অনেক অনেক বছর আগের কথা। এক বনের পাশে লোকালয়ে থাকতো এক বোকা কাক। কোনো এক বাড়ি থেকে সে এক টুকরো ……
কাক ও ধূর্ত শেয়াল #ঘটনা-১:
অনেক অনেক বছর আগের কথা। এক বনের পাশে লোকালয়ে থাকতো এক বোকা কাক। কোনো এক বাড়ি থেকে সে এক টুকরো গোশত যোগাড় করে, সেটি দুই ঠোঁটে চেপে ধরে উড়ে এসে বসল একটি গাছের ডালে।সেখান দিয়ে যাচ্ছিল এক ধূর্ত শেয়াল। হঠাৎ করেই তার চোখ গেল উপরে। শেয়াল ভাবলো, কোনোভাবে কাককে পটিয়ে গোশতের টুকরোটা হাতিয়ে নিতে পারলে মজা করে খাওয়া যেতো।যেই ভাবা সেই কাজ! ধূর্ত শেয়াল তার গলাটাকে যতটা সম্ভব মিষ্টি আর মোলায়েম করে কাকের উদ্দেশ্যে বলল- “কাক ভাইয়া, তোমাকে আজ দারুণ সুন্দর লাগছে তো। কী উজ্জ্বল তোমার পালকগুলো। আর কেমন চকচকে। তোমাকে দেখে যে কোনো পাখি হিংসা করবে। নিশ্চয়ই তোমার গলাটাও অনেক সুন্দর আর মিষ্টি। তুমি গান গাইলে চারদিকে মিষ্টি সুর ছড়িয়ে পড়বে। সবাই তোমার গান শুনতে ছুটে আসবে। দয়া করে একটা গান শোনাও না তুমি।”আগের দিনের বোকা কাক শেয়ালের চালাকি ধরতে পারলো না; প্রশংসায় গলে পড়ল। নিজের চেহারার সৌন্দর্যের কথা শুনে একটু অহঙ্কারও হল। মনে মনে ভাবল, নিশ্চয়ই আমার গানের গলা আছে। না হলে শেয়াল বলল কেনো। এতো প্রশংসা করায় শেয়ালের প্রতি একটু মায়াও হল। ভাবল, দিই না ব্যাটাকে একটু গান শুনিয়ে। আমার মিষ্টি গলার গান শুনে মুগ্ধ হয়ে সে নিশ্চয়ই সারা বনে তা প্রচার করে বেড়াবে।গান গাওয়ার জন্যে ঠোঁট দুটো ফাঁক করতেই গোশতের টুকরোটা কাকের মুখ থেকে নিচে পড়ে গেল। আর সেটি মুখে নিয়ে নিজের পথে হাঁটতে শুরু করল ধূর্ত শেয়াল।
ঘটনা-২:
বর্তমান সময়ের কথা। আগের মতই গোশতের টুকরো মুখে নিয়ে এক কাক গাছের ডালে বসেছে। যথারীতি নীচে একটা ধূর্ত শেয়াল এসে আগের মতই চালাকি করে কাকের প্রশংসা করার পর করার তার গান শুনতে চাইলো।আধুনিক যুগের বুদ্ধিমান কাক তার মুখ থেকে গোশতের টুকরাটি ডালের উপর রেখে শেয়ালকে ‘কা কা’ ডাক শুনিয়ে দিলো। ব্যর্থ হয়ে মন খারাপ করে শেয়াল তার নিজের পথে হাঁটতে শুরু করল। শিক্ষনীয় দিক: মন্দ লোকের তোষামোদ বা চাটুকারিতার পেছনে নানা উদ্দেশ্য থাকে। বুদ্ধিমানরা তোষামোদ বা চাটুকারিতায় না গলে মন্দ লোকের উদ্দেশ্য বুঝে তারপর এমনভাবে কাজ করে, যাতে তার নিজের কোন ক্ষতি না হয়। (মূল ঈশপের গল্পের সাথে কিছু অংশ সংযোজিত।)