বুধবার, ১৪ই নভেম্বর, ২০১৮ ইং ৩০শে কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার আসনে নির্বাচন করতে পারেন ড. কামাল

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনি আসন ফেনী-১ থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন ঐক্যফ্রন্ট প্রধান ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সর্বশেষ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর রায়ের পর খালেদা জিয়ার প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় থাকায় এমন গুঞ্জন উঠেছে।সংবিধান অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কারও দুই বছরের সাজা হলে সাজা ভোগের পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারেন না। তবে বিচারিক আদালতে সাজা হলেও এর বিরুদ্ধে আপিল করে উচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে নির্বাচন করার উদাহরণ আছে।

কিন্তু খালেদা জিয়ার পক্ষে এটি সম্ভব নাও হতে পারে। যে দুটি মামলায় সাজা হয়েছে, সেগুলোতে প্রার্থিতা জমা দেয়ার সুযোগ শেষ হওয়ার আগে আপিল করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।গত ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাত বছরের কারাদণ্ড হয়। কিন্তু ওই মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় এখনো প্রকাশ হয়নি। আর প্রকাশ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ আছে। তবে রায় দ্রুত প্রকাশ হলে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগে হয়তো আপিল করা যাবে।

তবে বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার দণ্ড। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে দেয়া রায় বাতিলে দলীয় প্রধানের আবেদন নাকচ হয়েছে। উল্টো পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বেড়ে হয়েছে ১০ বছর। এ মামলায়ও তাকে আপিল করতে হবে। ওই রায়ের অনুলিপিও এখনো প্রকাশ হয়নি। ফলে এর বিরুদ্ধে আপিল করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন কি না, এই বিষয়টি নিশ্চিত নয়। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র বৈধ কি না, সেটি যাচাই-বাছাই হবে ২২ নভেম্বর। অর্থাৎ এর আগে আপিল এবং দণ্ড স্থগিত না হলে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা হবে কি না, এ নিয়ে আইনি প্রশ্ন আছে।

এই অবস্থায় খালেদা জিয়ার প্রার্থী হওয়া নিয়ে ঘোর সংশয় রয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচনে জয়লাভের জন্য কম ঝুঁকি থাকা আসনটি থেকে ড. কামাল হোসেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে জানিয়েছেন ঐক্যফ্রন্টের একাধিক সূত্র।ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলা ও পৌরসভা নিয়ে গঠিত ফেনী-১ সংসদীয় আসন। এই আসনে ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে পৈত্রিক বাড়ি হওয়ায় ফেনী-১ আসনটি খালেদা জিয়ার আসন হিসেবে খ্যাত। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও সর্বশেষ ২০০৮ সালসহ টানা পাঁচবার আসনটি থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন।

তবে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পরশুরাম পৌর সভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব। তা না হলে বেগম জিয়ার সমর্থন নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট প্রধান ড. কামাল হোসেনসহ যে কেউ ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হলে এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে এই আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন বলে জানান তিনি।

ড. কামাল হোসেনের ফেনী-১ আসনে প্রার্থীতা নিয়ে গণফোরামের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আ.ক.ম সফি উল্যাহ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ইতিপূর্বে নির্বাচিত সংসদীয় আসন ফেনী–১ অথবা বগুড়ার আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য ড. কামাল হোসেনকে বিএনপির একাধিক নেতা প্রস্তাবনা দিয়েছে। তবে কে কোন আসন থেকে নির্বাচন করবে, ঐক্যফ্রন্ট এ বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি।