বুধবার, ১৪ই নভেম্বর, ২০১৮ ইং ৩০শে কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

খাসোগির হত্যাকারীদের জবাবদিহি করবে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক : সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যায় জড়িত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনবে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রোববার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনালাপে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ কথা বলেন। তিনি আহ্বান জানান, সৌদি আরবেরও তা–ই করা উচিত।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, যুবরাজ মোহাম্মদ ও মাইক পম্পেওর ফোনালাপে ইয়েমেন যুদ্ধের বিষয়টিও উঠে আসে। এ দুটো ঘটনাতেই যুবরাজ মোহাম্মদের জড়িত থাকার বিষয় নিয়ে অভিযোগ রয়েছে।

গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে হত্যা করা হয় সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে। শুরুতে সৌদি আরব দাবি করেছিল, খাসোগি তাঁর কাজ শেষে কনস্যুলেট ভবন থেকে বেরিয়ে গেছেন।

তুরস্কের দাবি ছিল, সৌদি আরব থেকে আসা চরেররা কনস্যুলেট ভবনের ভেতরেই তাঁকে হত্যা করে। গত বছর দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে যাওয়া খাসোগি ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতেন। সেসব লেখায় তিনি যুবরাজ মোহাম্মদের কড়া সমালোচনা করতেন। ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য তিনি যুবরাজকে দায়ী করতেন তাঁর লেখায়। বলা হয়, এ হত্যার পেছনে যুবরাজেরই হাত রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সৌদি আরব কনস্যুলেট ভবনের ভেতর খাসোগি নিহত হওয়ার ঘটনা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে। তুরস্কের সঙ্গে দেশটি ঘটনার যৌথ তদন্ত শুরু করেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১৮ জন সৌদি নাগরিককে গ্রেপ্তার ও দুজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে সৌদি আরব। সবশেষ খাসোগি হত্যার সাক্ষ্য–প্রমাণ হিসেবে যেসব অডিও রেকর্ড থাকার কথা দাবি করেছিল তুরস্ক, তা সৌদি আরবকে দিয়েছে দেশটি। তবে এখন পর্যন্ত এটা স্পষ্ট হয়নি, খাসোগিকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাঁর লাশেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এএফপির খবরে বলা হয়, এক বিবৃতিতে মার্কিন মুখপাত্র হিদার নাওয়ের্ট ফোনালাপের কথা উল্লেখ করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী জানিয়েছেন, খাসোগি হত্যায় জড়িত সব ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করবে যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি আরবেরও ওই ব্যক্তিদের বিচার করা উচিত।

এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছিলেন, খাসোগি হত্যার মধ্য দিয়ে ‘আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন’ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে যাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাঁদের ওপর সম্ভাব্য সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও পম্পেও দুজনই তেলসমৃদ্ধ এই দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক, জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছেন।

বিবৃতিতে মুখপাত্র বলেন, ইয়েমেন যুদ্ধে সমাপ্তি টানার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বারবার আহ্বানের বিষয়টি তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এই সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সব পক্ষকে এক টেবিলে বসে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইয়েমেনে প্রেসিডেন্ট আবেদরাব্বো মানসুর হাদির পক্ষে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট সেখানে যুদ্ধ পরিচালনা করছে। এ বিষয়টি যুবরাজ মোহাম্মদের অধীনে। ইতিমধ্যে ইয়েমেন যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার মানুষ মারা গেছে এবং দেশটি ভয়াবহ খাদ্যসংকটের মধ্যে রয়েছে।