চট্টগ্রাম অফিস: চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জমিরিয়া মাদ্রাসার (কওমি) ছাত্র ও ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মী (সুন্নি) সংর্ঘষের ঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর রোসাংগিরি সড়কের জমিরিয়া ইন্টান্যাশনাল মাদ্রাসার সামনে এ সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। আহতদের কয়েকজনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ নিয়ে নানুপুর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ফটিকছড়ি থানার উপপুলিশ পরিদর্শক নাজমুল আলম।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ৭-৮টি গাড়িতে (জিপ) করে ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা দক্ষিন ফটিকছড়ি থেকে নাজিরহাট ঝংকার মোড়ে অনুষ্ঠিত একটি সমাবেশে যাচ্ছিল। ইসলামী ফ্রন্ট নেতা নুরুল ইসলাম ফারুকীর হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবীতে সমাবেশেটি চলছিলো। তাদের বহনকারী গাড়িবহরটি নানুপুর রোসাংগিরি সড়কের জমিরিয়া মাদ্রাসার সামনে এলে ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মী ও মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সংঘর্ষে জমিরিয়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা বেলাল (৪৫), জসিম উদ্দিন (৩৫), শওকত (২৮), জুনায়েদ (১৫), জাহাঙ্গীরসহ (৪৫) অন্তত ১০ জন আহত হন। একই সঙ্গে ইসলামী ফ্রন্টের মোস্তফা (২৩), নওশাদ ইসলাম (২৪), নিশাত (২০), নজিবুল হক (২৫), ফয়েজ (৩৫), আবীর(২৫), শাহজাহান (২৬), জাহেদসহ (২২) ১৫ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে কেউ কেউ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকীদের ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জমিরিয়িা মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা শিহাব জানান, ৭-৮টি চাঁদের গাড়িতে করে ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা উপজেলার ঢালকাটা এলাকা থেকে মাদ্রাসার ফটকের সামনে গিয়ে আপত্তিকর শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় মাদ্রাসার ছাত্ররা ঘুমাচ্ছিল। তাদের শ্লোগান শুনে মাদ্রাসার এক ছাত্র ফটকে এসে শ্লোগান দিতে মানা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা মাদ্রাসার ভেতরে প্রবেশ করে সবাইকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা মাদ্রাসার পরিচালক বেলালকেও তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। হামলার সময় বেলাল ছাড়াও আরো অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এর পর খবর পেয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী প্রতিরোধে এগিয়ে এলে হামলা কারীরা চারটি গাড়ি ফেলে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে ইসলামী ফ্রন্ট যুবসেনার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির ফয়েজ বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল নিয়ে গাড়িতে করে নাজিরহাট সমাবেশে যাচ্ছিলাম। নানুপুর জমিরিয়া মাদরাসার সামনে পৌঁছা মাত্রই মাদ্রাসার উপর থেকে ছাত্ররা ইট মারতে থাকে। এতে আমাদের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।
তিনি জানান, মাদরাসার ছাদ থেকে ইট নিক্ষেপ করার প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের নেতাকর্মীরা হামলার শিকার হন।
এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ঘটনার পর পরই দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সহকারী পুলিশ সুপার হাটহাজারী সার্কেল লুৎফুর রহমান এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওসমান গনি বাবুসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। দ্য রিপোর্ট