২৯শে আগস্ট, ২০১৬ ইং, সোমবার ১৪ই ভাদ্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


সন্তানের ক্ষুধা মেটাতে ঋণগ্রস্ত বাবা-মা!


Amaderbrahmanbaria.com : - ২৬.০৮.২০১৬

অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে মোটা বালক আরিয়া পারমানা। বয়স মাত্র ১০ বছর। কিন্তু ওজনে পূর্ণ বয়স্ক মানুষকেও ছাড়িয়ে গেছে সে। এই তো কিছুদিন আগেই তার ওজন মাপা হয়েছে ১৯২ কেজিরও বেশি! ইন্দোনেশিয়ার এই বালকটি জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত নয়। শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গই ঠিকঠাক রয়েছে তার।

কিন্তু ক্ষুধাটা তার মারাত্মক। কিছুতেই যেন পেট ভরতে চায় না। রাক্ষুসে ক্ষুধা আরিয়ার। তার খাবার যোগাড় করতে গিয়ে নিঃস্ব অবস্থা তার বাবা-মায়ের। দিনে পাঁচবার পেট ভরে খাবার দিতে হয় তাকে। সন্তান বলে কথা! তাই সন্তানের খাবার না জুটিয়ে থাকতেও পারে না তার বাবা-মা। কিন্তু সেই খাবার জোটাতে গিয়ে ঋণের বোঝায় চাপা পড়তে শুরু করেছেন তারা। আশায় আছেন, একদিন তাদের এই মোটা ও পেটুক সন্তান অন্য শিশুদের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারবে। মাত্রাতিরিক্ত মোটা শরীরের কারণে হাঁটাচলা কঠিন আরিয়ার পক্ষে। ঘরে বসেই দিন কাটে তার।

নিজের এমন শরীর ও ক্ষুধার বিষয়টি নিয়ে আরিয়া নিজেও বেশ ব্রিবত। সে স্কুলে যেতে পারে না, ভালো করে হাঁটতে পারে না, অন্য বাচ্চাদের মত মাঠে গিয়ে খেলতে পারে না, কেবল শুয়ে-বসে টেলিভিশন কিংবা মোবাইল গেমস খেলে সময় কাটাতে হয় তাকে। আরিয়াও তাই সুস্থ জীবনে ফিরতে মরিয়া। আশার কথা হলো, চিকিৎসকের পরামর্শ মতো কঠোর ব্যায়াম করছে আরিয়া। সেই সঙ্গে খাবারের ক্ষেত্রেও মেনে চলছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এর সুফলও মিলেছে। গত কয়েকদিনে ১১ পাউন্ড ওজন কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে সে। তার সঙ্গে শুরু করেছে হাঁটাচলা। স্কুলেও যেতে শুরু করেছে বিশ্বের সবচেয়ে মোটা বালকটি। জন্মের সময় কিন্তু আরিয়ার কোনো অস্বাভাবিতা ছিল না। সহজ-স্বাভাবিক ওজন নিয়েই জন্মেছিল সে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার শরীর মোটা হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দেখা দেয় রাক্ষসের মতো ক্ষুধা। এক সময় তাই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণের বাইরেই চলে যায়।

তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে তার কৃষক বাবা-মা। অনেক চিকিৎসক দেখেয়িছেন তারা। কিন্ত সব চিকিৎসকই বলেছেন আরিয়ার কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। সে সুস্থ স্বাভাবিক বালক।   আরিয়ার বাবা আদে সামোন্ত্রি বলেছেন, ‘তার এমন রাক্ষুসে ক্ষুধা মেটানোর মতো পর্যাপ্ত টাকা আমার নেই। তাই তার জন্য খাবার কিনতে আমাকে ঋণ করতে হয়।

হাজার হলেও আমি তার বাবা। সন্তানকে আমি অনাহারে রাখতে পারি না। তার চিকিৎসার পিছনেও আমার অনেক অর্থ খরচ হয়েছে। এখন আমার আর্থিক দুরবস্থা চরমে উঠেছে। তাকে যে ভালো কোনো চিকিৎসক দেখাব তেমন সামর্থ্যও নেই।’ আরিয়ার মা রোকেয়া সামোন্ত্রি বলেন, ‘তার এমন অবস্থা দেখা বাবা-মা হিসেবে আমাদের জন্যও সত্যিই কষ্টকর। আশা করছি, একদিন সে অন্য বাচ্চাদের মতো সহজ স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে।’  দীর্ঘ এক বছর পর আবার স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে আরিয়া। তবে স্কুলের বেঞ্চে বসা তার জন্য কষ্টসাধ্য। তাই মেঝেতে বসেই ক্লাস করে সে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে অচিরেই আরিয়াকে বিশেষভাবে একটি বেঞ্চ ও টেবিল বানিয়ে দেওয়া হবে।

স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে মরিয়া আরিয়াও। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো তাই এখন খাবারের বিষয়ে কঠিন নিয়ম মেনে চলছে সে। সেই সঙ্গে করছে শরীর কমানোর ব্যায়ামও। প্রতি এক ঘণ্টা পরপর ৬ মিনিটের জন্য হাঁটে সে।

ওয়েটলিফটিং করে। ওজন কমতে শুরু করেছে। গত এক বছর ওজনের কারণে স্কুলে যেতে পারেনি সে। তবে কিছুদিন হলো সে আবার স্কুলে যেতে শুরু করেছে। তাতে আরিয়া দারুণ আনন্দিত। ইন্দোনেশিয়ান বালকটির আনন্দ ভরা উক্তি, ‘আমি এখন খুব সুখী। সব নিয়ম মেনে চলছি। আমার বিশ্বাস, এই সমস্যা একদিন আমি জয় করবই।’





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদকঃ জাবেদ রহিম বিজন
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close