বর্ধিত সভা। এদিকে উপজেলা আ.লীগের সম্মেলনকে ঘিরে ইউনিয়ন আ.লীগে চলছে এখন পকেট কমিটি আতংক। ওয়ার্ডে চলছে তাদের অনুগতদের কাছ থেকে ফোনে ফোনে নাম নিয়ে ওয়ার্ড কমিটি। যা স্থানীয় আ.লীগ নেতারা জানেন না। ইউনিয়ন নেতাদের দাবি পকেট কমিটি নয় সরাসরি মাঠ পর্যায়ে এসে সম্মেলন করে ওয়ার্ড কমিটি মাধ্যমে ইউনিয়ন সম্মেলন শেষ করার। তারুয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক বাদল সাদির জানান আমার কমিটি কেন ভাঙ্গা হল আমি জানি না। আমি শুধু জানি আমি হানিফ মুন্সি সমর্থক ছিলাম, এই অপরাধে আমার কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হয় ।

এ ব্যাপারে তালশহর ইউনিয়ন আ.লীগের আহবায়ক আবুশামা মিয়া জানান দলের জন্য কাজ করি আমরা। প্রতিদিন সকালে ঘুমতে উঠে শুনি আমার ইউনিয়নে প্রার্থী বানানো হয়। এসময় তিনি বলেন ইউনিয়নে এসে কমিটি করা কথা বলেন। কার যোগ্যতা আছে তা স্থানীয় নেতাকর্মিরা প্রমান দিবে। জেলা ঘোষিত সময় অনুযায়ি আগামী মার্চে শেষ করতে হবে আশুগঞ্জ উপজেলা আ.লীগ সম্মেলন। এনিয়ে আশুগঞ্জে প্রার্থীরা মাঠে নেমে পড়েছে। উপজেলা সভাপতি পদে বর্তমান আহবায়ক ছফিউল্লাহ মিয়া ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান। সাধারন সম্পাদক পদে বর্তমান দুই যুগ্ন আহবায়ক আবু নাছের আহমেদ ও হানিফ মুন্সি। এই চার প্রার্থী কথা এখন শোনা যাচ্ছে। তবে প্রার্থী সংখ্যা বাড়তে পারে। উপজেলা আ.লীগের যুগ্ন আহবায়ক  ও সাধারন সম্পাদক প্রার্থী  হানিফ মুন্সি জানান ২০১৩ সালে আ.লীগে সম্মেলনে কারা পরাজিত হয়েছিল। উপজেলা নির্বাচনে কারা বিরোধীতা করে বিএনপি প্রার্থী পক্ষে কাজ করে ছিল। তা সবই ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতারা জানে। এখন সময় বসেছে জবাব দেওয়ার। তবে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সভাপতি প্রার্থী আনিছুর রহমান জানান দল করতে চাইলে অব্যশই গঠনতন্ত্র মানতে হবে। তাই দ্রুত ওয়ার্ড কমিটি করে ইউনিয়ন গঠন শেষ করে সম্মেলনে জন্য কাউন্সিলর তালিকা প্রকাশ করার দাবি জানান তিনি। আর বর্তমান উপজেলা আ.লীগের আহবায়ক ছফিউল্লাহ মিয়া  দলের ত্যাগি ও পরীক্ষিত যোগ্য শিক্ষিতদের নেতেৃত্বে আনার কথা বলছেন তিনি। এই ব্যাপারে জেলা আ.লীগের সাধারন সম্পাদক আল মামুন সরকার জানান আশুগঞ্জে সম্মেলনের তারিখ এখনো হয়নি। মার্চের মধ্যে আশুগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এসময় তিনি আরও বলেন সম্মেলনের মাধ্যমেই কমিটি করা হবে।