মঙ্গলবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০১৮ ইং ১৫ই কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

শিল্পকলায় দুই বাংলার গ্রুপ আর্ট এক্সিবিশন

বাংলাদেশ শিল্পকলা একডেমির জাতীয় চিত্রশালার গ্যালারি-২। পুরো গ্যালারি জুড়ে ৭১ জন চিত্র শিল্পীর ১৪২টি চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। এপার বাংলা-ওপার বাংলার শিল্পীদের রঙ তুলি দিয়ে আপন মনে ক্যানভাস রাঙিয়ে তুলেছেন তারা। আছে পেইন্টিং, ওয়াটার কালার দিয়ে রঙ, রূপ, রস ও ছন্দের খেলা। শিল্প সৃষ্টির প্রয়াস এক সুদীর্ঘ সাধনার নান্দনিক রূপায়ণ ফুটে উঠেছে শিল্পীর দীর্ঘ সময়ের ভাবনা, রং রেখার নানাবিধ সরল বিন্যাসে।

শনিবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় (গ্যালারি-২) এ উদ্বোধন হয়েছে ‘বন্ধন, ৫ম আন্তর্জাতিক গ্রুপ আর্ট এক্সিবিশন-২০১৮’। ৭ দিন ব্যাপী এই চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে লিভিং আর্ট এবং সহযোগিতায় রয়েছে ম্যাক্স গ্রুপ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।

গ্যালারির ভেতরে প্রবেশ করতেই অসাধারণ সব শিল্পকর্মগুলো দারুণভাবে আন্দোলিত করছিল আগত দর্শনার্থীদের মনকে। প্রবেশ পথের শুরুতেই দেখা মিলছে নাজনীন চামেলীর শিল্পকর্মগুলো। আরেকটু এগিয়ে যেতেই দেখা গেল ভারতীয় শিল্পী রনজীব রয়ের নান্দনিক ও কাল্পনিক চিত্রশিল্প। এছাড়াও বাংলাদেশ ও ভারতের মিলে মোট ৭১ জন শিল্পীর ১৪২টি চিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে এখানে। শিল্পীদের অনুভবগুলো মনের ভেতর জাগ্রত করে আনন্দ-কষ্টগুলো মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়া স্বতঃস্ফূর্ততার বোধটাকে রঙ তুলির আঁচড়ে ক্যানভাসে তুলে এনেছেন তারা। প্রদর্শনীটি প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া ভারতের চিত্র শিল্পী রনজীব রয়ের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, একই আকাশ, একই বাতাস, একই শ্বাস আমাদের। এবার বাংলা, ওপার বাংলা মিলে এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে আমরা অংশ নিতে পেরে সত্যিই গর্বিত। দুই বাংলার চিত্রশিল্পীর আঁকা চিত্র শিল্পের সব রঙ ফুটে উঠেছে এখানে।

এসময় তিনি তার আঁকা চিত্রকর্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে বলেন, আমি এই চিত্র কর্মের মাধ্যেমে তাপে ক্ষরায় চৌচির এক ফসলি জমির মধ্যে লাঙল সহ শুয়ে পড়েছে বুঝিয়েছি। অর্থাৎ জমিটি চাষ করা যাচ্ছে না। চাষাবাসের অনুপযোগী কঠিন চৌচির হওয়া মাটিতে গরু আর লাঙল টানতে পারছেন। যে কারণে একটি গরু প্রায় শুয়ে পড়েছে জমিতেই।

পুরো আয়োজনের বিষয়ে প্রদর্শনীটির আয়োজক, লিভিং আর্টের পরিচালক বিপ্লব গোস্মামী বলেন, শিল্পের প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে শান্তি ও সংহতি ছড়িয়ে দেয়াই এই চিত্র প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্যে। লিভিং আর্টের উদ্যেগে ইতোমধ্যে ৪টি প্রদর্শনী ভারতে ও বাংলাদেশে সফল আয়োজন করা হয়েছে। পূর্বের প্রদর্শনীগুলো অভাবনীয় সাফল্য ও সাড়া জাগানোয় ৫ম বারের মতো এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

এর আগে প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ফাইন আর্টস বিভাগের পরিচালক আশরাফুল আলম পাপলুর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী অধ্যাপক সমরজিৎ রায় চৌধুরী, চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ, রনজিৎ দাস, ম্যাক্স গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক কাজী ইয়ামিনুর রশিদ তুর্য, স্থপতি মোস্তফা খালিদ পলাশ প্রমুখ।