g ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে খারঘর গনহত্যার ইতিহাসের কিছু কথা | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বৃহস্পতিবার, ৫ই অক্টোবর, ২০১৭ ইং ২০শে আশ্বিন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে খারঘর গনহত্যার ইতিহাসের কিছু কথা

AmaderBrahmanbaria.COM
ডিসেম্বর ৮, ২০১৬

---


নিজস্ব প্রতিবেদক : 
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়াইল ইউনিয়নের খারঘর গ্রাম। ১৯৭১ সালে পাক বাহিনী ১০ অক্টোবর নির্মমভাবে অতর্কিত হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল নারী-পুরুষসহ প্রায় ৪৮ জন মানুষকে। এ হত্যাযজ্ঞকে দেশের ইতিহাসে খারঘর গনহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের এ দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এসব শহীদদের পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য নেয়া হয়নি তেমন কোন উদ্যোগ। স্বজন হারা এসব পরিবারের মধ্যে অনেকেই পায়নি রাষ্ট্রীয় কোন সুযোগ সুবিধা। খুব বেশী ভাল নেই একাত্তুরের রণাঙ্গনে শহীদ এসব পরিবারের সদস্যরা। অভাব অনটন তাদের নিত্য সাথী। কেউ পরের জমিতে চাষাবাদ করে জীবন চালাচ্ছে। কেউ বা ধার দেনা করে জীবন সংগ্রামে টিকে রয়েছে। ভুক্তভোগীরা সরকার সহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। সরজমিনে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানাযায়, ঐদিনের বর্বরোচিত হামলার বর্ণনা। তাদের মধ্যে বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মিয়া জানান, ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর যার যার কাজ নিয়ে সবাই ব্যস্ত ছিল, ঠিক তখনই পাশ্ববর্তী পাগলা নদী দিয়ে পাক সেনা ভর্তি একটি জাহাজ ও আরেকটি নৌকা নদীর তীরবর্তী গ্রামের ভীরে। অতর্কিতে হামলা চালায় গ্রামের উত্তরপাড়ার নিরীহ গ্রামবাসীর উপর। নির্বিচারে গুলি আর ব্রাশ ফায়ার করে। ৪০/৪৫ মিনিটেই পাক হানাদাররা হত্যা করে গ্রামের কমপক্ষে ৪৮ জন মানুষকে। আহত হয় ১১৭ জন। সেই দিনের পাকবাহিনীর বর্বরোচিত হমালায় আমি আমার মা-বাবা, ভাইসহ পরিবারের ৬ সদস্যকে হারিয়েছি। তিনি আরো বলেন, ঐদিন স্বজন হারা শহীদ পরিবারের সদস্যরা আজকে অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারী ভাবে তোমন কোন সাহায্য সহযোগিতা পায় নি তারা। তবে জীবন তো আর থেমে থাকে নি। শহীদ পরিবারের সদস্য অলিক মিয়া জানান, পরিবারের ৪ জন সদস্যকে হারিয়েছি। অনেক কষ্ট করে চলছি। পরের জমিতে কাজ করি। অনেকে অনেক কিছু পেয়েছে। কিন্তু আমরা পাই নি। অন্যের তৈরী করে দেওয়া ঘরে বাস করছি।

 

এ ব্যাপারে কথা হয় বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেনের সাথে তিনি বলেন, আমাদের বড়াইল ইউনিয়নের খারঘর গ্রামে ঐদিন পাকবাহিনী হামলা চালিয়ে একই পরিবারের বেশ কয়েকজনসহ প্রায় ৪৮ জন লোককে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। তাই এ গ্রামে ঐদিনের ইতিহাসের স্বাক্ষীস্বরুপ শহীদদের একটি গনকবরও রয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই শহীদ পরিবারের তালিকা প্রস্তত করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাব। মুক্তিযুদ্ধ কালীন পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের অত্যাচারের শিকার হওয়া পরিবার গুলো প্রয়োজনীয় সাহায্য সহায়তা পাবে এমন প্রত্যাশা সকলের।

 

এ জাতীয় আরও খবর