নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রয়োজনীয় উদ্যোগ আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিদেশের বাজারে বাংলাদেশী হিমায়িত পণ্যের বাজার বাড়ানো যাচ্ছে না। এই খাতের ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, যথাযথ মনিটরিং ও সরকারি উদ্যোগ থাকলে সম্ভাবনাময় এই খাতটির বিকাশ ঘটানো শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পরিসংখ্যান মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ৪৪৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা মূল্যের হিমায়িত চিংড়ি, মিঠা পানি ও সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি হয়েছে। পরিমাণ ছিল সাত হাজার ১৪ টন। এককভাবে রপ্তানিতে শীর্ষে আছে বাগদা চিংড়ি। গত চার মাসে তিন হাজার ৪২৮ টন বাগদা চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো গেলে এই খাতে রপ্তানি কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব। ইউরোপ ও আমেরিকাসহ এশিয়ার উন্নত দেশগুলোতে হিমায়িত খাবারের চাহিদা বেড়েছে।
চট্টগ্রাম মৎস্য পরিদর্শক ও মান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে গলদা, বাগদা ও অন্যান্য চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে চার হাজার ২২৮ টন। এটার আর্থিক মূল্য ৩৬৫ কোটি চার লাখ ৭২ হাজার টাকা। সূত্র মতে, মিঠা পানির বেশ কয়েকটি জাতের মাছও এ সময় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রপ্তানি হয়। মিঠা পানির কার্প, ক্যাটফিশ ও অন্যান্য জাতের মাছ মিলে এক হাজার ২৫৪ টন রপ্তানি হয়। এর মূল্য ৪০ কোটি ৭২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
এছাড়া সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি হয়েছে ৫৬৮ টন, যার মূল্য প্রায় ১২ কোটি সাত লাখ ৭২ হাজার টাকা। চিল্ড ফিশ ৭৭৯ টন, যার মূল্য ১৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এছাড়া শুটকি মাছ রপ্তানি হয়েছে ১৮০ টন, এর মূল্য ১৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
চট্টগ্রাম মৎস্য পরিদর্শক ও মান নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শ্রীবাস জানান, ইউরোপে বর্তমানে হিমায়িত মাছের খুব ভালো চাহিদা আছে। চিংড়ি ইউরোপের দেশগুলোতে খুব বেশি রপ্তানি হয়। আমাদের দেশে উৎপাদিত চিংড়ির মান ভালো। তাই রপ্তানিও বেশি হয়। তবে বিদেশে যে পরিমাণ চাহিদা আছে সেই পরিমাণে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। রপ্তানি আয়ের দিক থেকে চিংড়ি দেশের শীর্ষ স্থান অর্জন করার সক্ষমতা রাখে বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশ ফোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিএফএফইএ) সূত্রে জানা গেছে, হিমায়িত চিংড়ির রপ্তানি গত কয়েক বছর ধরে কমছে। দেশে উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে বিদেশে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী চিংড়ির উৎপাদন না হওয়ার কারণে চট্টগ্রামের বেশ কিছু প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শুধু চিংড়ি নয়, বিদেশের বাজারে কুইচ্চা, কাঁকড়া, ভেটকি, দাতিনা, বাইম, ইলসহ নানা প্রজাতির দেশি প্রজাতির মাছেরও ভালো চাহিদা আছে। কিন্তু মাছের চাহিদা অনুযায়ী সরাবরাহ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতে এসব দেশি প্রজাতির মাছের চাহিদা বেশি।