নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। কিছুক্ষণ আগে মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে তাকে প্রায় দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে আতিউর রহমান সিআইডি কার্যালয়ে আসেন। প্রায় দুই ঘণ্টা পর বেলা ১২টায় তিনি কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান।
এই বিষয়ে এখনও সিআইডির কোনো কর্মকর্তা বা আতিউর রহমান-কারও কাছ থেকে কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
গত ৫ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে রাখা ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয়া হয় দুটি দেশে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় পাচার হওয়া দুই কোটি ডলার একটি বাণিজ্যির ব্যাংক থেকে ছাড় করার আগেই ধরা পড়ে যায়। পরে পুরো টাকা উদ্ধার হয়।
আর বাকি আট কোটি ১০ লাখ ডলার পাচার করা হয় ফিলিপাইনের বাণিজ্যিক ব্যাংক রিজাল-এ। এই টাকা ব্যাংক থেকে ছাড় করিয়ে জুয়া আড্ডায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় একজন ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ফিলিপাইন সরকারকে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২০ কোটি টাকা ফেরত দেন। গত নভেম্বরের শুরুতে এই টাকা ফেরত পায় বাংলাদেশ। বাকি ৫৩০ কোটি টাকা উদ্ধার এখনও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ সরিয়ে নেয়ার এই ঘটনাটি ঘটে সুইফট কোড হ্যাক করে। ঘটনাটি যখন ঘটে তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন আতিউর রহমান। তিনি রিজার্ভ চুরির ঘটনাটি গোপন করে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। পরে সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনাটি ফাঁস হলে আতিউর রহমান সমালোচনার মুখে পড়েন।
এই ঘটনায় সমালোচনার মুখে আতিউর রহমান গত ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদ থেকে পদত্যাগ করেন আতিউর রহমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদ ছাড়ার পর আতিউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তার শিক্ষকতার পেশায় ফিরে যান। এই ঘটনাটি নিয়ে তিনি গণমাধ্যমে কোনো কথাও বলেননি।
রিজার্ভ চুরির ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার অবহেলার জন্য এই চুরি হয়েছে।
পাশাপাশি সিআইডিও ঘটনাটির তদন্ত করছে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঁচটি বিভাগের প্রধানসহ প্রায় ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।ঢাকাটাইমস