অনলাইন ডেস্ক : ভালবাসার আসল ব্যাপার দেহ নয়, মনই হওয়া উচিত। মাত্র তিন ফুট সাত ইঞ্চি উচ্চতার ২৮ বছরের জেমস লুসটেডকে ভালবেসে বিয়ে করেছেন ২২ বছরের প্রেমিকা চোল। চোলের উচ্চতা পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি। ৩ বছরের প্রেমের পর বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা।
বিয়ের সময় উচ্চতার কারণে বিপাকে পড়েন প্রেমিক জেমস। উচ্চতায় ছোট হওয়ায় কনেকে চুমু দেওয়া বা আংটি পরাতে পারছিলেন না। অবশেষে মইয়ে চড়ে কনেকে চুমু খাওয়া ও আংটি পরানোর কাজ সারলেন জেমস। ব্রিটেনের উত্তর ওয়েলেসে সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে।
উত্তর ওয়েলসের জনপ্রিয় গির্জা সেন্ট মার্গারেটে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বামন জেমসকে বিয়ে না করতে অনেকেই চোলেকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু ভালোবাসা কোনো বাঁধা মানে না। তাই ভালোবাসার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে চোলে ও জেমসের সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়।
নিজের বানানো মই সম্পর্কে জেমস বলেন, ‘আমি বিশেষভাবে মইটি বানিয়েছি। মইটি আমাকে চোলের চেয়ে কয়েক ইঞ্চি লম্বা দেখাতে সাহায্য করে। এটিতে চড়ে অন্যান্য দম্পতির মত চুমু খাওয়া ও আংটি পরানোর কাজ সহজেই করা যায়।’
ভালোবাসা একজন মানুষকে অসাধ্য সাধন করতে সাহায্য করে। আর এ অসাধ্য সাধন করেছেন চোলে। পরিবারের বাঁকা কথা শোনার পরও বামন বরকে বিয়ে করেছেন তিনি। কাজটি খুবই কঠিন ছিল। কিন্তু জেমস লুসটেডকে বিয়ে করে তিনি খুবই খুশি।
চোলে বলেন, ‘আমাদের দুজনের মধ্যে উচ্চতার ব্যবধান দুই ফুট। কিন্তু আপনি যখন প্রেমে পড়বেন তখন এই সামান্য ব্যাপার বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।’
জেমস পেশায় একজন মুখাভিনেতা আর চোলি শিক্ষিকা। দুজনই ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টান। তাই উত্তর ওয়েলসের সেন্ট মার্গারেট চার্চে তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেছেন।
বিয়ের দিন সম্পর্কে জেমস বলেন, ‘দিনটি খুবই চমৎকার ছিল। বিয়েতে ৮০ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। রাতের অতিথির সংখ্যা বেড়ে ১২০ জন হয়েছিল। বিষয়টি খুবই চমৎকার ছিল।’
জেমস লুসটেড ড্রায়াসট্রোফিক ডেসফ্লাসিয়া নামের জেনেটিক সমস্যা নিয়ে জন্মেছিলেন। তার বাবা-মাও এ রোগে আক্রান্ত। তার ভাইয়েরও এ সমস্যা আছে। তাই অনেকে ধারণা করছেন তাদের সন্তানরাও বামন হবে।
তবে বিষয়টি বড় করে দেখছেন না চোলি। তিনি বলেন, ‘সংসার করার ইচ্ছা সবারই থাকে। তাই আমরা আর দেরি করতে চাচ্ছি না। আমাদের সন্তানরাও যদি আমার স্বামীর মত অর্থাৎ বামন হয়, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই।’
বর জেমস লুসটেড ড্রায়াসট্রোফিক ডেসফ্লাসিয়া নামের জেনেটিক সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা মাও এ রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
জেমস ও চোলির ভালোবাসা পূর্ণতা পেতে খুব সমস্যা হয়েছে। কারণ, চোলির পরিবার এ বিয়েতে রাজি ছিলেন না। কোন পরিবারই চায় না তার মেয়ে একজন বামনকে বিয়ে করুক। আর আত্মীয়স্বজনরাও চাচ্ছিলেন না বিয়েটি হোক। কিন্তু জেমস ও চোলির দৃঢ়তায় তারা শেষ পর্যন্ত মত দেন।
চোলির মা সারাহ বলেন, ‘একদিন চোলে আমাকে বলে, সে জেমসকে ভালোবাসে। তার সাথে সংসার করতে চায়। কিন্তু আমি তার সিদ্ধান্তে খুশি ছিলাম না, কারণ ছেলেটি বামন। আমি তাকে শুধু একবার দেখেছি। মেয়ের নিজের সিদ্ধান্তেই বিয়ে করেছে। এ বিষয়ে খুব বিস্তারিত আমি জানি না।’